Murder in Bengaluru

খাবার নিয়ে ঝগড়ায় দিদিমাকে খুন, ন’মাস পর আলমারি থেকে দেহ উদ্ধার, পাঁচ বছর পর গ্রেফতার দুই

অপরাধের কারণ প্রথম থেকেই স্পষ্ট ছিল পুলিশের কাছে। তার পরেও পাঁচ বছর ধরে অভিযুক্ত সঞ্জয় বাসুদেব রাও এবং তাঁর মায়ের খোঁজ মেলেনি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

বেঙ্গালুরু শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০২৩ ১৭:১৭
Share:

প্রবীণার খুনে অভিযুক্ত শশীকলা এবং সঞ্জয়। ছবি: সংগৃহীত।

ফুলকপির মাঞ্চুরিয়ান নিয়ে ঝামেলা। তার জেরে দিদিমাকে খুনের অভিযোগ ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রের বিরুদ্ধে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, খুন করে বাড়ির আলমারিতে দেহ রেখে দিয়েছিলেন নাতি। ন’মাস পর সেই দেহ উদ্ধার করা গেলেও অভিযুক্তদের ধরা যায়নি। অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশের সময় লেগে যায় আরও পাঁচ বছর। বেঙ্গালুরুর ঘটনা।

Advertisement

অপরাধের কারণ প্রথম থেকেই স্পষ্ট ছিল পুলিশের কাছে। তার পরেও পাঁচ বছর ধরে অভিযুক্ত সঞ্জয় বাসুদেব রাও এবং তাঁর মায়ের খোঁজ মেলেনি। আত্মগোপন করতে মহারাষ্ট্রের একটি ছোট হোটেলে কাজ করতেন সঞ্জয়। তার মা পরিচারিকার কাজ করতেন।

ছোটবেলাতে বাবাকে হারিয়েছিলেন সঞ্জয়। মা শশীকলা এবং দিদিমা শান্তার সঙ্গে বেঙ্গালুরুর কেঙ্গেরি স্যাটেলাইট টাউনে থাকতেন তিনি। পড়াশোনায় খুব ভাল ছিলেন। বেঙ্গালুরুর কুম্বলগোড়ুর এসিএস কলেজে পড়াশোনা করেছিলেন। প্রতিবেশীদের কাছে সুন্দর ব্যবহারের জন্য পরিচিত ছিলেন। স্থানীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, ৭০ বছরের শান্তা প্রায়ই ঝামেলা করতেন মেয়ে শশীকলা এবং নাতির সঙ্গে। বাইরে থেকে খাবার আনা হলে সেই অশান্তি চরমে উঠত।

Advertisement

২০১৬ সালের অগস্টে দোকান থেকে ফুলকপির মাঞ্চুরিয়ান কিনে এনেছিলেন সঞ্জয়। কোন দিন, তা স্পষ্ট করেনি পুলিশ। সেই নিয়ে বচসা শুরু হয়। রাগের চোটে শান্তাকে নিগ্রহ করেন সঞ্জয়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় শান্তার। এর পরেই তাঁর দেহ লুকিয়ে রাখার জন্য বন্ধু নন্দীশের দ্বারস্থ হন সঞ্জয়। স্থির করেন, শিবমোগ্গাতে শান্তার বাড়িতে দেহটি নিয়ে যাবেন তাঁরা। স্থানীয়দের দেখাবেন, স্বাভাবিক ভাবেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। যদিও শেষ পর্যন্ত সেই পরিকল্পনা সফল হয়নি। তখন ওয়ার্ডরোবের দেওয়াল ভেঙে সেখানে শান্তার দেহ ঢুকিয়ে দেন সঞ্জয়। চারকোল দিয়ে বুজিয়ে দেন গর্ত। সিমেন্ট করে দেন। যদিও তাতে গন্ধ চাপা পড়েনি। গন্ধ ঢাকতে মা এবং ছেলে সুগন্ধি ছড়াতেন প্রায়ই। প্রতিবেশীরা জিজ্ঞেস করলে তাঁরা বলতেন, শান্তা নিজের ভাইয়ের বাড়িতে গিয়েছেন। ছ’মাস এ ভাবেই কেটে যায়।

২০১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি বেঙ্গালুরুর ওই বাড়ি ছেড়ে চলে যান সঞ্জয় এবং তাঁর মা। সেই থেকে তাঁদের মোবাইল ফোন বন্ধ। এর পর বাড়ির মালিক নবীন মাঝেমধ্যে বাড়িতে ঢুকলে দুর্গন্ধ পেতেন। ওই ঘর থেকে প্রবল দুর্গন্ধ বার হতে থাকায় ২০১৭ সালের ৭ মে পুলিশকে খবর দেন তিনি। পুলিশ এসে দেওয়াল ভেঙে শান্তার পচাগলা দেহ উদ্ধার করে। তদন্তে নেমে সঞ্জয়ের বন্ধু নন্দীশকে গ্রেফতার করে পুলিশ। দীর্ঘ দিন খোঁজের পরেও সঞ্জয় এবং শশীকলার খোঁজ পাননি। মাঝে অতিমারির সময় এই তদন্ত বন্ধ রাখে পুলিশ। ২০২২ সালে পুলিশ ব্যাঙ্কগুলির কাছে জানতে চায় যে, সঞ্জয়ের প্যান বা আধার নম্বরে দেশের কোথাও কোনও অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে কিনা। সেই সূত্র ধরেই ২০২২ সালের মে মাসে মহারাষ্ট্রের কোলাপুর থেকে সঞ্জয় এবং শশীকলাকে গ্রেফতার করা হয়। ইঞ্জিনিয়ার হওয়া সত্ত্বেও সঞ্জয় একটি দোকানে কাজ করতেন। আর শশীকলা পরিচারিকার কাজ করতেন। তাঁদের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করেছে পুলিশ। তাঁরা এখন জেলে রয়েছেন। মামলা চলছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement