বৃহস্পতিবার ফের অশান্তি রাজ্যসভায়। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া।
তৃণমূলের সাসপেন্ড হওয়া ছয় সাংসদের মধ্যে তিন জনকে রাজ্যসভায় ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠল। তার জেরে বৃহস্পতিবার ফের অশান্তি রাজ্যসভায়। বিরোধীদের প্রতিবাদের জেরে দফায় দফায় মুলতুবি হয়ে গেল অধিবেশন। অন্য দিকে, সরকার পক্ষের তরফে রাজ্যসভার কাচের দরজা ভাঙার অভিযোগ তোলা হল তৃণমূল সাংসদ অর্পিতা ঘোষের বিরুদ্ধে। যদিও তা নিয়ে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করেননি অর্পিতা।
দলের তিন সাংসদকে বুধবার রাজ্যসভায় ঢুকতে না দেওয়ার ঘটনা নিয়ে তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় বৃহস্পতিবার অধিবেশনে সরব হন। এর পরেই কংগ্রেস-সহ বিরোধী সাংসদেরা প্রতিবাদ শুরু করেন। সেই সঙ্গে পেগাসাস-কাণ্ড নিয়ে আলোচনার দাবিতে ওয়েলে নেমে স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা। হট্টগোলের জেরে তিন দফায় সভা মুলতুবি হয়ে যায়। রাজ্যসভায় কংগ্রেসের নেতা মল্লিকার্জুন খড়গে বলেন, ‘‘নিয়ম বহির্ভুত ভাবে বাধা দেওয়া হয়েছে তিন তৃণমূল সাংসদকে।’’
গেপাসাস-কাণ্ড নিয়ে হট্টগোলের অভিযোগে বুধবার রাজ্যসভা থেকে দিনের মতো সাসপেন্ড করা হয়েছিল তৃণমূলের ছ’জন সাংসদকে— দোলা সেন, নাদিমুল হক, মৌসম নুর, শান্তা ছেত্রী, আবিররঞ্জন বিশ্বাস এবং অর্পিতা ঘোষ। তৃণমূলের দাবি, বুধবার অধিবেশন মুলতুবি হওয়ার পরে নিয়ম অনুযায়ী সাসপেনশনের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। তাদের অভিযোগ, অধিবেশন মুলতুবি হওয়ার পর বুধবার বিকেলে তিন সাংসদ অধিবেশনকক্ষ লাগোয়া চেম্বারে ঢুকতে গিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন অর্পিতা এবং দোলা সেন-সহ তিন জন মহিলা সাংসদ। কিন্তু ওই মহিলা সাংসদেরা ঢুকতে গেলে মার্শাল তাঁদের বাধা দেন।
অভিযোগ, সে সময় মার্শালের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কিতে জড়িয়ে পড়েন তিন তৃণমূল সাংসদ। তাঁদের মধ্যে এক জন অধিবেশন কক্ষের একটি কাচের দরজা ভেঙে দেন। রাজ্যসভায় বিজেপি-র সহকারী দলনেতা মুখতার আব্বাস নকভির অভিযোগ, দরজা ভেঙেছেন সাংসদ অর্পিতা। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোটের গুন্ডামির পুনরাবৃত্তি এ বার সংসদে ঘটাতে চাইছে তৃণমূল।’’
রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ নারায়ণ সিংহ সরাসরি কোনও সাংসদের নাম না নিলেও কাচের দরজা ভাঙার জন্য তৃণমূলকে দুষেছেন। তিনি বলেন, ‘‘অজ্ঞাতনামা তৃণমূল সাংসদ দরজা ভেঙেছেন।’’
তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন টুইটারে ঘটনার কথা জানিয়ে লেখেন, ‘বুধবার ১১টা ১০-এ সরকার পক্ষ ফের পেগাসাস নিয়ে আলোচনায় অসম্মতি জানানোয় ৩০ জন সাংসদ ওয়েলে নেমে প্রতিবাদ জানান। ১১টা ১৩-য় প্ল্যাকার্ড তোলার অভিযোগে ছ’জন সাংসদকে দিনের মতো সাসপেন্ড করা হয়। ৩টে ৩৫-এ দিনের মতো সভা মুলতুবির পরে তিন সাংসদ (যাঁদের সাসপেনশনের মেয়াদ শেষ হয়েছে) অধিবেশন কক্ষে ঢুকতে যান। পুরুষ মার্শালেরা তাঁদের বাধা দেন।’ তবে দরজা ভাঙার প্রসঙ্গ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি ডেরেক।