ছবি পিটিআই।
অতিমারির মধ্যে ই-পাস ব্যবস্থায় নিয়ন্ত্রিত ভাবে মেট্রো রেল চালু করে প্রথমে রাস্তা দেখিয়েছে কলকাতা তথা বাংলার মেট্রো। সেই ধাঁচে মুম্বইয়ে লোকাল ট্রেন চালু করে এ বার বঙ্গ-সহ সারা দেশের কাছে পথপ্রদর্শকের ভূমিকা নিতে চলেছে মহারাষ্ট্র।বঙ্গে লোকাল ট্রেনের পরিষেবা শুরু করার জন্য আলোচনা চেয়ে পূর্ব রেলের অতিরিক্ত জেনারেল ম্যানেজার পুজোর আগে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবকে চিঠি দিয়েছিলেন।
রাজ্য সেই বিষয়ে রেলকে এখনও কিছু জানায়নি। সরকার সংক্রমণের আশঙ্কা সম্পর্কে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মত খতিয়ে দেখছে বলে প্রশাসনিক শিবিরের খবর। পুজোর মধ্যে কতকটা সেই কারণেই শহরতলির ট্রেন চালু করার পথে হাঁটেনি রাজ্য। পুজোর পরে যাত্রীদের কলকাতায় আসার প্রবণতায় ভাটা পড়তে পারে। রেল সূত্রের বক্তব্য, মুম্বইয়ে লোকাল ট্রেন পরিষেবা শুরু হলে তা পশ্চিমবঙ্গ এবং অন্যান্য রাজ্যকেও পথ দেখাবে।
মহারাষ্ট্রে জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত তিন লক্ষ কর্মীর জন্য ট্রেন পরিষেবা আগেই শুরু হয়েছে। করোনার মধ্যে এ বার সাধারণ যাত্রীদের জন্য লোকাল ট্রেন চালু করার কথা ভাবছে মহারাষ্ট্র সরকার। জরুরি পরিষেবার কর্মীদের জন্য চালু প্রায় ১৫০০ বিশেষ ট্রেনে সরকারের দেওয়া কিউআর কোডের বিশেষ পাস লাগছে। আপাতত সেই ব্যবস্থা চালু রেখেই সাধারণ যাত্রীদের একাংশের জন্য কী ভাবে পরিষেবা চালু করা যায়, তার প্রক্রিয়া শুরু করেছে মহারাষ্ট্র। সেই জন্য ওই রাজ্যের ত্রাণ ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর দিনের নির্দিষ্ট সময়ে ট্রেন চালানোর প্রস্তাব দিয়েছে রেলকে। মুম্বইয়ে সকাল সাড়ে ৭টায় একটি, ১১টা থেকে বিকেল ৪টের মধ্যে কয়েকটি এবং রাত ৮টার পরে শেষ ট্রেনের সময় পর্যন্ত বেশ কিছু ট্রেন সাধারণ যাত্রীদের জন্য চালানোর কথা ভাবা হয়েছে।
রেলের খবর, জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত তিন লক্ষ যাত্রীর বাইরে মহারাষ্ট্রে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত আরও সাড়ে চার লক্ষ যাত্রীর যাতায়াতের ব্যবস্থা করার দাবি উঠেছে। তার উপায় খুঁজতেই সাধারণ যাত্রীদের একাংশের জন্য পরিষেবা ফের শুরু করার কথা ভাবা হচ্ছে। এখনই পরিষেবা চালু না-হলেও রেল ও মহারাষ্ট্র সরকার স্টেশনে ভিড় নিয়ন্ত্রণের উপায় নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছে। এ ক্ষেত্রে কলকাতা মেট্রোর ভিড় নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থাপনা কাজে লাগানোর ব্যাপারেও আলোচনা অনেকটা এগিয়েছে। কলকাতা মেট্রোর ই-পাস ব্যবস্থাপনার দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার কর্তা সঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় জানান, এই বিষয়ে ইতিবাচক পথে আলোচনা এগোচ্ছে। সব কিছু ঠিক থাকলে নভেম্বরের মাঝামাঝি মুম্বইয়ে আমজনতার জন্য শহরতলির লোকাল ট্রেন খুলে দেওয়া হতে পারে।
আরও পড়ুন: বিজেপিকে ভোট দেওয়ার আহ্বান মায়ার
কেন্দ্রের তরফে আনলক সংক্রান্ত নির্দেশিকায় ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত স্বাভাবিক ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছে রেল। আপাতত বিশেষ ট্রেন চলবে। লোকাল ট্রেনের ক্ষেত্রে রাজ্যগুলির আগ্রহই পরিষেবা শুরু করার ক্ষেত্রে গুরুত্ব পাবে বলে রেলের তরফে জানানো হয়েছে। কলকাতা মেট্রোর ধাঁচে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করে মুম্বইয়ে শহরতলির ট্রেন চালু হলে সেটা রেলের কাছেও খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। সেই অভিজ্ঞতা করোনা আবহে ট্রেন পরিষেবা শুরু করার ক্ষেত্রে মডেল হয়ে উঠতে পারে।