নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
কোনও নির্দিষ্ট প্রস্তাব না দিলেও লোকসভায় অচলাবস্থা কাটাতে বিরোধীদের দাবির সামনে নরম হওয়ার ইঙ্গিত দিল নরেন্দ্র মোদী সরকার।
রাষ্ট্রপতির বক্তৃতা নিয়ে এ দিন রাজ্যসভায় বিতর্ক শেষ হয়ে গেলেও লোকসভায় শুক্রবারও অচলাবস্থা কাটানো যায়নি। কৃষি আইন ও কৃষকদের আন্দোলন নিয়ে আলাদা ভাবে আলোচনার দাবিতে কংগ্রেস ও অধিকাংশ বিরোধী দল অনড়। রাষ্ট্রপতির বক্তৃতার ধন্যবাদজ্ঞাপন প্রস্তাব লোকসভায় আটকে থাকায় বেকায়দায় পড়েছে সরকার। আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সংসদ ভবনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, খাদ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল, সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী, তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকরের সঙ্গে বৈঠক করেন। কী ভাবে লোকসভার অচলাবস্থা কাটানো যায়, তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়।
প্রধানমন্ত্রীর এই বৈঠকের পরেই স্পিকার ওম বিড়লা সব দলের লোকসভার নেতার সঙ্গে বৈঠক করেন। সূত্রের খবর, সেখানে সরকারের তরফে কোনও প্রস্তাব আসেনি। সরকার এখনও আলাদা ভাবে কৃষকদের আন্দোলন নিয়ে আলোচনায় রাজি হয়নি। তবে সুর নরম করার ইঙ্গিত দিয়েছে। ঠিক হয়েছে, সোমবার ফের সব দলের নেতার সঙ্গে স্পিকার বৈঠক করবেন। সরকারি শিবির আশা করছে, সোমবারই সমাধানসূত্র মিলবে। সে দিন থেকেই রাষ্ট্রপতির বক্তৃতা নিয়ে বিতর্ক শুরু করা যাবে।
কৃষি আইন, কৃষক আন্দোলন নিয়ে সংসদে আলোচনার দাবিতে প্রথম থেকেই সরকারের অবস্থান ছিল, রাষ্ট্রপতির বক্তৃতা নিয়ে বিতর্কের সময়ই বিরোধীরা কৃষক আন্দোলন নিয়ে যা বলার, বলতে পারেন। রাজ্যসভায় সেই প্রস্তাব মেনে নিলেও লোকসভায় রাহুল গাঁধীর নির্দেশে কংগ্রেস আলাদা ভাবে আলোচনার দাবিতে অনড়। বিরোধীদের পোস্টার হাতে স্লোগান, হট্টগোলের মধ্যে শুক্রবারও অধিবেশন চালানো যায়নি। কংগ্রেসের যুক্তি, বাজেট নিয়ে কথার আগেই কৃষক আন্দোলন নিয়ে আলোচনা করতে হবে। সরকার তাতে রাজি হলে রাষ্ট্রপতির বক্তৃতা নিয়ে বিতর্ক হবে। শনিবার কৃষক সংগঠনগুলির ডাকা ‘চাক্কা জ্যাম’ কর্মসূচিকে সমর্থন করে কংগ্রেস সরকারের উপরে চাপ আরও বাড়িয়েছে।
এই অবস্থায় বিরোধীদের পরিকল্পনা ভেস্তে দিতে এ দিন বিজেপির মীনাক্ষি লেখির মতো সাংসদরা স্পিকারের কাছে কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে রিহানা, গ্রেটা থুনবার্গদের টুইট নিয়ে আলোচনার দাবি জানিয়েছেন। তাঁদের যুক্তি, এর পিছনে ভারতকে কালিমালিপ্ত করার আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র রয়েছে। পাল্টা কটাক্ষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করে কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী টুইটে প্রশ্ন তুলেছেন, ‘আমাদের কিছু দেশপ্রেমিক আমেরিকায় গিয়ে বলেছিলেন ‘অব কি বার, ট্রাম্প সরকার’। এর মানে কী? জর্জ ফ্লয়েডের হত্যাকাণ্ডে যখন প্রতিবাদ করেছিলাম, তখন তো প্রশ্ন ওঠেনি। এখন রিহানা, থুনবার্গরা আমাদের দেশের কৃষকদের পাশে দাঁড়ালে এত বিরক্তি কেন?’