নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র
প্রধানমন্ত্রিত্বের দ্বিতীয় দফার প্রথম বর্ষপূর্তিতে চিঠির পরে এ বার ‘মন কি বাত’-এর রেডিয়ো বার্তা। পরিযায়ী শ্রমিক, কাজ হারানো কর্মী আর গরিবরাই যে করোনায় সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত, তা ফের বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বললেন, এঁদের কষ্ট ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব। সেই সঙ্গেই তাঁর দাবি, এঁদের এই কষ্ট ভাগ করে নিতে গোটা দেশ এগিয়ে এসেছে। প্রধানমন্ত্রীর কথা শুনে বিরোধী থেকে ট্রেড ইউনিয়ন— বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন, যাঁদের জন্য খোদ প্রধানমন্ত্রী এমন কাতর, সেই শ্রমিকদের অ্যাকাউন্টে কেন এখনও পর্যন্ত এক নয়া পয়সাও দেওয়ার কথা বলেনি তাঁর সরকার?
মোদীর বক্তব্য, পশ্চিম ও দক্ষিণের তুলনায় পূর্ব ভারত আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকার জন্যই পরিযায়ী শ্রমিকের এমন বিপুল স্রোত। এই অসাম্য ঘোচাতে তাঁর সরকার পূর্বের আর্থিক উন্নয়নকে পাখির চোখ করেছে।
কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বলের কটাক্ষ, “দেশে পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা কত, তা-ই তো ঠিক করে জানে না সরকার!” তাঁর প্রশ্ন, তথ্যই যদি না-থাকে, তা হলে সরকার কী ভাবে সমস্যা মেটাবে?
আরও পড়ুন: করোনায় আক্রান্ত আরও ৮০০০, সতর্ক করলেন মোদীও
তাহাদের কথা: খাবারের দাবিতে বিক্ষোভ ভিন্ রাজ্যের শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের। রবিবার অমৃতসরে। ছবি: এএফপি।
শ্রমিক সংগঠনগুলির ক্ষোভ, অপরিকল্পিত লকডাউনের জেরে পরিযায়ী শ্রমিকদের কষ্ট-যন্ত্রণা, মৃত্যুর ছবি দেখে শিউরে উঠেছে সারা দেশ। লকডাউন শুরুর বহু দিন পরে তাঁদের বাড়ি ফেরানোর কাজ শুরু হলেও তাতে রেলের চূড়ান্ত অব্যবস্থা কারও নজর এড়ায়নি। অথচ মোদী এ দিন দাবি করলেন, লক্ষ লক্ষ শ্রমিককে খাবার-জল দিয়ে মসৃণ ভাবে বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছে রেল! শ্রমিক নেতাদের বক্তব্য, এঁদের জন্য ভবিষ্যতে কী করা হবে, সেই সব পরিকল্পনা ছেড়ে আগে এঁদের দ্রুত এবং নিরাপদে বাড়ি পৌঁছে দিক সরকার। কাজ হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়া এই শ্রমিকেরা এখন সংসার চালাবেন কী ভাবে, তার জবাব কোথায় মোদীর বক্তব্যে?
আরও পড়ুন: কড়া লকডাউনেও কেন বাড়ছে করোনা-সংক্রমণ? প্রশ্নের মুখে অস্বস্তিতে কেন্দ্র
এই বিপদে মানুষ কী ভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, তার উদাহরণও দিয়েছেন মোদী। মাদুরাইয়ের ক্ষৌরকারের মেয়ের বিয়ের জন্য জমানো টাকা খরচ করা বা পঞ্জাবের বিশেষ ভাবে সক্ষম ভিক্ষুকের একশো পরিবারকে রেশন জোগানোর দায়িত্ব নেওয়া— দিয়েছেন বহু উদাহরণ। যা শুনে বিরোধীরা বলছেন, আমজনতা হাত উপুড় করে সাহায্য করলেও প্রধানমন্ত্রীর সরকার নিজেদের ভাঁড়ার থেকে টাকা দেওয়ার বেলায় এত কৃপণ কেন?
এর মধ্যেই আন্তর্জাতিক যোগ দিবসে অংশ নিতে বলেছেন মোদী। প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পাঠাতে বলেছেন ৩ মিনিটের ভিডিয়ো। শিখিয়েছেন করোনা নিয়ে নির্দিষ্ট কিছু যোগ ব্যায়াম, শুনিয়েছেন রোগ প্রতিরোধে আয়ুর্বেদের কথা।