ফাইল ছবি
জার্মানিতে বিশ্বের ধনী এবং শক্তিশালী সাত দেশের আসন্ন সম্মেলনে অগ্রাধিকার পেতে চলেছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তা সহযোগিতার মতো বিষয়। কূটনৈতিক মহলের বক্তব্য, জি-৭ রাষ্ট্রগুলির পক্ষ থেকে ভারতের উপর চাপ তৈরি করা হবে রাশিয়া প্রশ্নে। ওই সম্মেলন শেষে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিন্দামূলক প্রস্তাব আনার কথা। রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানি কমানো নিয়ে নয়াদিল্লির উপর চাপ তৈরি করবেন তিনি। তা মোকাবিলার প্রস্তুতি নিয়েই রবিবার মিউনিখ যাওয়ার বিমান ধরছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
এর আগে ভারতের যুক্তি ছিল, তারা মাত্র ২ শতাংশ তেল রাশিয়া থেকে আমদানি করে। বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর বলেছিলেন, ভারত গোটা মাসে যত তেল মস্কো থেকে আমদানি করে, ইউরোপ তা এক বিকেলেই করে। কিন্তু ঘটনা হল, গত কয়েক মাসে ভারতের আমদানি বেড়ে গিয়েছে অনেকটাই। সূত্রের খবর, ইরাকের পর ভারতের তেল আমদানির তালিকায় এখন দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে মস্কো। ফলে আসন্ন জি-৭ এ আমন্ত্রিত রাষ্ট্র হিসাবে ভারতের যোগদানে কূটনৈতিক চাপানউতোরের সম্ভাবনা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সফরের ঠিক আগে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী জানিয়েছেন, তেল আমদানির বিষয়টি ভারতের অর্থনীতির অগ্রাধিকার এবং জ্বালানির প্রশ্নে জাতীয় চাহিদার উপর নির্ভর করে। আসন্ন বৈঠকেও এই অবস্থানেই অটল থাকবেন মোদী।
তাৎপর্যপূর্ণ হল, জার্মানি থেকেই বাইডেন চলে যাবেন সরাসরি মাদ্রিদে, নেটো সম্মেলনে। সূত্রের খবর, রাশিয়ার বিরুদ্ধে কৌশলগত নতুন পদক্ষেপ নিয়ে কথা হবে সেখানে। তার আগে বাইডেন জি-৭ এবং আমন্ত্রিত রাষ্ট্রগুলির (ভারত, আর্জেন্টিনা, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা) কাছ থেকে রাশিয়া-বিরোধী সিলমোহর চাইবেন।
বিদেশ মন্ত্রক জানাচ্ছে, ভারতের তরফ থেকে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সহযোগিতার বিষয়টি অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে তুলে আনা হবে সংশ্লিষ্ট দেশগুলির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে। চিনের সঙ্গে গত দু’বছর ধরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে সংঘাতমূলক পরিস্থিতি চলছে। চিনের আঞ্চলিক আগ্রাসনের বিষয়টি যে বহু আগে থেকেই ঘটে চলেছে, এ কথা জয়শঙ্কর এর আগে বলেছেন পশ্চিমি দুনিয়াকে। জি-৭-এর মঞ্চকে কাজে লাগিয়ে ভারত চাইবে, সীমান্ত নিরাপত্তার প্রশ্নটিকে সামনে নিয়ে আসতে। এ ব্যাপারে আমেরিকাকে সর্বতো ভাবে পাশে পাওয়ার দাবি করছে বিদেশ মন্ত্রক।