সনিয়া গাঁধী।
অবসর নেওয়াই এখন তাঁর কাজ। শুক্রবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এমন কথাই জানালেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী।
রাহুলকে সভাপতির দায়িত্ব সঁপে দেওয়ার পরই প্রশ্নটা ঘুরপাক খাচ্ছিল রাজনৈতিক মহলে, এ বার কী করবেন সনিয়া? সে প্রশ্নের জবাব তিনি এ দিন দিলেন ঠিকই, কিন্তু কবে তিনি অবসর নেবেন, কী থেকে অবসর নেবেন তা কিন্তু স্পষ্ট করেননি।
প্রশ্ন উঠছে, তা হলে কি সংসদীয় ভূমিকা থেকেও নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন সনিয়া? যদিও কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বিষয়টি ব্যাখ্যা করে টুইট করেছেন, সনিয়া সভাপতি পদ ছাড়লেও রাজনীতি থেকে অবসর নিচ্ছেন না।
আরও পড়ুন: আধার লিঙ্কের সময়সীমা ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাড়িয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট
তবে সম্প্রতি অসুস্থতার কারণে দলীয় সমাবেশ এবং দলের নানা কর্মসূচিতে তাঁকে কমই দেখা গিয়েছে। এ বছরের শুরুতে উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাব, উত্তরাখণ্ড, গোয়া, মণিপুরের নির্বাচনী প্রচারে তাঁকে নিয়মিত দেখা গিয়েছিল। কিন্তু গুজরাত ও হিমাচল প্রদেশের নির্বাচনে তিনি কোনও সমাবেশ বা নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেননি। পরিবর্তে এই দুই রাজ্যে নির্বাচনে যথেষ্ট সক্রিয় ছিলেন রাহুল। কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন রাহুল। শনিবারই আনুষ্ঠানিক ভাবে সেই দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন তিনি।
আরও পড়ুন: বুথ ফেরত সব সমীক্ষায় গেরুয়া রাজ
সনিয়ার রাজনৈতিক জীবন শুরু ১৯৯৮-এ। রাজনীতির সান্নিধ্যে না থাকা একটি পরিবার থেকে উঠে আসা সনিয়ার রাজনীতিতে প্রবেশ এক প্রকার বাধ্য হয়েই। রাজীব গাঁধীকে বিয়ে করে ইতালি থেকে এ দেশে এসেছিলেন। প্রবেশ করেছিলেন আদ্যন্ত রাজনৈতিক একটি পরিবারে। শাশুড়ি ইন্দিরা গাঁধীকে দেখেছেন রাজনীতির ময়দানে দাপিয়ে বেড়াতে। ১৯৮৪-তে ইন্দিরা গাঁধীর মৃত্যুর পর দলের ধ্বজা ধরার দায়িত্ব এসে পড়ে রাজীবের উপর। রাজনৈতিক পরিবেশে এসে পড়লেও রাজনীতি নিয়ে কার্যত খুব একটা আগ্রহ ছিল না সনিয়ার। কিন্তু ঘটনাচক্রে একটা সময় সেই দায়িত্ব বর্তায় তাঁর উপর। আর সেটা রাজীব গাঁধীর মৃত্যুর সাত বছর পরে। কেননা সে সময়ে রাহুল, প্রিয়ঙ্কা দু’জনেই ছোট ছিলেন। ফলে কার্যত বাধ্য হয়েই দলের দায়িত্বভার কাঁধে তুলে নেন সনিয়া। সালটা ছিল ১৯৯৮। কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি পদে নির্বাচিত হন তিনি। সেই পথচলা শুরু। দীর্ঘ ২০ বছর ধরে তিনি সেই পদে থেকেই দলকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন। তাঁর নেতৃত্বে কংগ্রেস পর পর দু’বার কেন্দ্রে সরকার গঠন করে। তিনিই প্রথম সভাপতি যিনি এত বছর এই পদে ছিলেন।