নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ। ফাইল চিত্র।
কাশ্মীরে শান্তির খোঁজে সেই দমননীতির উপরেই ভরসা রাখছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। সেইসঙ্গে বিধানসভার আসন পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে রাজ্যে ক্ষমতার ভরকেন্দ্র বদল করতে চাইছে তারা। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এ দিনই নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, চলতি বছরেই জম্মু-কাশ্মীরে ভোট করার কথা ভাবছে তারা।
প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ তাও কিছুটা নরমপন্থী বলে পরিচিত ছিলেন। কিন্তু অমিত শাহ জঙ্গি দমন প্রশ্নে বরাবরই চরমপন্থী বলে পরিচিত। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দায়িত্ব পেয়েই তাই জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের বলপ্রয়োগের নীতিতে আস্থা রাখার কথা জানিয়েছেন তিনি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, নরেন্দ্র মোদী যখন দ্বিতীয় বার শপথ নিচ্ছেন সে সময়ে উপত্যকায় প্রায় তিনশোর কাছাকাছি জঙ্গি সক্রিয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের একটি সূত্র অনুযায়ী, কাশ্মীরে যে সব জঙ্গি নেতার বিরুদ্ধে কেন্দ্র অভিযানে নামতে চাইছে তাদের তালিকা তৈরি হয়েছে। একেবারে শীর্ষে রয়েছে হিজবুল মুজাহিদিন জঙ্গি সংগঠনের রিয়াজ নাইকু ও আশরাফ মৌলভি, লস্কর-ই-তইবার ওয়াসিম আহমেদরা। জেলাভিত্তিক তালিকায় নাম রয়েছে শ্রীনগরে হিজবুলের হয়ে ক্যাডার সংগ্রহের দায়িত্বে থাকা সইফুল্লা মীর, পুলওয়ামা জেলার হিজবুল নেতা আরশাদ উল হক, হাফিজ ওমর, জইশের জাহিদ শেখ ওমর আফগানি, কুপওয়ারার হিজবুল নেতা ইজাজ আহমেদ মালিকের।
অন্য দিকে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা সংক্রান্ত সংবিধানের ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ বিলোপের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই সরব বিজেপি। প্রস্তুতি শুরু হয়েছে তারও। রাজ্যের ক্ষমতার ভরকেন্দ্র কাশ্মীর থেকে
সরিয়ে জম্মুকেন্দ্রিক করতে উদ্যোগী হয়েছে মোদী সরকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের একটি অংশের দাবি, হিন্দুপ্রধান জম্মুতে দীর্ঘদিন ধরে বিধানসভার আসন পুনর্বিন্যাস করার দাবি
রয়েছে। সেই দাবি খতিয়ে দেখতে একটি কমিটি গঠন করার কথা ভাবছে কেন্দ্র।
বর্তমানে জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভায় ৮৭টি আসন রয়েছে। তার মধ্যে জম্মুতে ৩৭টি, কাশ্মীরে ৪৬টি ও লাদাখে ৪টি আসন রয়েছে। সাধারণত কাশ্মীরে যে দল অধিকাংশ আসন পেয়ে থাকে তারাই ওই রাজ্যে সরকার গড়ে। আসন পুনর্বিন্যাস করে রাজ্য পরিচালনার ক্ষমতা হিন্দুপ্রধান জম্মুর প্রতিনিধির হাতে তুলে দিতে চাইছে বিজেপি।
পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতির কথায়, ‘‘বিধানসভা পুনর্বিন্যাসের নামে ফের এক বার রাজ্যকে ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ করতে চায় কেন্দ্র।’’ কংগ্রেস নেতা রণদীপ সুরজেওয়ালার কথায়, ‘‘প্রথম মোদী সরকারের আমলে নাশকতার সংখ্যা যেমন বেড়েছে তেমনই বেড়েছে সেনা হত্যার ঘটনা। তা মাথায় রেখেই সরকারের এগোনো উচিত।’’