—ফাইল চিত্র।
সংবাদমাধ্যমকে হুমকি দেওয়ার প্রসঙ্গে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লবকুমার দেব। তাঁর কথায়, “প্রচারের কি অপার মহিমা! বানর হয়ে যায় বাঘ, আবার বাঘকে বানিয়ে দেওয়া হয় বানর!” সাব্রুমের সাম্প্রতিক সভায় তিনি যা বলেছিলেন, তার ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে বলে দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী।
কিছুটা নরম সুরে ব্যাখ্যা দিলেও ফের সংবাদমধ্যমের দিকেই আঙুল তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সাংবাদিকদের সঙ্গে এক আলাপচারিতায় এ দিন তিনি দাবি করেন, রাজ্যের প্রধান হিসেবে সকলকে সুরক্ষিত রাখা তাঁর দায়িত্ব। তাই, করোনা নিয়ে অপপ্রচার থেকে জনগণকে রক্ষা করাকেও তিনি নিজের কর্তব্য বলে মনে করেন।” একই সঙ্গে তাঁর আবেদন, জনগণ যেন এই অপপ্রচার ও তাঁর বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যায় বিভ্রান্ত না হন। বিপ্লবের কথায়, “রাজ্যের প্রধান হিসেবে রাজ্যবাসীকে সব রকম ভাবে রক্ষা করা আমার কর্তব্য। তাতে, কারও সঙ্গে বিদ্বেষমূলক আচরণের প্রশ্নই আসে না। আমাদের সকলকে একজোট হয়ে করোনার মোকাবেলা করতে হবে। তবেই এই অতিমারির বিরুদ্ধে জয় পাওয়া সম্ভব হবে।”
এর প্রতিক্রিয়ায় কংগ্রেসের সহসভাপতি তাপস দে-র মন্তব্য, “দেশ জুড়ে নিন্দা-প্রতিবাদ তো হচ্ছেই। এর উপর মুখ্যমন্ত্রীকে বক্তব্য প্রত্যাহার করার জন্য সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল রাজ্যের সংবাদমাধ্যম। এতেই ওঁর সম্বিৎ ফিরেছে।” তবে এটাকে যথষ্ট মনে করছে না কংগ্রেস। তাদের মতে, মুখ্যমন্ত্রীর উচিত ছিল সরকারি ভাবে নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দেওয়া। তা না-করে তিনি বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমের কিছু সাংবাদিকের সামনে সেটা করলেন। প্রদেশ কংগ্রেস সহসভাপতির কথায়, “এটা শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা। সংসদে বিষয়টি নিয়ে সরব হবে কংগ্রেস।”
দক্ষিণ জেলার সাব্রুম মহকুমায় স্পেশাল ইকনমিক জ়োনের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ এনেছিলেন, করোনা নিয়ে সংবাদমাধ্যমের একাংশ অপপ্রচার চালাচ্ছে। সেই সঙ্গে তিনি হুঁশিয়ারি দেন, ইতিহাস তাদের মাফ করবে না। রাজ্যবাসীও মাফ করবে না। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নিজেও মাফ করবেন না। ইতিহাস সাক্ষী রয়েছে, তিনি যা বলেন তা করে দেখান।
মুখ্যমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই রাজ্যে দু’জন সাংবাদিকের উপরে হামলা হয়। গোটা দেশের বিভিন্ন মহলে যাঁর তীব্র সমালোচনা হচ্ছে। বিপ্লবকে কোণঠাসা করতে তৎপর হয়ে উঠেছে
বিরোধীরা। তাঁদের মতে, চাপে পড়েই আজ নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে হল মুখ্যমন্ত্রীকে। তবে মঙ্গলবার সন্ধেয় ব্যাখ্যা দিতে গিয়েও বিপ্লব ফের আঙুল তুলেছেন সেই সংবাদমাধ্যমের দিকেই। তাঁর মতে, সাংবাদমাধ্যমের একাংশ প্রচারের মাধ্যমে
অনেক সময় বানরকে বাঘ এবং বাঘকে বানর বানিয়ে ফেলছে। এই অপপ্রচারের হাত থেকে জনগণকে রক্ষা করার দায়িত্বও নিজের হাতে তুলে নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।