ক্যাপ্টেন শুভম গুপ্ত। ছবি: সংগৃহীত।
বুধবার থেকে সব কিছু ওলটপালট হয়ে গিয়েছে উত্তরপ্রদেশের আগরার গুপ্ত পরিবারে। বাড়ির ভিতরে-বাইরে সর্বত্র শোকের আবহ। হবেই না বা কেন! এই পরিবার যে সদ্য সন্তান হারিয়েছে। কান পাতলেই ভেসে আসছে কান্নার আওয়াজ। বুধবার এই পরিবারেরই পুত্র ক্যাপ্টেন শুভমের মৃত্যু হয়েছে জঙ্গিহানায়।
পুত্রশোকে বিহ্বল সেই পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন উত্তরপ্রদেশের পরিষদীয় মন্ত্রী যোগেন্দ্র উপাধ্যায়। পরিবারের হাতে ৫০ লক্ষ টাকার চেক তুলে দিতে গিয়েছিলেন তিনি। মন্ত্রীকে দেখেই চিৎকার করে কান্নায় ভেঙে পড়েন শুভমের মা। তাঁর হাতে ৫০ লক্ষ টাকার চেক তুলে দেন মন্ত্রী। সেই সময় ওই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করার জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। আর এই দৃশ্য দেখে শুভমের মা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “এই সব লোকদেখানো বিষয় বন্ধ করুন। আমার ছেলেকে ফিরিয়ে দিন। আমার সব কিছু শেষ হয়ে গেল।” এর পরই কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলতে থাকেন, “ও শুভম তুই কোথায়, ফিরে আয়।”
এক সন্তানহারা মাকে এমন ভাবে আকুলিবিকুলি করতে দেখে মন্ত্রীও আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। তিনি সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা হারিয়ে ফেলেন। বুধবার জম্মুর রাজৌরিতে জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে দুই সেনা আধিকারিক-সহ যে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে ছিলেন ক্যাপ্টেন শুভম। দীপাবলিতে বাড়িতে ফোন করে জানিয়েছিলেন, একটি কাজ সেরে খুব শীঘ্রই বাড়ি ফিরবেন। কিন্তু জীবিত অবস্থায় বাড়ি ফেরা হল না তাঁর। পুত্র ফিরলেই তাঁর বিয়ের পাকা কথা সেরে ফেলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল গুপ্ত পরিবার। কিন্তু তার মাধ্যেই খবর আসে জঙ্গিদের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে শুভমের। বুধবার সন্ধ্যা থেকেই তাই গুপ্ত পরিবারে সব কিছু ওলটপালট হয়ে গিয়েছে।
শিবসেনা সাংসদ প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদী এই ঘটনাকে ‘নির্মম’ বলে কটাক্ষ করেছেন। তাঁর আরও কটাক্ষ, এক সন্তানহারা মা যখন বলছেন ‘লোকদেখানো বিষয় বন্ধ করুন’, তার পরেও মন্ত্রী ছবি তোলার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। প্রিয়ঙ্কার কথায়, “অত্যন্ত লজ্জাজনক।” আম আদমি পার্টির সাংসদ রাঘব চড্ডা আবার বলেছেন, “ বিজেপির বি মানে নির্লজ্জ বেশরম) এবং পি মানে প্রচার (পাবলিসিটি)”