ফাইল চিত্র।
পকোড়া শুধু নয়, দাঁতের মাজন, খেলনা, সার, মুরগি বেচেও রোজগার হচ্ছে। কর্মসংস্থানের এমন ছবিই আজ মেলে ধরলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী!
রাহুল গাঁধী-সহ বিরোধীরা এখনই চার বছরের খতিয়ান তুলে ধরে স্বর চড়াচ্ছেন— বছরে দু’কোটি দূরের কথা, লোকের হাতে কাজ কোথায়? আগামী বছর ভোট। মোদী জানেন, ভোট এগোলে বেকারি নিয়ে আক্রমণের ঝাঁঝ আরও বাড়বে। তারই পাল্টা হিসেবে মোদী টানলেন মাজন-মুরগি বেচে রোজগারের প্রসঙ্গ! নিজের বাড়িতে হাজির করলেন একশোর বেশি সাধারণ মানুষকে। তিন বছর আগে চালু হওয়া ‘মুদ্রা যোজনা’য় ঋণ নিয়ে যাঁরা রোজগার শুরু করেছেন। সঙ্গে দলিত-জনজাতি তাসটিও খেললেন সুকৌশলে। বিজেপির প্রচার, এই প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের অর্ধেকই দলিত, জনজাতি ও অন্য পিছিয়ে পড়া শ্রেণির।
বাসভবনের লনে সকলকে বসিয়ে প্রধানমন্ত্রী তাঁদের থেকে শুনলেন ঋণ নিয়ে কারা কী ব্যবসা করছেন। পরে তাঁদের কয়েক জনের নাম করে শোনালেন সে কথা। আর নিজে বললেন, ‘‘কোনও বড় পরিবারে জন্মাননি আপনারা। কঠোর পরিশ্রম আর আত্মবিশ্বাসে আজ সম্মানের জীবন যাপন করছেন। অন্যদের কাছেও তা অনুপ্রেরণা। আপনাদের সাফল্য দেখে মনে হচ্ছে, সরকারের নীতি ও সদিচ্ছা সঠিক।’’ যেতে যেতে তাঁদের বললেন, ‘‘আপনাদের সন্তানদেরও ভাল শিক্ষা দেবেন।’’
সরকারের আর্থিক সমীক্ষাও বলছে, নতুন কাজের সুযোগ এগোচ্ছে শামুকের গতিতে। স্থায়ীর বদলে বাড়ছে ঠিকা কাজ। তার উপর আংশিক সময়ের কর্মীদের অনেকে কাজও খুইয়েছেন বিভিন্ন কারণে। এ সবের মধ্যেই মোদী আজ শোনালেন, ‘‘দেশে সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্র আছে। কিন্তু সরকারের লক্ষ্য ব্যক্তিগত (পার্সোনাল) ক্ষেত্রে জোর দেওয়া।’’ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কর্মসংস্থানের ‘আসল ছবি’ তুলে আনতে নীতি আয়োগের একটি ‘টাস্ক ফোর্স’ তৈরি হয়েছে। সেপ্টেম্বর থেকেই সেই ছবি সামনে এনে ভোট প্রচার করবেন মোদী। তার আগে এখন থেকেই দেশে ‘কাজ নেই, কাজ নেই’ প্রচারের ঝাঁঝ কমানোর চেষ্টায় নেমেছেন মোদী।
প্রধানমন্ত্রী দফতর জানাচ্ছে, বিভিন্ন আর্থিক সমস্যার মধ্যেও ৪ কোটি ৫৩ লক্ষের বেশি লোককে ২ লক্ষ কোটি টাকার বেশি ঋণ দেওয়া হয়েছে। সরকারের অন্য মন্ত্রীরা বলছেন, এই পরিসংখ্যান সদ্য শেষ হওয়া আর্থিক বছরের। তিন বছরে প্রায় ১২ কোটি লোক এর সুবিধা পেয়েছেন। ঋণ মঞ্জুর হয়েছে ৫ লক্ষ কোটি টাকার বেশি। কেন্দ্রের মন্ত্রী জয়ন্ত সিন্হাকে দিয়েও নিবন্ধ লিখিয়ে সব মন্ত্রীরা তা প্রচার করছেন। তাতে দাবি করা হচ্ছে, কাজের সুযোগ বাড়ছে। মনমোহন জমানার ‘কাজহীন বৃদ্ধি’র পরিস্থিতি এখন নেই।
মন্ত্রীর মতে, অটো-তথ্যপ্রযুক্তি-খুচরো-বস্ত্রেই তিন বছরে দেড় কোটি কাজ হয়েছে। পর্যটনে প্রতি বছর কাজ হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ লক্ষের। সংগঠিত বেসরকারি ক্ষেত্রে প্রতি বছর ১০ থেকে ১৬ শতাংশ কাজ বাড়ছে। আর পরিকাঠামো ক্ষেত্রও যে রকম দ্রুত বাড়ছে, তাতেও রোজগার বৃদ্ধি অবধারিত। সেপ্টেম্বরে ‘আসল ছবি’ এলেই স্পষ্ট হবে।