National News

খোলামেলা পোশাকে নাচতে বাধ্য করা হত, তারপর ধর্ষণ! বিহার হোম কাণ্ডে চার্জশিট সিবিআই-এর

চার্জশিটে সিবিআই আরও জানিয়েছে, কেউ রাজি না হলে বা প্রতিবাদ করলেই পেটানো হত। ‘‘প্রতিবাদীদের রাতে খাবার দেওয়া হত শুধু রুটি আর নুন। আর যারা রাজি হত, তাদের মিলত ভাল খাবার-দাবার।’’

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

পটনা শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৯ ১২:১৮
Share:

মুজাফ্ফরপুর হোমে যৌন নির্যাতন কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত ব্রজেশ ঠাকুর। —ফাইল চিত্র

হোমে ‘অতিথি’ এলেই বসত ‘মজলিশ’। আবাসিক কিশোরীদের পরতে হত খোলামেলা পোশাক। তার পর উত্তেজক গানের সঙ্গে নাচ, এবং সব শেষে ধর্ষণ! কেউ রাজি না হলেই জুটত মার। বিহারের মুজফ্ফরপুররের হোমে নিয়মিত চলত এমনই যৌন অত্যাচার! সিবিআই-এর চার্জশিটে উঠে এসেছে এমনই বিস্ফোরক তথ্য।

Advertisement

বিহারের মুজফ্‌ফরপুর সরকারি হোমে যৌন কেলেঙ্কারি কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত ব্রজেশ ঠাকুরের বিরুদ্ধে সম্প্রতি চার্জশিট পেশ করেছে সিবিআই। পকসো আদালতের অতিরিক্ত জেলা বিচারক আর পি তিওয়ারির এজলাসে পেশ করা ৭৩ পাতার ওই চার্জশিটের প্রায় ছত্রে ছত্রে রয়েছে হোমের কিশোরীদের উপর যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণের বিবরণ। চার্জশিটে সিবিআই জানিয়েছে, ‘অতিথি’ এলেই কার্যত ‘জলসা’ বসত হোমে। হোমের কিশোরীদের সেজেগুজে খোলামেলা পোশাক পরতে বাধ্য করা হত। উত্তেজক ভোজপুরি গান চালিয়ে তার সঙ্গে নাচতে বলা হত। এর পর ওই কিশোরীদের উপর চলত যৌন নির্যাতন-ধর্ষণ।

চার্জশিটে সিবিআই আরও জানিয়েছে, কেউ রাজি না হলে বা প্রতিবাদ করলেই পেটানো হত। ‘‘প্রতিবাদীদের রাতে খাবার দেওয়া হত শুধু রুটি আর নুন। আর যারা রাজি হত, তাদের মিলত ভাল খাবার-দাবার।’’ দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে চারতলা ওই হোমটি চলছিল। সিবিআই-এর আশঙ্কা, ওই দীর্ঘ সময় ধরেই এই যৌন নির্যাতন চলত।

Advertisement

আরও পড়ুন: স্ত্রীকে ফেসবুকে অশালীন মন্তব্য, থানায় ঢুকে পুলিশের সামনেই যুবককে মার জেলাশাসকের

গত বছরের মাঝামাঝি একটি বেসরকারি সংস্থার অডিট রিপোর্টের পর মুজফ্‌ফরপুরের ঘটনা সামনে আসে। সরকারি ওই হোমে কিশোরীদের উপর যৌন নির্যাতন চলছে বলে অভিযোগ ওঠে। মেডিক্যাল পরীক্ষায় ধরা পড়ে ৪২জন কিশোরীর মধ্যে ৩৪ জনের উপরই যৌন নির্যাতন চালানো হয়েছে।

ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে উঠে আসে ব্রজেশ ঠাকুরের নাম। এই ব্রজেশ ঠাকুর ‘অত্যন্ত প্রভাবশালী ব্যক্তি’। এ কথা বলেছে সুপ্রিম কোর্টই। সে বিহারের শাসক দল জেডিইউ-এর একাধিক শীর্ষ স্তরের নেতার ঘনিষ্ঠ বলে তদন্তে আগেই উঠে এসেছে। চার্জশিটে সিবিআই জানিয়েছে, ব্রজেশের চেনা অতিথি-অভ্যাগতরা প্রায়ই ওই হোমে আসতেন। তাঁদের অধিকাংশই রাজনৈতিক প্রভাবশালী।

আরও পডু়ন: বালিগঞ্জে বিয়ের ১৪ বছরে ধর্ষণের অভিযোগে রহস্যের গন্ধ

তদন্তে নেমে ব্রজেশকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আবাসিক কিশোরীদের অন্যত্র সরিয়ে সিল করে দেওয়া হয় ওই হোমটি। পরে ভেঙেও ফেলা হয়। পরে তদন্তভার হাতে নেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। তদন্তে প্রভাব খাটাতে পারে এই আশঙ্কায় ব্রজেশ ঠাকুরকে বিহারের বাইরের কোনও জেলে রাখার নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত।

এই ঘটনায় বিহারের রাজনীতিতেও ব্যাপক প্রভাব পড়ে। নীতীশ কুমার সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয় বিরোধী দল লালুপ্রসাদের আরজেডি। দলের নেতাদের অভিযোগ, এই কুকর্মে ব্রজেশ ঠাকুরকে সাহায্য করেছে শাসক দল জেডিইউ। অন্য দিকে বিহারের সামাজিক উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী মঞ্জু বর্মার স্বামী চন্দ্রশেখের বর্মার কল রেকর্ডস ঘেঁটে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, অভিযুক্ত ব্রজেশের সঙ্গে বহুবার ফোনে কথা বলেছেন তিনি। এর পরই মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করেন মঞ্জু বর্মা।


আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement