নমামি: নর্মদা নদীর উপরে সর্দার সরোবর বাঁধের উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গুজরাতের কেবাদিয়ায় রবিবার। ছবি: পিটিআই।
গুজরাত-সহ দেশের বিভিন্ন রাজ্যে সর্দার সরোবর বাঁধ নিয়ে তৈরি হওয়া ক্ষোভকে আড়াল করতে আজ কার্যত এক রাজসূয় আড়ম্বরের আয়োজন করলেন নরেন্দ্র মোদী। সেই সঙ্গে বুঝিয়ে দিলেন, আসন্ন নির্বাচনী প্রচারে নর্মদার সজল স্বপ্নকে যৎপরোনাস্তি বিপণন করতে চলেছে তাঁর দল।
সকালে নর্মদা পূজন থেকে দুপুরে লাখো মানুষকে ‘নর্মদে সর্বদে’ গর্জনে সামিল করা— সবই এগিয়েছে সেই চিত্রনাট্য মেনে। আর একই সময়ে প্রতিবেশী রাজ্য মধ্যপ্রদেশে বড়ওয়ানি জেলায় মেধা পাটকর-সহ নর্মদা বাঁচাও আন্দোলনের কর্মীরা জলে দাঁড়িয়ে জল-সত্যাগ্রহ চালিয়ে গিয়েছেন। দীর্ঘক্ষণ জলে থাকায় তাঁদের ত্বক ফেটে রক্ত পড়ছে।
নর্মদায় সর্দার সরোবর বাঁধ দেশবাসীর উদ্দেশে উৎসর্গ করার পরে মোদী আজ বল্লভভাই পটেলের ‘স্ট্যাচু অব ইউনিটি’-র প্রবল প্রচার করেছেন। বলেছেন গুজরাতে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের বান ডাকার কথা। পরোক্ষে সমালোচনা করেছেন কংগ্রেসেরও। মোদীর কথায়, “দেশের চেয়ে যখন দল প্রাধান্য পেয়েছে, তখনই বন্ধ থেকেছে বাঁধের কাজ। আর যখন দলের চেয়ে দেশকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে, তখনই এগিয়েছে এই প্রকল্প।” নর্মদার ‘স্পর্শে’ গুজরাত তথা ভারতের ভাগ্য বদলে যাবে— এই দাবি করে মোদী বলেন, “কত না রাজনীতি হয়েছে এটিকে নিয়ে। বিশ্বে আর কোনও প্রকল্পকে এত বাধার মুখে পড়তে হয়নি। আমি এই নিয়ে রাজনীতি করতে চাইনি।” এই সূত্রে সমালোচনা করেছেন বিশ্ব ব্যাঙ্কেরও।
মোদীর এই অনুষ্ঠানের জন্য মহাভারতের মতো করে সেট ফেলা হয়েছিল ‘সিএনপিএফ আর্টিস অ্যান্ড সায়েন্স কলেজ’ মাঠে। গোটা মাঠ ঢাকা সওয়া পাঁচ কোটি টাকায় জার্মানি থেকে আনা ফাইবার গ্লাসে। মাঝে নমো-নর্মদা মঞ্চ। দু্’পাশে দু’টি মঞ্চে সন্ত, মহন্ত, গীতিকার, কথাকারেরা। আর মধ্যমণি মোদী ফিরি করেছেন তাঁর দেখা ‘বড় স্বপ্ন’। বলেছেন, বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু মূর্তির কথা ভেবেছিলাম সর্দার পটেলের জন্য। স্ট্যাচু অব লিবার্টিরও দ্বিগুণ। বিশ্বের লাখো লোক আসবে। এলাকায় রুজি-রোজগার বেড়ে যাবে অনেকটাই।”
দক্ষিণ গুজরাতের এই অংশ আদিবাসী অধ্যুষিত। গত রাতেও তাঁরা জমির দাবিতে আন্দোলন করেছেন দাভোইয়ে। সেখানে দাঁড়িয়েই প্রধানমন্ত্রী আজ আদিবাসীদের ক্ষোভ মোছার চেষ্টা করে গিয়েছেন। উদ্বোধন করেছেন আদিবাসী সংগ্রহশালার। বলেছেন গোটা দেশে ইংরেজদের সঙ্গে লড়াই করা আদিবাসী নায়কদের মান্যতা দেওয়ার কথা।