চন্দ্রযান ২। (ইনসেটে) নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।
‘নমো অ্যাপ’ ডাউনলোড করলে মিলবে নরেন্দ্র মোদীর সই করা বই— এটি ছিল গত বছরের প্রতিশ্রুতি। এ বছরে প্রধানমন্ত্রীর নতুন ভাবনা, কুইজ প্রতিযোগিতায় সফল হলে মিলবে শ্রীহরিকোটা থেকে চাঁদে চন্দ্রযান নামার ঘটনা চাক্ষুষ করার সুযোগ।
দ্বিতীয় বার সরকারে আসার পরে আজ ছিল রেডিয়োয় প্রধানমন্ত্রীর দ্বিতীয় ‘মন কি বাত’। সেখানে পড়ুয়াদের মন জিততে ঘোষণা করলেন একটি কুইজ প্রতিযোগিতার কথা। এক বার নয়, বারবার। এমনকি বক্তৃতা শেষ করার আগেও। কয়েক সপ্তাহ ধরেই বিজেপির অন্দরে আলোচনা চলছে, ‘নাবালকদের’ কী ভাবে কাছে টানা যায়। আজ মোদীর ঘোষণায় তারই প্রতিফলন দেখছে গেরুয়া শিবির।
এ দিন রেডিয়ো-বার্তায় মহাকাশে সাফল্যের কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী টেনে আনেন চন্দ্রযান-২-এর কথা। তোলেন উপগ্রহ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ‘এ-স্যাট’-এর কথাও। লোকসভা ভোটের মাঝপথেই জাতির উদ্দেশে বক্তৃতায় সে কথা বলেছিলেন। আজ বলেন, ‘‘নির্বাচনের সময় এ-স্যাটের সাফল্য নিয়ে বেশি আলোচনা হয়নি।’’ তখনই চন্দ্রযান-২-এর কথা টেনে জানান, বিজ্ঞান, মহাকাশ নিয়ে একটি কুইজ প্রতিযোগিতা হবে। তাতে রাজ্যগুলি থেকে সব থেকে বেশি নম্বর পাওয়া পড়ুয়াদের সরকারি খরচে শ্রীহরিকোটা নিয়ে যাওয়া হবে সেপ্টেম্বরে। চাঁদের মাটিতে চন্দ্রযান নামার ঘটনা দেখার সুযোগ দিতে।
পড়ুয়াদের এই প্রতিযোগিতায় যোগ দিতে বলার পাশাপাশি বলেন, ‘‘স্কুল, অভিভাবক, উৎসাহী শিক্ষকদের বিশেষ করে অনুরোধ করছি, নিজেদের স্কুলকে জয়ী করতে পরিশ্রম করুন। ছাত্রছাত্রীদের উৎসাহিত করুন।’’ ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে মোদী বলেন, ‘‘আমার প্রস্তাব নিশ্চয়ই ভাল লেগেছে। মজাদার সুযোগ, তাই না? কুইজে যোগ দেওয়ার কথা যেন না ভুলি।’’
কুইজে প্রশ্ন কী আসবে, তারও ধারণা দেন মোদী। মহাকাশ, ভারতের মহাকাশ অভিযান, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি, রকেট উৎক্ষেপণ করতে কী করতে হয়, মহাকাশে স্যাটেলাইট কী করে স্থাপন করা হয়, এ-স্যাট কী— এ সব নিয়ে ‘মাই গভ’ ওয়েবসাইটে ১ অগস্ট সবিস্তার জানানো হবে। রেডিয়ো বার্তার শেষে ফের বলেন, ‘‘শ্রীহরিকোটা যাওয়ার সুযোগ কোনও ভাবেই যেন হাতছাড়া না হয়।’’
আরও পড়ুন: মোদীর চমক, স্বচ্ছ ভারত আর আয়ুষ্মান ভারতের পরে এ বার ‘বুদ্ধিমান ভারত’
বিজেপির অন্দরের খবর, দলের অন্দরে অনেক দিন ধরেই ভাবনাচিন্তা চলছে, ১৮ বছরের কমবয়সিদের নানা প্রকল্প, খেলাধুলা, সংস্কৃতির মাধ্যমে কী ভাবে কাছে টানা যায়, তা নিয়ে। যাতে তাঁরা সাবালক হলে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার কথা ভাবেন। বিজেপির এক নেতা বলেন, ‘‘আজকের পরে আশা করছি, ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক, শিক্ষকদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আগ্রহ তৈরি হবে।’’ মোদীর বক্তৃতার পরেই বিজেপির কার্যনির্বাহী সভাপতি জগৎ প্রকাশ নড্ডাও ‘মন কি বাত’-এর আবেদন নিয়ে প্রচার শুরু করে দেন।
‘এগজ়াম ওয়ারিয়র’ বই লিখে প্রধানমন্ত্রী কয়েক বছর ধরে পড়ুয়াদের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক গড়ার চেষ্টা করছেন। গত বছর রাহুল গাঁধীরা যখন ‘নমো অ্যাপ’ বন্ধের দাবি তুলছিলেন, তখন প্রধানমন্ত্রী এই অ্যাপ ডাউনলোড করলে নিজের সই করা বই দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। আজ সেই অ্যাপকেই আরও জনপ্রিয় করতে একটি ‘বুক কর্নার’ তৈরির প্রস্তাব দেন।