হাতে-হাত: সংসদ ভবনে জঙ্গি হানায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত বর্তমান ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। মনমোহনকে দেখে হাত বাড়িয়ে দিলেন মোদী। তাঁর বাড়ানো হাত ধরলেন মনমোহনও। বুধবার। ছবি: এপি।
গুজরাত ভোটে ‘পাক-ছক’-এর কথা টেনে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে ‘শত্রুপক্ষে’ দাঁড় করিয়ে দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। আজ সংসদে সেই মনমোহন হঠাৎ মুখোমুখি হতেই হাত বাড়িয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী। মনমোহনও ধরে ফেললেন মোদীর হাত।
কিন্তু তাতেও বরফ গলল না। বেলা গড়াতে এক ভিডিও বার্তায় মোদীর ক্ষমাপ্রার্থনার জন্য ফের দাবি তুললেন মনমোহন। কিছু দিন আগে বিবৃতি দিয়ে যা বলেছিলেন, আজ সেটিই ভিডিও-বন্দি করেছেন তিনি। আর গুজরাত ভোটের এক রাত আগে কংগ্রেস মনমোহনকে আসরে নামাতেই ঝাঁপিয়ে পড়লেন মোদী-অমিত শাহরা।
বিজ্ঞান ভবনের এক অনুষ্ঠানে মোদী মনমোহনকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘আগের সরকারে যে ‘অর্থনীতিবিদ’রা ছিলেন, এখনকার সরকার তাঁদের বোঝাই বয়ে চলেছে। দুর্নীতিতে মানুষ ক্লান্ত।’’ আর অমিত শাহ এই অছিলায় ফের টেনে আনেন সনিয়া গাঁধীর ‘মওত দা সওদাগর’ মন্তব্যের কথা। বলেন, ‘‘সনিয়া যখন মোদীকে ‘মওত কা সওদাগর’ বললেন, তখন মনমোহন সিংহের পরামর্শ কোথায় ছিল? রাহুল যখন মনমোহনের অধ্যাদেশ প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলেছিলেন, তখন তাঁর এই রোষ কোথায় ছিল? তখন মনমোহনের চোখে কোনও ভুল ধরা পড়েনি?’’
রাত হতেই মোদী সরকারের মন্ত্রী পীযূষ গয়াল সামনে নিয়ে এলেন মনমোহন জমানারই এক দুর্নীতির কাহিনি। তাঁর অভিযোগ, মনমোহন প্রধানমন্ত্রী থাকলেও রাহুলই সরাসরি নির্দেশ দিতেন মন্ত্রীদের। গুজরাতে এক সংস্থাকে ছাড়পত্র না দেওয়ার জন্য রাহুল তৎকালীন পরিবেশমন্ত্রী জয়ন্তী নটরাজনকে মেল করে নির্দেশ দিয়েছিলেন। আজ সেই মেলও প্রকাশ করে বিজেপি। গুজরাতের ভোটের প্রচার শেষ হয়েছে গত কালই। রাত পোহালে শেষ দফার ভোট। কিন্তু দিল্লিতে বসেই কংগ্রেস ও বিজেপি গুজরাত ভোটকে পাখির চোখ করেই আজ প্রচার চালিয়ে গিয়েছে। রাহুল এ দিন গুজরাতি চ্যানেলগুলিতেও প্রায় আধা ডজন সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। তাতেই ভোট বিধি ভাঙার অভিযোগ এনে বিজেপি নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছে। তার ভিত্তিতে এফআইআরও করেছে কমিশন।
যোগেন্দ্র যাদবের মতো নেতা আজ সমীক্ষা সামনে এনে দেখান, গুজরাতে কোনও অবস্থাতেই বিজেপি জিতছে না। খোদ রাহুলও তাই মনে করেন। মনমোহনও
সেই সুরেই বলেন, ‘‘হারের আতঙ্কে মরিয়া প্রধানমন্ত্রী খড়কুটো আঁকড়ে ধরতে চাইছেন।’’