অসমের চা-ঋণ শুধতে চান মোদী

মায়ের কাছে সন্তানের ‘দুধ-ঋণ’ থাকে। কিন্তু গুজরাতি নরেন্দ্র মোদীর অসমের কাছে রয়েছে ‘চা-ঋণ’! কারণ তাঁর দাবি, এই অসমের চা-বেচেই শৈশবে পেট চালিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘অসমের কাছে আমার ঋণ আছে, চায়ের ঋণ।’’ ইংরেজরা অসমে চা-চাষ শুরু করেছিল তিনসুকিয়া থেকে। তাই এই শহর ‘চায়ের শহর’ হিসেবেও পরিচিত। সেখানে দাঁড়িয়েই বিজেপিকে জিতিয়ে তাঁকে সেই ‘চা-ঋণ’ শোধের সুযোগ দেওয়ার আর্জি জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

Advertisement

রাজীবাক্ষ রক্ষিত

মাজুলি শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৬ ০২:৫৮
Share:

অসমে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাচ্ছেন বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী-পদপ্রার্থী সর্বানন্দ সোনোয়াল। শনিবার মাজুলিতে উজ্জ্বল দেবের তোলা ছবি।

মায়ের কাছে সন্তানের ‘দুধ-ঋণ’ থাকে। কিন্তু গুজরাতি নরেন্দ্র মোদীর অসমের কাছে রয়েছে ‘চা-ঋণ’! কারণ তাঁর দাবি, এই অসমের চা-বেচেই শৈশবে পেট চালিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘অসমের কাছে আমার ঋণ আছে, চায়ের ঋণ।’’ ইংরেজরা অসমে চা-চাষ শুরু করেছিল তিনসুকিয়া থেকে। তাই এই শহর ‘চায়ের শহর’ হিসেবেও পরিচিত। সেখানে দাঁড়িয়েই বিজেপিকে জিতিয়ে তাঁকে সেই ‘চা-ঋণ’ শোধের সুযোগ দেওয়ার আর্জি জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

Advertisement

এ দিন সকালে তিনসুকিয়া, মাজুলি, বিহপুরিয়া, বোকাখাত ও যোরহাটে সভা করেন মোদী। সর্বত্রই তাঁর প্রধান নিশানা ছিল রাজ্যে ক্ষমতাসীন কংগ্রেস। গন্ডার শিকারিদের সঙ্গে কংগ্রেসের মন্ত্রীদের যোগ রয়েছে বলে সরাসরি অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘ভোটব্যাঙ্কের স্বার্থেই কংগ্রেস অনুপ্রবেশকারী ও চোরাশিকারিদের মদত দিচ্ছে। বিজেপি ক্ষমতায় এলে চোরাশিকার একেবারে বন্ধ হয়ে যাবে।’’ যদিও প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসের পরেও কাজের কাজ কতটা হবে তা নিয়ে সংশয়ে অরণ্যপ্রেমীরা।

বিশ্বের বৃহত্তম নদী-দ্বীপ মাজুলি ভূমিক্ষয়ের ফলে কমতে কমতে এখন মাত্র ৪৮০ বর্গ কিলোমিটারে দাঁড়িয়েছে। এ হল রাজ্যের একমাত্র বিধানসভা আসন, যা প্রতিদিন আকারে ছোট হচ্ছে! এখানে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী সর্বানন্দ সোনোয়াল দাঁড়িয়েছেন। যদিও মাজুলিবাসী কংগ্রেস বা বিজেপি কাউকে নিয়েই খুব আশাবাদী নন। তবে দেশের প্রধানমন্ত্রী এসেছেন, তাই সভায় লোক এসেছিল প্রচুর। উপহার হিসেবে সেলেং চাদর, বকুল ফুলের মালা, মাজুলির মুখোশ, হাতপাখা নিয়ে বক্তৃতায় মোদী বলেন, ‘‘অসমে বিজেপি জিতলে আমার দ্বিগুণ ক্ষতি! এক দিকে, আপনাদের এখানকার ‘হীরে’ সর্বানন্দের মতো সুদক্ষ মন্ত্রীকে ফেরত দিতে হবে। অন্য দিকে অসমের জন্যে চালু করতে হবে অনেক, অনেক প্রকল্প। কিন্তু অসমের বিকাশের স্বার্থে আমি এই ক্ষতি স্বীকার করতে পারলে খুশি হব।’’ সেই সঙ্গেই কংগ্রেসের তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘‘কংগ্রেস টাকা খায় জানতাম, তা বলে এত বড় দ্বীপটাও খেয়ে অর্ধেক করে ফেলবে ভাবতে পারিনি! মাজুলিকে বিশ্ব পর্যটনক্ষেত্র হিসেবে গড়ে তুলব আমরা।’’

Advertisement

সিএজির তথ্য তুলে ধরে গগৈয়ের কাছে ১ লক্ষ ৮০ হাজার কোটি টাকার হিসেব দাবি করেন। অভিযোগ করেন, ‘‘এত বছরের কংগ্রেস শাসন ও ১০ বছর রাজ্যের সাংসদ প্রধানমন্ত্রী থাকার পরেও অসমে ৪২ শতাংশ মানুষের বাড়িতে বিদ্যুৎ নেই, ব্রহ্মপুত্রের রাজ্যে পর্যাপ্ত পানীয় জল নেই!’’ বোকাখাতের সভায়, রাজ্যে বিজেপির জোট-শরিক অগপ-র সভাপতি অতুল বরার হয়ে প্রচার করতে আসা মোদীকে স্বাগত জানান প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্ল মহন্ত। সেখানে মোদী বলেন, ‘‘নুমালিগড় থেকে যোরহাট, চার লেন রাস্তার জন্য কেন্দ্র ৪৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। রাজ্যে সড়ক সম্প্রসারণে মোট ১২ হাজার কোটি ও রেলের জন্য ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হবে।’’

কংগ্রেসের বিরুদ্ধে অন্যত্র আক্রমণাত্মক হলেও সন্ধ্যায়, যোরহাটে তরুণ গগৈয়ের দুর্গে দাঁড়িয়ে মোদী আশ্চর্যজনক ভাবে গগৈয়ের বিরুদ্ধে তোপ দাগেননি! বরং গ্যাস-ইউরিয়ার কালোবাজারি বন্ধ করা-সহ কেন্দ্রের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উপরেই বেশি জোর দেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement