ঘর থেকে গুলিবিদ্ধ দেহ উদ্ধার ব্যবসায়ী দম্পতির। প্রতীকী ছবি।
ব্যবসার সূত্রে বহু লোককে টাকা ধার দিয়েছিলেন। মেয়ের বিয়ে দিতে গিয়ে টাকার প্রয়োজন পড়ায় সেই টাকা চেয়েও পাননি মধ্যপ্রদেশের পান্নার ব্যবসায়ী সঞ্জয় শেঠ। স্থির করেছিলেন ধার দেওয়া টাকা তুলে ধুমধাম করে মেয়ের বিয়ে দেবেন। কিন্তু বার বার টাকা চেয়েও না পাওয়ায় ভেঙে পড়েছিলেন সঞ্জয়। শনিবার ঘর থেকে সঞ্জয় এবং তাঁর স্ত্রীর গুলিবিদ্ধ দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
সঞ্জয়ের ঘর থেকে একটি চিঠি উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাতে লেখা ছিল, “গুরুজি আমাকে ক্ষমা করুন। যদি আবার জন্ম হয়, তা হলে আপনার একনিষ্ঠ ভক্ত হব।” একটি ভিডিয়োও উদ্ধার করেছে পুলিশ। মৃত্যুর আগে ভিডিয়োটি বানিয়েছিলেন সঞ্জয়। পান্নার এক শীর্ষ পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, সেখানে কাঁদতে কাঁদতে সঞ্জয়কে বলতে শোনা গিয়েছে, “দয়া করে আমার টাকা ফেরত দিন। আমার ছেলেমেয়েগুলির কথা ভেবে ওই টাকা ফেরত দিন। মেয়ের বিয়ের জন্য ৫০ লক্ষ থেকে ১ কোটি টাকা প্রয়োজন। কিন্তু ওর অ্যাকাউন্টে মাত্র ২৯ লক্ষ টাকা পড়ে আছে। আপনাদের কাছে যে টাকা পাই তা ফেরত দিন যাতে ৫০ লক্ষ থেকে ১ কোটি টাকা খরচ করে আমার মেয়ের বিয়ে দিতে পারি।”
সঞ্জয় আরও লিখেছেন, “আমাদের আর বাঁচার ইচ্ছা নেই। চললাম। মেয়ের বিয়ের জন্য অনেক গয়না রাখা আছে।” এর পরই ছেলেমেয়ের উদ্দেশে তিনি লেখেন, “আমাদের ক্ষমা করে দিস।” সঞ্জয়ের পরিবারের সদস্যদের দাবি, শনিবার স্বামী-স্ত্রী দোতলায় চলে যান। তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই দোতলা থেকে গুলির শব্দ পান তাঁরা। সঞ্জয়ের ঘরে যেতেই তাঁরা দেখেন মেঝেতে নিথর হয়ে পড়ে আছেন সঞ্জয়ের স্ত্রী। ঘর রক্তে ভেসে যাচ্ছিল। তখনও বেঁচে ছিলেন সঞ্জয়। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই মৃত্যু হয়। এর পরই পরিবারের সদস্যরা পুলিশে খবর দেন।
পান্নার পুলিশ সুপার ধর্মরাজ মীনা জানিয়েছেন, প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, পারিবারিক কোনও দ্বন্দ্বের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে। সঞ্জয়ের লেখা চিঠির সূত্রে ধরে তদন্ত শুরু হয়েছে। সমস্ত রকম সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।