মহম্মদ জুবের। —ফাইল চিত্র।
সুপ্রিম কোর্টে এ বার পুরোপুরি স্বস্তি পেলেন সাংবাদিক মহম্মদ জুবের। বুধবার তাঁকে সমস্ত মামলায় অন্তর্বর্তিকালীন জামিন দিল দেশের শীর্ষ আদালত। সেই সঙ্গে জুবেরকে অবিলম্বে জেল থেকে ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে তারা।
সুপ্রিম কোর্টে জামিনের আবেদন করেছিলেন ‘অল্ট নিউজ’-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, বুধবার সন্ধ্যার ৬টার মধ্যে জুবেরকে মুক্তি দিতে হবে। এই রায়দানের সময় আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘‘জুবেরকে ক্রমাগত আটকে রাখা এবং অন্তহীন ভাবে বিভিন্ন কোর্টে মামলায় জড়িয়ে রাখার কোনও যৌক্তিকতা নেই।’’
প্রসঙ্গত, জুবেরকে ২৭ জুন গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশ। মূলত বিভিন্ন খবরের সত্যতা যাচাইয়ের কাজ করে ওই বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমটি। প্রায় চার বছর আগেই একটি টুইটে জনপ্রিয় হিন্দি সিনেমার ‘স্ক্রিনশট’ পোস্ট করেছিলেন তিনি। জুবেরের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০১৮ সালে করা তাঁর একটি টুইট ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করেছে। তাঁকে সীতাপুরের একটি মামলাতেও পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। দু’টি মামলাতে জামিন পেলেও পরে উত্তরপ্রদেশে তাঁর বিরুদ্ধে আরও কয়েরটি এফআইআর করা হয়েছিল। সব মিলিয়ে মোট ছ’টি এফআইআরের জন্য জেল থেকে ছাড়া পাননি জুবের। সে সব প্রত্যাহারের জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করলে সাময়িক স্বস্তি মেলে। সোমবার সুপ্রিম কোর্ট জানায়, পরবর্তী শুনানির আগে পর্যন্ত জুবেরের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা যাবে না। শীর্ষ আদালতের মন্তব্য, ‘‘আমরা দেখতে পেয়েছি যে দিল্লি পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে ভালই তদন্ত করেছে। তাঁর মুক্তির পথে বাধা তৈরি করে, এমন কোনও কারণ দেখতে পারছি না আমরা।’’
জামিন পেলেও জুবের যাতে টুইট করতে না পারেন, সে আবেদন করেছিল উত্তরপ্রদেশ সরকার। তবে তা নিয়ে বেশ কটাক্ষপূর্ণ মন্তব্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। তিনি বলেন, ‘‘এটা এমন বলা যেন এক জন আইনজীবী আর তর্ক করতে পারবেন না। সাংবাদিক কী ভাবে তাঁর লেখা বন্ধ করবেন? যদি তিনি এমন কাজ করেন, যাতে আইনভঙ্গ হয়, তবে তিনি আইনের কাছে দায়বদ্ধ হবেন। কিন্তু, সরব হলেই এক জন নাগরিকের বিরুদ্ধে আগে থেকে কী ভাবে পদক্ষেপ করা যায়? প্রত্যেক নাগরিকই জনসমক্ষে এবং ব্যক্তি জীবনে যা করেন, তার জন্য তিনি দায়বদ্ধ। আমরা এমন কোনও নির্দেশ দেব না।’’