(বাঁ দিকে) সাহিল শুক্ল। মুস্কান রস্তোগী (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
স্কুলে পড়ার সময় থেকে ভাল বন্ধু ছিলেন মুস্কান রস্তোগী এবং সাহিল শুক্ল। মাঝে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় দু’জনের। তার পরে আবার সমাজমাধ্যমে যোগাযোগ হয় সাহিলের সঙ্গে মুস্কানের। তার পর গড়ায় সম্পর্ক। এই নিয়ে মেরঠে বাড়িওয়ালা থেকে স্বামী সৌরভ রাজপুত আপত্তি জানালেও দু’জনে কানে তোলেননি বলে অভিযোগ। দু’জনের ঘনিষ্ঠতা বেড়েই চলে। দেখা-সাক্ষাৎও বেড়ে চলে বলে দাবি করেছেন পরিচিতেরা। এ বার মেরঠের জেলেও সাহিলের সঙ্গে একই কুঠুরিতে থাকতে চান সৌরভের খুনে অভিযুক্ত মুস্কান। তাঁদের সেই আর্জি নাকচও করে দিয়েছেন জেল কর্তৃপক্ষ।
স্বামী সৌরভকে খুনের অভিযোগে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন মুস্কান। ওই একই অভিযোগে জেলবন্দি তাঁর প্রেমিক সাহিলও। মেরঠের চৌধরি চরণ সিংহ জেলা সংশোধনাগারে রয়েছেন তাঁরা। সেখানে সাহিলের সঙ্গে একই কুঠুরিতে থাকার আর্জি জানিয়েছিলেন মুস্কান। ওই আর্জি ছিল সাহিলেরও। জেলের নিয়মের কথা জানিয়ে সেই আর্জি খারিজ করেছেন জেল কর্তৃপক্ষ। জেল সুপার বীরেশরাজ শর্মা বলেন, ‘‘জেলের নিয়ম অনুযায়ী একই কুঠুরিতে পুরুষ এবং মহিলা বন্দি থাকতে পারেন না।’’ জেল সূত্রে খবর, এখন সাহিলের সংলগ্ন কুঠুরিতে রাখা হয়েছে মুস্কানকে। তবে তাঁরা নিজেদের কুঠুরিতে অন্য সহবন্দির সঙ্গে কোনও কথা বলছেন না। বার বার দু’জনে একই কুঠুরিতে থাকার জন্য বায়না করছেন। পুলিশ তাঁদের জেরার জন্য নিজেদের হেফাজতে চেয়ে কোর্টে আবেদন করতে পারে বলে খবর।
সূত্রের খবর, অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত একই স্কুলে পড়াশোনা করেছিলেন সাহিল এবং মুস্কান। তার পর দু’জনে দুই ভিন্ন স্কুলে ভর্তি হয়েছিলেন। সেই থেকে আর দু’জনের যোগাযোগ ছিল না। কয়েক বছর আগে সমাজমাধ্যমে আবার যোগাযোগ হয় সাহিলের সঙ্গে মুস্কানের। তত দিনে সৌরভের সঙ্গে মুস্কানের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। তার পরেই শুরু হয় যত গোল! অভিযোগ, এই সাহিলের সঙ্গে মিলেই স্বামী সৌরভকে খুন করেছেন মুস্কান। সৌরভ মার্চেন্ট নেভি অফিসার। গত দু’বছর ধরে লন্ডনে চাকরি করতেন তিনি। গত মাসে ছ’বছরের কন্যার জন্মদিন পালন করতে দেশে ফিরেছিলেন সৌরভ। অভিযোগ, ৪ মার্চ খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে স্বামীকে খাইয়েছিলেন মুস্কান। তার পরে তাঁকে খুন করেছিলেন। শেষে সাহিলের সঙ্গে মিলে তাঁর দেহ টুকরো করে বাজার থেকে কেনা ড্রামে ভরেছিলেন। সেই ড্রামের উপর গোলা সিমেন্ট ঢেলে দিয়েছিলেন। তার পরে হিমাচলে চলে গিয়েছিলেন দু’জনে। সেখান থেকে সৌরভের ফোন ব্যবহার করে সমাজমাধ্যমে ছবি পোস্ট করেছিলেন। পরে মুস্কান নিজের বাবা-মায়ের কাছে স্বীকার করেন যে, সাহিলের সঙ্গে মিলে স্বামীকে খুন করেছেন তিনি।
গত সপ্তাহে সাহিল এবং মুস্কানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মেরঠের জেল সুপার বীরেশ জানিয়েছেন, দু’জনেই মাদকাসক্ত। মেডিক্যাল পরীক্ষায় তার প্রমাণ মিলেছে। মাদক না পেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তাঁরা। এখন জেলে তাঁদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।