—ফাইল চিত্র
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের উপরে রাজ্যবাসীর ক্ষোভ বাড়ছিল বিগত এক বছরে। রাজনৈতিক সূত্রের মতে, কোভিডের দ্বিতীয় ধাক্কায় তা আরও পুঞ্জীভূত হয়েছে। রাজনীতিকদের মতে, এর পাশাপাশি ‘মোদী হ্যায় তো মুমকিন হ্যায়’ স্লোগানেও আর আস্থা রাখতে পারছেন না উত্তরপ্রদেশের মানুষ। সদ্যসমাপ্ত পঞ্চায়েত ভোটের ফলাফলে তা স্পষ্ট। এই অবস্থায়, রাজ্যে বাইশের বিধানসভা ভোটের আগে কী ভাবে প্রধানমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রীর ভাবমূর্তি আগের জায়গায় ফিরিয়ে নেওয়া যায়, তা এখন বিজেপি নেতৃত্ব এবং সরকারের অগ্রাধিকার বলেই মনে করা হচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গে পরাজয়ের পরে লোকসভা ভোটের আগে উত্তরপ্রদেশের ভোট অসীম গুরুত্বপূর্ণ বিজেপি এবং বিরোধী দলগুলির কাছে। আজ সেই পরিস্থিতি সমীক্ষা করতে জরুরি বৈঠকে বসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপি ও আরএসএসের কিছু নেতা। আর দেরি না করে বিধানসভা ভোটের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়া, সর্বোপরি মোদীর ভাবমুর্তি উদ্ধারের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে রাজনৈতিক সূত্রের খবর। পাশাপাশি করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের যে পূর্বাভাস শোনা যাচ্ছে বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে তাতে চিন্তিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে বিজেপি সরকারের। কারণ সেই তৃতীয় ঢেউয়ের সরাসরি প্রভাব ভোটের ময়দানে পড়তে পারে।
সব মিলিয়ে তাই দলকে কোমর বাঁধার নির্দেশ দিয়েছেন মোদী। কিছু দিন আগেই একটি সম্মেলনে কোভিড মোকাবিলা প্রসঙ্গে সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবত পরোক্ষে মৃদু সমালোচনা করেছিলেন মোদী সরকারের। জানিয়েছিলেন, আগে থেকে অনেকে সতর্ক করা সত্ত্বেও, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সেটা আদতে আরএসএসের রাজনৈতিক কৌশলের অঙ্গ বলেই এখন মনে করছে সংশ্লিষ্ট শিবির। কারণ, এর ফলে মানুষের কাছে বার্তা দেওয়া যাবে যে দল ও সঙ্ঘের মধ্যেই সমালোচনার পরিসর রয়েছে, এবং তা থেকে শুধরে নেওয়ার অবকাশ রয়েছে। তা করাও হচ্ছে।
সূত্রের খবর, এ দিনের উত্তরপ্রদেশ সংক্রান্ত বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডা, উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সভাপতি সুনীল বনশল। আরএসএসের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন দত্তাত্রেয় হোসাবলে। রাজনৈতিক সূত্রের মতে, শুধুমাত্র বিরোধীরাই নন, বিজেপি-র অভ্যন্তরেও গভীর অসন্তোষ দানা বেঁধেছে যোগীর দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা নিয়ে। রাজনাথ সিংহ, নিতিন গডকড়ীর মতো নেতারা চুপ। কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রী সন্তোষ গঙ্গোয়ার অভিযোগ করেছেন তাঁর বরেলী নির্বাচন কেন্দ্রে রাজ্য সরকার তথা যোগীর কোভিড মোকাবিলা নিয়ে। এ দিনের বৈঠকে এই বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।