নরেন্দ্র মোদী।— ফাইল চিত্র।
ডেরা ভক্তদের তাণ্ডবের ঘটনায় শনিবারই সরকারি ভূমিকা নিয়ে তীব্র অসন্তোষ জানিয়েছে পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট। রাজ্যের পাশাপাশি উঠে এসেছে কেন্দ্রের দায়িত্বের প্রসঙ্গও। আদালতের সমালোচনার মধ্যে এসেছে প্রধানমন্ত্রীর কথাও। মোদীকে কার্যত তাঁর কর্তব্য স্মরণ করিয়ে দিয়ে হাইকোর্ট বলে, ‘‘উনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী। বিজেপির নন।’’ এর পর দিনই, রবিবার নিজের ‘মন কি বাত’-এ ওই ডেরা হাঙ্গামা নিয়ে মুখ খুললেন মোদী। বললেন, বিশ্বাসের নামে হিংসা ছড়ানোকে কোনও মতেই বরদাস্ত করা হবে না। তীব্র নিন্দা করলেন দুই রাজ্যে হিংসার ঘটনার।
আরও পড়ুন: বিলাসবহুল ‘গুফা’য় বাবার যত্নআত্তিতে ২০০ শিষ্যা!
আরও পড়ুন: ‘বাবা’র পালিত কন্যা হানিপ্রীত কি ডেরা-র নতুন দাবিদার? জল্পনা তুঙ্গে
রবিবার রেডিও অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর স্পষ্ট বার্তা, কোনও একজনের প্রতি মানুষের বিশ্বাস থাকতেই পারে। কিন্তু, সেই বিশ্বাসের কারণে হিংসাকে কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। দেশের প্রতিটি মানুষকে আইন মেনে চলতে হবে। রাম রহিম সিংহের ভক্তদের তাণ্ডবের প্রেক্ষিতে এক দিকে যেমন দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর এই প্রতিক্রিয়া, তেমনই তাঁর নিজের দলের কাছেও বোধহয় পৌঁছে দিতে চাইলেন রাজনৈতিক বার্তা।
কার্টুন— অর্ঘ্য মান্না
আরও পড়ুন: ভূমিশয্যায় রাম রহিম, আপাতত ক্ষান্ত ভক্তরা
গত শুক্রবার সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত রাম রহিমকে ধর্ষণের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত করে। তার পরই তাণ্ডব শুরু করেছিল তাঁর সমর্থকরা। হরিয়ানা, পঞ্জাব, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে, রাজধানী দিল্লিতেও হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩৬ জন। আহতের সংখ্যা কয়েক শো। ঘটনার পরই রাম রহিমের সিংহের সঙ্গে বিজেপির সখ্যতার প্রসঙ্গ তুলে সরব হয় বিরোধীরা। তাদের নিশানায় ছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী মোদীও। এর মধ্যে কোনও কোনও বিজেপি নেতা রাম রহিমের দোষী সাব্যস্ত হওয়া নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন। কেন্দ্র তথা প্রধানমন্ত্রীর অস্বস্তি আরও বাড়ায় শনিবার পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টের মন্তব্য। হাঙ্গামার ঘটনায় কেন্দ্র তথা প্রধানমন্ত্রীকেও দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেয় হাইকোর্ট। হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টরেরও প্রশাসনের তীব্র সমালোচনা করে হাইকোর্টের কার্যনির্বাহী প্রধান বিচারপতি এস সিংহ শ্যারনের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ। রাজনৈতিক ফায়দার কথা ভেবেই উত্তেজনা বাড়তে দেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করে আদালত। স্বাভাবিক ভাবেই অস্বস্তি বাড়ছিল কেন্দ্রের। এ অবস্থায় নীরবতা ভঙ্গ করে বিরূপ হাওয়া ঠেকানোর, বা ড্যামেজ কন্ট্রোলের, কাজটা শুরু করলেন মোদী।