ছেলে বলছেন, বাবার মৃত্যু ‘স্বাভাবিক’। কিন্তু সেই বাবার কাকা বলছেন, ছেলে (নাতি) চাপের মুখে এ সব কথা বলেছেন।
পরিবারের মধ্যেই মতের এমন তারতম্য দেখে কংগ্রেস আজ বলল, ‘‘সংশয় এখনও বহাল। তদন্ত করুক সুপ্রিম কোর্ট।’’ প্রশান্ত ভূষণ, ইন্দিরা জয়সিংহের মতো আইনজীবীরা প্রশ্ন তুললেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের ভূমিকা নিয়ে। প্রশান্ত ভূষণের দাবি, অমিত শাহই আয়োজন করেছেন বিচারক ব্রিজগোপাল লোয়ার ছেলে অনুজের সাংবাদিক বৈঠকের। অনুজের পাশে বসা পারিবারিক বন্ধুই তা প্রকাশ্যে বলেছেন।
বিতর্ক বাড়ছে দেখে আজ মুখ খুলল বিজেপি। প্রশান্ত ভূষণের জবাব দিতে গিয়ে দলের তথ্যপ্রযুক্তি সেলের প্রধান অমিত মালব্য বললেন, অমিত শাহ নয়, ‘অমিত স্যর’-এর কথা বলেছেন পারিবারিক বন্ধুটি। আর এই ‘অমিত স্যর’ হলেন সাংবাদিক বৈঠকেই উপস্থিত আইনজীবী অমিত নায়েক। তাতেও বিতর্ক থামছে কই?
ঘরোয়া মহলে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলছে, অমিত নায়েক মুম্বইয়ের বিখ্যাত আইনি সংস্থার সঙ্গে জড়িত। সেই সংস্থার অন্যতম মক্কেল অমিতাভ বচ্চনের মতো ব্যক্তিত্ব। বিচারক লোয়ার ২১ বছরের ছেলে কী করে তাঁর নাগাল পেলেন? দ্বিতীয়ত, যে অপেক্ষাকৃত তরুণ আইনজীবী অমিতকে ‘স্যর’ বলে সম্বোধন করলেন, সেই কে বি কাড়কে নিজে একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারক!
বিষয়টি বিচারাধীন বলে কংগ্রেস প্রকাশ্যে বেশি বলছে না। কিন্তু আজ সাংবাদিক বৈঠক ডেকে দলের আইনজীবী নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি জানান, লোয়া-মৃত্যুর পর তাঁর বাবা, দুই বোন এবং ছেলে সে সময় কী বলেছিলেন। এবং গত কাল ছেলে কী ভাবে উল্টো সুর গেয়েছেন। বিচারক লোয়ার কাকা শ্রীনিবাস বলেছেন, চাপের মুখে অনুজ এ সব বলেছেন। সিঙ্ঘভি বলেন, ‘‘সন্দেহ যখন আছেই, তখন সুপ্রিম কোর্টের অধীনে তদন্ত হোক।’’
এরই মধ্যে আজ দিল্লিতে বিচারক লোয়ার মৃত্যু নিয়ে এক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে বোম্বে হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি বি জি কোলসে পাটিল বলেন, ‘‘লোয়া-মৃত্যু মামলা সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণ বিচারপতিদের কাছে যাওয়া উচিত। মৃত্যু নিয়ে অনেক প্রশ্ন আছে, তার তদন্ত হওয়া উচিত। আদালতের কাছে এটি অগ্নিপরীক্ষা।’’ আর বিচারক লোয়ার বন্ধু তথা লাটুর বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সভাপতি উদয় গাওয়াড়ের অভিযোগ, লোয়ার মৃত্যু পরিকল্পিত হত্যা।