নিহত নেহা হিরামথে। — ফাইল চিত্র।
ছেলের হয়ে কর্নাটকের সকল মানুষের কাছে ক্ষমা চাইলেন কংগ্রেস নেতার মেয়ে নেহা হিরামথেকে কুপিয়ে খুনে অভিযুক্ত ফয়াজ়ের মা মুমতাজ। মৃতার পরিবারের কাছেও ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন। মেনে নিয়েছেন, তাঁর ছেলে ভুল করেছেন। তবে বিষয়টিকে ‘লভ জিহাদ’ বলে মানতে রাজি হননি মুমতাজ। জানিয়েছেন, তাঁর ছেলে অবসাদে ভুগছিলেন। তরুণীকে খুনের ঘটনা নিয়ে ‘লভ জিহাদ’-এর অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। কন্যাকে হারিয়ে একই তত্ত্ব শোনা গিয়েছে কংগ্রেস নেতা নিরঞ্জন হিরেমথের মুখেও। যদিও কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রীও এই অভিযোগ মানেননি।
মুমতাজ বলেন, ‘‘আমার ছেলের হয়ে কর্নাটকের সকলের কাছে ক্ষমা চাইছি। ওই মেয়েটির অভিভাবকের থেকেও ক্ষমা চাইছি। ও আমার মেয়ের মতোই। আমি এ ক্ষেত্রে কোনও ফারাক করছি না। আমি বুঝতে পারছি, ওঁরা কতটা কষ্ট পেয়েছেন। আমিও একই রকম কষ্ট পেয়েছি।’’ এর পরেই মুমতাজ স্বীকার করেছেন যে, তাঁর ছেলে ভুল করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমার ছেলে যা করেছে, ভুল করেছে। ও যা-ই হোক, যা হয়েছে, তা ভুল।’’ তার পরেই তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, তাঁর ছেলে দেড় বছর বাড়িতে বসেছিলেন। তাই অবসাদে ভুগছিলেন। ‘লভ জিহাদ’-এর ঘটনা এটা নয়। তিনি বলেছেন, ‘‘ওদের সম্পর্ক ছিল। আমি গত এক বছর ধরে বিষয়টি জানি।’’
কর্নাটকের হুবলীতে বিভি ভুমারেড্ডি কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজিতে পড়াশোনা করতেন কংগ্রেস কাউন্সিলর নিরঞ্জন হিরেমথের মেয়ে নেহা। কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন নিয়ে স্নাতকোত্তরের প্রথম বর্ষে পড়াশোনা করতেন তিনি। ওই কলেজেই পড়াশোনা করতেন ফয়াজ়। পরে তিনি কলেজ ছেড়ে দেন। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা নাগাদ ক্যাম্পাসের ভিতর দিয়ে হাঁটছিলেন নেহা। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, নেহার সঙ্গে কিছু কথা বলেন ফয়াজ়। তার পর তাঁকে কোপাতে শুরু করেন। নেহা মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তার পরেও তাঁকে অন্তত ছ’বার কোপ দেন ফয়াজ়। এর পর ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান অভিযুক্ত।
এই ঘটনায় প্রথম থেকেই ‘লভ জিহাদ’-এর অভিযোগ করছে বিজেপি। সেই সঙ্গে তাদের দাবি, কংগ্রেস সরকারের আমলে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চূড়ান্ত অবনতি হয়েছে। সেই কারণেই প্রকাশ্যে এমন নৃশংস ঘটনা ঘটেছে। এ বার একই কথা বলেছেন নেহার বাবাও। নিরঞ্জন সংবাদমাধ্যমে এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আজকাল এই ধরনের নৃশংস খুনের ঘটনা বাড়ছে। আমি জানি না, কম বয়সিরা এমন ভুল পথে কেন যাচ্ছে। কেন ওদের এমন মানসিকতা তৈরি হচ্ছে। আমি চাই গরিব ঘরের কোনও মেয়েকে যেন এই হেনস্থার শিকার হতে না হয়।’’ এর পরেই তিনি বলেন, ‘‘আমার মনে হয় ‘লভ জিহাদ’ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। দেখুন, আমি এবং আমার পরিবার কী অবস্থায় এসে পড়লাম। সব মায়ের কাছে আমার আবেদন, মেয়েদের সাবধানে রাখুন। ওদের কলেজে পাঠালে সঙ্গে সঙ্গে আপনিও যান।’’ সিদ্দারামাইয়া এই দাবি মানেননি।