রাহুল গাঁধীর সঙ্গে গিয়ে সিপিএম লড়াই করছে কী ভাবে, সেই প্রশ্ন তুললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
নোট বাতিল নিয়ে মোদীর বিরুদ্ধে বিরোধী জোট অক্ষুণ্ণ রাখতে সংসদে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, ডেরেক ও’ব্রায়েনের সঙ্গে হাত মেলাতে হয়েছিল সীতারাম ইয়েচুরিকে। কিন্তু তার ধাক্কায় পশ্চিমবঙ্গে অস্বস্তিতে পড়ছিলেন সূর্যকান্ত মিশ্র, সুজন চক্রবর্তীরা। প্রশ্ন উঠছিল, কেন তৃণমূলের লেজুড়বৃত্তি করছে সিপিএম। এই টানাপড়েনের জেরে, আজ রাহুল গাঁধীর সঙ্গে রাষ্ট্রপতির কাছে দরবার করতে যায়নি সিপিএম।
তবুও মোদীর আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছে তাদের। শুক্রবার বিজেপির সংসদীয় দলের বৈঠকে মোদী বলেন, ‘‘কমিউনিস্টরা পশ্চিমবঙ্গের ভোটের সময় কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা করছে দেখে মনে হয়েছিল, তারা বোধহয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উৎখাত করতে এককাট্টা হয়েছে। কিন্তু এখন কমিউনিস্টদের দেখে মনে হচ্ছে, বাংলায় মমতাকে ঠেকানোর থেকেও তারা নিজেদের মতাদর্শের সঙ্গে আপস করেছে।’’
নোট বাতিল করে কালো টাকার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সিপিএমের উল্টো অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলে মোদী বলেন, ১৯৭১-এ ওয়াংচু কমিটি যখন নোট বাতিলের সুপারিশ করেছিল, তাতে সমর্থন করেছিলেন বামেরা। ১৯৭২-এর ৪ সেপ্টেম্বর সংসদে দাঁড়িয়ে জ্যোতির্ময় বসু বলেছিলেন, এই সুপারিশ কার্যকর করা হোক। ইন্দিরা গাঁধীর সরকার কালো টাকার উপরে দাঁড়িয়ে রয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন বামেরা। মোদী বলেন, হরকিষেণ সিংহ সুরজিৎও ১৯৮১-র ২৭ অগস্ট রাজ্যসভায় ১০০ টাকার নোট বাতিল করার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। বিজেপির বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর এই আক্রমণের উদ্দেশ্য স্পষ্ট। তিনি বিরোধীদের জোট ভাঙতে চাইছেন। এ দিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নায়ডুর নিশানাতেও ছিল সিপিএম ও তৃণমূল। তাঁর মন্তব্য, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসের ছাতার তলায় কী ভাবে তৃণমূল ও সিপিএম একসঙ্গে আসে, আমরা দেখতে চাই।’’
তবে তৃণমূলের সঙ্গে পথ চলা নিয়ে দলের ভিতরের অস্বস্তি প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়েছেন ইয়েচুরি। রাষ্ট্রপতির কাছে না যাওয়া নিয়ে বরং যুক্তি দিয়েছেন, ‘‘রাষ্ট্রপতির কাছে যাওয়ার পক্ষে নই। ১৬টি বিরোধী দলের জোট অক্ষুণ্ণ রাখতেই আমরা সেই ভাবে এর বিরোধিতা করিনি। আমরা রাষ্ট্রপতির বদলে মানুষের কাছে যেতে চাই।’’ ইয়েচুরির যুক্তি, সপা, বিএসপি, এনসিপি-ও আজ রাষ্ট্রপতির কাছে দরবার করতে যায়নি। এই দলগুলির ক্ষোভের কারণ, সকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের চাষিদের সমস্যা নিয়ে রাহুল-সহ কংগ্রেস নেতাদের বৈঠক। সপা-বিএসপি চায়নি, উত্তরপ্রদেশের সমস্যাতেও রাহুল নিজের হাতে রাশ নিন।