National news

ভাগবতের সেনা মন্তব্যে তুমুল ঝড় দেশ জুড়ে

রবিবার বিহারের মুজফফরনগরে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যান সঙ্ঘপ্রধান। আরএসএস কর্মীদের সেই সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমরা কোনও সেনাবাহিনী নই... যদি দেশের প্রয়োজন পড়ে এবং সংবিধান অনুমতি দেয়... তা হলে সঙ্ঘ তার বাহিনী তৈরি করতে পারে তিন দিনের মধ্যে, যেটা সেনাবাহিনীর ছয় থেকে সাত মাস লেগে যায়।’’

Advertisement
শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১৬:০৩
Share:

রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ প্রধান মোহন ভাগবত। —ফাইল চিত্র।

দেশের জন্য ঝাঁপানোর প্রস্তুতি নিতে সেনাবাহিনীর যেখানে ছ’ থেকে সাত মাস লেগে যায়, তাঁর সঙ্ঘসেবকরা সেটা তিন দিনের মধ্যে করে দিতে পারে। আরএসএস (রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ) প্রধান মোহন ভাগবতের এই মন্তব্য ঘিরে তীব্র সমালোচনার ঝড় উঠেছে দেশ জুড়ে। আর এই বিতর্কের মুখে, তড়িঘড়ি পাল্টা বিবৃতি দিয়ে আরএসএস-এর দাবি, অপব্যাখ্যা করা হচ্ছে ভাগবতের মন্তব্যের।

Advertisement

রবিবার বিহারের মুজফফরনগরে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যান সঙ্ঘপ্রধান। আরএসএস কর্মীদের সেই সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমরা কোনও সেনাবাহিনী নই... যদি দেশের প্রয়োজন পড়ে এবং সংবিধান অনুমতি দেয়... তা হলে সঙ্ঘ তার বাহিনী তৈরি করতে পারে তিন দিনের মধ্যে, যেটা সেনাবাহিনীর ছয় থেকে সাত মাস লেগে যায়।’’

মোহন ভাগবত যখন এই মন্তব্য করছেন, তখন কাশ্মীরের সেনা ক্যাম্পে দু’দিনের দীর্ঘ লড়াইয়ে জঙ্গিদের হাতে প্রাণ দিয়েছেন পাঁচ সেনা অফিসার এবং জওয়ান। তুমুল বিতর্ক শুরু হয়ে যায় এই মন্তব্য সামনে আসার পরই।

Advertisement

আরও পড়ুন: ‘নীতি থাকলে কি এমন জোট করত বিজেপি?’

আজ সকালে রাহুল গাঁধী টুইটারে আঙুল তোলেন— ‘‘আরএসএস প্রধানের বক্তব্য প্রত্যেক ভারতীয়ের পক্ষে অপমান, কারণ এটা তাঁদের অশ্রদ্ধা করল যাঁরা আমাদের দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছেন।” #অ্যাপোলোজাইসআরএসএস (#ApologiseRSS) দিয়ে টুইট করে কংগ্রেস সভাপতি আরও লেখেন, “মিস্টার ভাগবত আপনাকে ধিক্কার, আমাদের শহিদদের এবং আমাদের সেনাবাহিনীকে অসম্মান করার জন্য।”

'

কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন ফেসবুকে লেখেন, ‘‘মোহন ভাগবতের এই মন্তব্য খুবই খারাপ মনোভাবের প্রতিফলন... আসলে ভারতের একতা ভাঙতে সমান্তরাল সেনাবাহিনী তৈরি করতে চায় আরএসএস। তাদের এই লুকনো কর্মসূচি (অ্যাজেন্ডা)-ই সামনে উঠে এসেছে।... আরএসএসের আসল লক্ষ্য মুসোলিনির ইতালি এবং হিটলারের জার্মানি গড়ে তোলা।’’

( ) &

বেগতিক বুঝে পাল্টা ব্যাখ্যা এবং আক্রমণে নেমে পড়েছে আরএসএস, এমনকী বিজেপি-ও।

আরএসএস-এর পক্ষ থেকে মনমোহন বৈদ্য বিবৃতি দেন, “ভগবতজি বলেছিলেন যে যদি পরিস্থিতি তৈরি হয় এবং সংবিধান অনুমতি দেয়, তা হলে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সমাজকে তৈরি করে নিতে ৬ মাস লাগবে যেখানে সঙ্ঘের স্বয়ংসেবকদের তিন দিনে তৈরি করে ফেলা যাবে, যেহেতু স্বয়ংসেবকরা নিয়মিত শৃঙ্খলার চর্চা করেন।”

আরএসএসের সেই বিবৃতি।

আরএসএস প্রধানের পাশে দাঁড়িয়েছে বিজেপি-ও। কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণ প্রতিমন্ত্রী জয়ন্ত সিনহার বক্তব্য, বিরোধীরা অহেতুক গলা চড়াচ্ছেন। সঙ্ঘপ্রধানের বক্তব্যের ভুল বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেন রিজিজু টুইট করে জানান, ‘‘ভারতীয় সেনা আমাদের গর্ব। জরুরি পরিস্থিতিতে (কংগ্রেসের জরুরি অবস্থা নয়) প্রত্যেক ভারতীয়কে সেনার পাশে দাঁড়াতে হবে। ভাগবতজি বলেছেন, একজন সাধারণ মানুষের ৬-৭ মাস সময় লাগবে প্রশিক্ষিত সেনা হওয়ার জন্য। সংবিধান অনুমতি দিলে আরএসএস-ও সেনার সঙ্গে সেই প্রশিক্ষণে যোগ দিতে পারে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement