Pegasus

Pegasus Spyware: হ্যাকিং-প্রশ্ন এড়িয়ে মোদীর মুখে ‘জনাদেশ’

বিজেপি নেতারা মনে করছেন, দল নিজের শক্তিতে ও মানুষের রায়েই ভোটে জিতে এসেছে বলে সাংসদদের উজ্জীবিত করতে চেয়েছেন মোদী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০২১ ০৭:০০
Share:

প্রতিবাদ: পেগাসাস কাণ্ডের বিরুদ্ধে সংসদ ভবনের অদূরে বিক্ষোভ যুব কংগ্রেস-কর্মীদের। মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে। ছবি পিটিআই।

পেগাসাস স্পাইওয়্যারের জাল বিছিয়ে রাহুল গাঁধীর ফোন হ্যাকের চেষ্টার অভিযোগের জবাব সরাসরি দিলেন না নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু নিজের দলের সাংসদদের প্রধানমন্ত্রী মনে করিয়ে দিলেন, ভোট-বাক্সে মানুষের রায় বা বিপুল ‘জনাদেশের জোরেই’ ২০১৯ সালে দ্বিতীয় বার কেন্দ্রে ক্ষমতায় এসেছে বিজেপি।

Advertisement

গত লোকসভা ভোটের আগে মোদী সরকার তৎকালীন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীর ফোন হ্যাকিংয়ের চেষ্টা করেছিল বলে অভিযোগ ওঠার পরে মঙ্গলবার ক‌ংগ্রেসকে কটাক্ষে বিঁধলেন মোদী। বিজেপির সংসদীয় দলের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে সব দল সহজেই ক্ষমতায় আসতে অভ্যস্ত, তারা বুঝতেই পারবে না যে, বিজেপিকে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে কতখানি পরিশ্রম করতে হয়েছে।

শুধু লোকসভা ভোটের আগে রাহুলের ফোন নয়, পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের সময়ে তৃণমূলের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের ফোনও হ্যাকিংয়ের জন্য নিশানা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। ফলে ভোটে জেতার জন্য বিরোধীদের রণকৌশল জেনে নিতে মোদী সরকার তথা বিজেপি বিদেশ থেকে স্পাইওয়্যার কিনে হ্যাকিং করছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সে ক্ষেত্রে বিজেপির জয় পুরোপুরি গণতান্ত্রিক পদ্ধতি মেনে হয়েছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। বিজেপি নেতারা মনে করছেন, দল নিজের শক্তিতে ও মানুষের রায়েই ভোটে জিতে এসেছে বলে সাংসদদের উজ্জীবিত করতে চেয়েছেন মোদী।

Advertisement

শুধু বিরোধী শিবির নয়। দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী (অশ্বিনী বৈষ্ণব ও প্রহ্লাদ সিংহ পটেল) ও তাঁদের ঘনিষ্ঠদের ফোন হ্যাকিংয়ের নিশানায় ছিল বলে অভিযোগ। বসুন্ধরা রাজে, স্মৃতি ইরানিদের ঘনিষ্ঠ বৃত্তে থাকা ব্যক্তিদের ফোনও ছিল নিশানায়। এই খবরে বিজেপির মধ্যেও সন্দেহের আবহ তৈরি হয়েছে। যাঁর ফোন হ্যাকিংয়ের নিশানায় ছিল, সেই মন্ত্রী প্রহ্লাদ সিংহ পটেলের বক্তব্য, ‘‘কখনও মনে হয়নি, সরকার আমার ফোনে নজরদারি করছে। আমি অত বড় মাপের কেউ নই। মনে হয় না, আমার সরকার এ ধরনের কাজ করবে।” কিন্তু বিজেপির রাজ্যসভা সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর টুইট, ‘‘অনিবার্য ভাবেই প্রশ্ন উঠছে, পেগাসাস স্পাইওয়্যার কেনার টাকা কে দিয়েছিল? যদি ভারত সরকার না হয়, তা হলে কে? দেশের মানুষকে এ কথা জানানো মোদী সরকারের দায়িত্ব।’’

এক দিকে দলের মধ্যে সন্দেহের আবহ। অন্য দিকে সংসদে বিরোধীদের প্রশ্ন। এই দ্বিমুখী চাপে কোণঠাসা অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী আজ কংগ্রেসকে পাল্টা আক্রমণ করেছেন। সংসদীয় দলের বৈঠকে তিনি বলেন, যে দল মাত্র দু’তিনটি রাজ্যে ক্ষমতায় রয়েছে, তারা বিজেপির জয় হজম করতে পারছে না। অসম, পশ্চিমবঙ্গ, কেরলে ভরাডুবির পরে কংগ্রেস এখনও কোমা থেকে বার হতে পারেনি। তাঁর দাবি, কংগ্রেস নিজের ভোটব্যাঙ্ক নিয়ে চিন্তিত নয়। ষাট বছর সরকারে থাকার ফলে কংগ্রেসের মধ্যে এখনও ক্ষমতার প্রতি অধিকারবোধ রয়ে গিয়েছে।

পেগাসাস-কাণ্ড সামনে আসার আগে বিরোধীরা কোভিড মোকাবিলা নিয়ে কেন্দ্রকে বিঁধতে তৈরি ছিল। সে কথা মাথায় রেখে কেন্দ্রের কোভিড মোকাবিলায় ব্যর্থতা নিয়ে কংগ্রেসের ‘মিথ্যে অভিযোগ’-এর জবাবে বিজেপি সাংসদদের সরকারের কাজ নিয়ে প্রচারে নামার নির্দেশ দেন মোদী। ২৪ ও ২৫ জুলাই বিজেপি সাংসদদের রেশন দোকানে গিয়ে গরিবদের জন্য বিনামূল্যে রেশন বিলির প্রচার করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রবিবার, ২৫ জুলাই টিকাকরণ কেন্দ্রে গিয়ে ‘মন কি বাত’ শুনতে বলা হয়েছে। মোদীর বক্তব্য, সত্যিটা বারবার মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। বিরোধীদের কটাক্ষ, পেগাসাস-কাণ্ড, টিকার জোগান থেকে শুরু করে জ্বালানির চড়া দাম— সমস্ত বিষয়ে তাঁরাও সেই ‘সত্যি কথাটিই’ সরকারের কাছ থেকে জানতে চান।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement