ফাইল চিত্র।
কৈরানাতে বিরোধী জোটকে হারাতে বাগপতে প্রচারে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও কৈরানাতে গিয়েছিলেন বেশ কয়েক বার! বিজেপির আশা ছিল, বিরোধী শিবির একজোট হলেও এ বার পাশা উল্টে দেবেন প্রধানমন্ত্রী!
কিন্তু ভোটের ফল বেরোনোর পরে আজ বিজেপির অন্দরেই প্রশ্ন উঠেছে, মোদী জাদু কি আর কাজ করছে না? জাতের সমীকরণ যদি কাছাকাছি আসে, বিরোধী দলগুলি যদি এককাট্টা হয়— তবে কি মোদী আর অপরাজেয় থাকবেন না? উত্তরপ্রদেশে এই ভোটের আগেই বিজেপি শীর্ষ নেতারা বুঝছিলেন, রাজ্যের জমি তাঁদের হাতছাড়া হয়ে গিয়েছে। এই মুহূর্তে মুখ্যমন্ত্রী বদল করাও সম্ভব নয়। আর কোনও ভাবে পরিস্থিতি সামলানো যাচ্ছে না। এই অসহায় অবস্থার মধ্যে মোদী-জাদুর উপরে ভরসা রাখছিলেন তাঁরা। ভাবছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তি সামলে দেবে বিরোধীদের সম্মিলিত আক্রমণ। কিন্তু সেই দাওয়াই কাজ না করায় এখন বিজেপির ঘরের ভিতরেই উঠছে প্রশ্ন। দলের নেতারা বুঝছেন, গোটা দেশে উপনির্বাচনে বিপর্যয়ের পিছনে শুধু মোদী বিরোধিতাই মিশে নেই। রয়েছে দলিত অসন্তোষ ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তাহীনতাও|
আর একেই মূলধন করছেন রাহুল গাঁধী। উপনির্বাচনের সাফল্যকে সামনে রেখে ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে তাঁর নেতৃত্বে একটি জাতীয় মঞ্চ গড়ে তুলছেন তিনি। কংগ্রেস সূত্র বলছে, রাহুল ২০১৯-এর আগে নতুন কোনও জোট গড়ার কথা বলছেন না। কাউকে ইউপিএতে আসার জন্যও চাপ সৃষ্টি করছেন না। সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজ পার্টি, জেএমএম, এনসিপি-র মতো দলগুলি ইউপিএ-র পুরনো শরিক। বিজেপি বিরোধিতায় এখন সরব চন্দ্রবাবু নায়ডু, চন্দ্রশেখর রাও। সবাইকে পাশে রাখার চেষ্টা চলছে।
এর পর ভোট আসছে রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়ে। ডিসেম্বর নাগাদ ভোট হওয়ার কথা ওই রাজ্যগুলিতে। এই রাজ্যগুলিতে শাসক দল বিজেপির সঙ্গে মূল লড়াই কংগ্রেসের। কিন্তু রাহুল চান, এখানে অন্য আঞ্চলিক দলগুলি প্রার্থী না দিলেও মোদী-বিরোধী প্রচারে কংগ্রেসের পাশে থাকুক। একই ভাবে মোদী-বিরোধী লড়াইয়ে অন্য দলগুলির পাশে থেকে প্রচারে যেতে চান রাহুল।
ইলাহাবাদের ভোটে রাজীব গাঁধীর কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বিশ্বনাথপ্রতাপ সিংহ যখন লড়েছিলেন, তখন দেবীলাল থেকে বিজেপি— সবাই কংগ্রেস-বিরোধী প্রচারে সঙ্গ দিয়েছিলেন। আজ সেই রাজীব-বিরোধিতার বদলে এসেছে মোদী-বিরোধিতা। এই পরিস্থিতিতে কৈরানায় বিরোধী জোটের সাফল্যকে হাতিয়ার করে মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, রাজস্থানের ভোটের লড়াইয়ে নামতে চান রাহুল। তবে তাঁর মূল লক্ষ্য, ২০১৯-এর ফাইনাল ম্যাচ।