আমি মোদী আর আপনি মোরি, জাপানে ঠাট্টায় মাতলেন প্রধানমন্ত্রী

টোকিওয় আনুষ্ঠানিক শীর্ষ বৈঠক শুরু হওয়ার আগে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে কিয়োটোয় সারা দিনটা একটু আলাদা ভাবেই কাটালেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জাপান সফরের দ্বিতীয় দিনে তিনি গেলেন এই শহরের দু’টি ঐতিহ্যবাহী মন্দিরে এবং কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয়ে। কখনও হাল্কা ঠাট্টা আর কখনও হাতজোড় করে প্রার্থনার পাশাপাশি মিশে গেলেন সাধারণ মানুষ আর পর্যটকদের সঙ্গেও।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

কিয়োটো শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:২১
Share:

কান টানলে...। খুদের সঙ্গে হাল্কা মেজাজে নরেন্দ্র মোদী। রবিবার কিয়োটোয়। ছবি: পিটিআই

টোকিওয় আনুষ্ঠানিক শীর্ষ বৈঠক শুরু হওয়ার আগে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে কিয়োটোয় সারা দিনটা একটু আলাদা ভাবেই কাটালেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

Advertisement

জাপান সফরের দ্বিতীয় দিনে তিনি গেলেন এই শহরের দু’টি ঐতিহ্যবাহী মন্দিরে এবং কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয়ে। কখনও হাল্কা ঠাট্টা আর কখনও হাতজোড় করে প্রার্থনার পাশাপাশি মিশে গেলেন সাধারণ মানুষ আর পর্যটকদের সঙ্গেও। সব মিলিয়ে সাদা কুর্তা-পাজামা আর হাতকাটা জ্যাকেটে একেবারে অন্য মেজাজের মোদীকে দেখল জাপান। যে মোদী হঠাৎ পথচলতি শিশুর কান টেনে ধরলেন হাসতে হাসতে। দারুণ সুযোগ করে দিলেন চিত্রশিল্পীদের। জাপানিদের সঙ্গে হাসিমুখে পোজ দিলেন। আর গুরুগম্ভীর পরিবেশে প্রার্থনার পাশাপাশি ঠাট্টায় মাতলেন মন্দিরের প্রধান পুরোহিতের সঙ্গেও।

আজ কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে নোবেলজয়ী চিকিৎসা-বিজ্ঞানী ইয়ামানাকার সঙ্গে দেখা করেন মোদী। আদিবাসীদের মধ্যে সিক্ল সেল অ্যানিমিয়ার বাড়বাড়ন্ত কী ভাবে ঠেকানো যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয় দু’জনের। বৈঠকের পরে তিনি জানান, স্টেম সেল গবেষণা নিয়েও কথা হয়েছে। এ বিষয়ে জাপানের সাহায্য চেয়েছেন তিনি।

Advertisement

এর পরে কিয়োটোর প্রাচীন দুই বুদ্ধ মন্দির, টোজি এবং কিঙ্কাকুজিতে গিয়ে আজ প্রার্থনা করেন মোদী। প্রথমে যান টোজিতে। সেখানে কাটানো আধ ঘণ্টা সময়ের মধ্যে খুঁটিয়ে জেনে নেন, অষ্টম শতাব্দীর বৌদ্ধিক ওই প্যাগোডার ইতিহাস। এ সময়ের পুরোটাই তাঁর পাশে ছিলেন আবে। তিনিই তাঁকে সব জানাচ্ছিলেন। তখনই ওই মন্দিরের বুদ্ধমূর্তির সঙ্গে লাগানো একটি পদ্মের ভাস্কর্য দেখে উৎসাহিত হয়ে মোদী আবেকে মাঝপথেই থামিয়ে দেন। বলেন, “এই পদ্মের তাৎপর্য আমি জানি। এটা আমার দলের প্রতীক!” কথা শেষ হতেই হেসে ওঠেন আবে-মোদী। তাঁদের মন্দির ঘুরিয়ে দেখান সেখানকার প্রধান পুরোহিত ইয়াসু নাগামোরি। যিনি মোরি নামে বেশি পরিচিত। পরিচয়পত্রে তাঁর নাম দেখে মোদী হেসে বলে ওঠেন, “আমি মোদী, আর আপনি মোরি!”

মন্দির চত্বর থেকে বেরোনোর আগে মোদী ধন্যবাদ জানান আবেকে। আবে তাঁকে জানান, জাপানের বাসিন্দা হয়েও তিনি ওই মন্দিরে এই নিয়ে মাত্র দু’বার এলেন। তবে জাপানের প্রধানমন্ত্রী যে শুধু মোদীকে সঙ্গ দিতেই টোকিও ছেড়ে কিয়োটোতেও এসেছেন, তা স্পষ্ট। কারণ আবেকে এ ভাবে দেশের রাজধানীর বাইরে এসে কোনও বিদেশি নেতাকে অভ্যর্থনা জানাতে দেখা যায় না বলে দাবি সে দেশের সংবাদমাধ্যমের।

টোজির পরে নরেন্দ্র মোদী যান কিঙ্কাকুজি মন্দিরে। সেখানে প্রার্থনা সেরে ঘুরে দেখেন মন্দির সংলগ্ন হ্রদ এবং বাগান। ঘুরতে ঘুরতেই মিশে যান দর্শনার্থী আর পর্যটকদের সঙ্গে। কারও কারও সঙ্গে ছবি তোলেন। এই সময়েই হঠাৎ বছর দশেকের একটি ছেলেকে দেখে তার দু’কানে আলতো টান দিয়ে হেসে ওঠেন মোদী। ফোটোগ্রাফারদেরও বাধা দেননি সেই মুহূর্তের ছবি তুলতে।

হাল্কা মেজাজে সারা দিন পার করে সন্ধ্যায় দুই প্রধানমন্ত্রী উড়ে যান টোকিওর উদ্দেশে। কাল সেখানে ভারত-জাপান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নতুন অধ্যায় শুরু হবে বলে আশা করছেন দু’জনই। প্রতিরক্ষা এবং পরিকাঠামোগত ক্ষেত্র ছাড়াও ব্যবসা এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানো হবে। সেই সূত্রে যুগ্ম ভাবে রেয়ার আর্থ (স্মার্টফোন তৈরিতে কাজে লাগে এমন একটি ধাতু) তৈরির জন্য একটি চুক্তি সম্পাদিত হবে বলে জানিয়েছে দুই দেশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement