ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ ও ধারাভাষ্য়কার হর্ষ ভোগলে। ছবি: টুইটার থেকে
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জি নিয়ে সারা দেশে প্রতিবাদ-বিক্ষোভের আবহেই ফেসবুকে নাতিদীর্ঘ এক পোস্ট করেছিলেন হর্ষ ভোগলে। এক দিকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে এবং যুব সমাজের আন্দোলনের পক্ষে ব্যাট ধরেছিলেন ক্রিকেট ধারাভাষ্যকার ও বিশেষজ্ঞ ভোগলে। তাঁর সেই মন্তব্যের সুযোগ নিয়ে দেশের শাসক দলকে ‘নাৎসি’র সঙ্গে তুলনা করেছিলেন এক জন। কিন্তু তার জবাবে ভোগলে যা বলেছেন, তা মন জয় করে নিয়েছে সবার। তাঁর কথায়, ‘আমার ভারতবর্ষ ভেঙে যায়নি।’
হর্ষ ভোগলের ওই পোস্টের পরেই ফেসবুকে হর্ষ ভোগলের প্রশংসাসূচক কমেন্ট, রিটুইট উপচে পড়ে। বিশেষ করে নেটিজেনদের মধ্যে খুবই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। সেই পোস্টের প্রসঙ্গ টেনেই টুইটারে ডেনিস অ্যান্ডারসন নামে অস্ট্রেলিয়ার এক ক্রিকেট সাংবাদিক হর্ষ ভোগলের নাম উল্লেখ করে একটি পোস্ট করেন। তিনি লেখেন, ‘‘হর্ষকে আমি শুধু বাহবা দিতে পারি। তাঁর ভারত ভেঙে গিয়েছে। বিশ্বের আর কোনও দেশের শাসক দল বা তার নেতাকে এমন ধারাবাহিক ভাবে নাৎসিদের সঙ্গে তুলনা করা হয়নি। আমাদের সবারই হর্ষ (ভোগলে) হয়ে ওঠা উচিত।’’
নজর এড়ায়নি ক্রিকেট ধারাভাষ্যকারের। ডেনিসের ওই টুইট ট্যাগ করে ভোগলে জবাবে লেখেন, ‘‘না ডেনিস, আমার ভারতবর্ষ ভেঙে যায়নি। আমার দেশ উদ্দীপ্ত তরুণ তরুণীতে পরিপূর্ণ, যাঁরা অনেক ভাল কাজ করছেন। আমরা একটা পুরোপুরি সক্রিয় ও পরিণত গণতন্ত্র। কখনও কখনও আমরা আমাদের ক্ষোভ, হতাশা প্রকাশ করতে পারি। কিন্তু আমরা ভয়ঙ্কর ভাবে ভারতীয়। যে শব্দটির সঙ্গে আপনি তুলনা করেছেন, সেটা কখনওই নয়।’’
ফেসবুক পোস্টের পর ভোগলের এই জবাবি টুইটারও মুগ্ধ করেছে নেটিজেনদের। প্রচুর ইউজার ভোগলের পক্ষে মত প্রকাশ করে টুইট করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, দেশের অভ্যন্তরীণ কোনও বিষয়ে দেশের নাগরিকদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ থাকতেই পারে। কিন্তু অন্য কেউ তার সুযোগ নিয়ে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করছেন, এটা কোনও ভারতবাসী কেউই মেনে নেবেন না। একটি অংশ আবার হর্ষের বিপক্ষেও মত প্রকাশ করেছেন।
ফেসবুকে ভোগলে যা লিখেছিলেন তাঁর সারকথা ছিল, ‘‘বিভেদগুলোকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে আমরা সঙ্কীর্ণ করে তুলছি আমাদের দেশকেই। নতুন ভারত বলছে, তারা এতে খুশি নয়।’’ তিনি মনে করছেন, সরকারই উদার হয়ে বর্তমান প্রজন্মকে সব বাধা থেকে মুক্ত করবে, যাতে তাঁরা দেশকে অভাবনীয় উচ্চতায় নিয়ে যান। প্রশ্ন হল, তা হলে এত ভয় তৈরি করা হচ্ছে কেন? কেন বাধা তৈরি করা হচ্ছে সমাজের পথে? কেন উড়তে বাধা পাচ্ছে নতুন প্রজন্ম?