প্রতীকী চিত্র
জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপের পরে সেখানে ব্যবসার অনেক সুযোগের কথা তুলে ধরে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু তার পরে নিরাপত্তার ঘেরাটোপে ছিল উপত্যকা। পরে থাবা বসিয়েছে অতিমারি। ফলে কার্যত নাভিশ্বাস উঠেছে জম্মু-কাশ্মীরের শিল্পের। কিছুটা স্বস্তি দিতে আজ শিল্পের জন্য ১৩৫০ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করলেন উপরাজ্যপাল মনোজ সিন্হা।আজ উপরাজ্যপাল বলেন, ‘‘আত্মনির্ভর অভিযানের অধীনে পাওয়া সুযোগ সুবিধের পাশাপাশি বাড়তি সুবিধে দিতেই এই প্যাকেজ।’’ প্যাকেজে দুটি বিষয়কে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি। প্রথমত, চলতি আর্থিক বছরে কোনও শর্ত ছাড়াই ছ’মাস শিল্পক্ষেত্রের সব ঋণগ্রহীতাকে সুদে ৫ শতাংশ ছাড় দেওয়া হবে। মনোজের মতে, ‘‘এতে অনেকটা স্বস্তি পাবেন উদ্যোগপতিরা। সেইসঙ্গে কর্মসংস্থানও বাড়বে।’’ দ্বিতীয়ত, শিল্প ক্ষেত্রে জল ও বিদ্যুতের বিলে এক বছরের জন্য ৫০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হবে। তাতে কৃষক, ব্যবসায়ী, সাধারণ বাসিন্দা, সকলেই উপকৃত হবেন। পরিবহণ ব্যবসায়ী, হাউসবোট মালিক ও শিকারা মালিকদের জন্য আলাদা প্যাকেজের কথা ভাবা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মনোজ। ২০২১ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত সব ঋণগ্রহীতার স্ট্যাম্প ডিউটিতে ছাড়় দেওয়া হয়েছে।
গত মাসে জম্মু-কাশ্মীরের শিল্প নিয়ে একটি কমিটি গঠন করেছিলেন উপরাজ্যপাল। কমিটির সদস্যদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট সময়সীমার আগেই ওই কমিটি রিপোর্ট দিয়েছে। কিছু দিনের মধ্যেই নয়া শিল্প নীতি ঘোষণা করবে সরকার।’’কাশ্মীরি ব্যবসায়ী সংগঠনগুলির মতে, পাঁচ মাসের লকডাউনে উপত্যকার অর্থনীতির প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। গত এক বছরে ক্ষতির পরিমাণ ৪৫ হাজার কোটি টাকা। উপরাজ্যপালের কথায়, ‘‘১৮ অগস্ট আমি উপত্যকার বিভিন্ন শিল্প ক্ষেত্রের ৩৫টি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দেখা করি। তার পরেই আমার পরামর্শদাতা কে কে শর্মার অধীনে কমিটি তৈরি করা হয়।’’আর্থিক প্যাকেজকে স্বাগত জানিয়েছে উপত্যকার একাধিক ব্যবসায়ী সংগঠন। পিএইচডি চেম্বার অব কমার্সের চেয়ারপার্সন মুস্তাক ছায়ার মতে, ‘‘আমাদের কথা মন দিয়ে শুনেছিলেন উপরাজ্যপাল। তাঁকে ধন্যবাদ।’’ কাশ্মীর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি শেখ আশিক বলেন, ‘‘১৪ মাস ধরে যে পরিস্থিতি চলছে তার কথা সকলেই জানেন। উপরাজ্যপাল বলছেন এই প্যাকেজ সবে শুরু। শিল্পের জন্য আরও পদক্ষেপ করা হবে। উপদেষ্টা কে কে শর্মা ও অর্থ কমিশনার অরুণকুমার মেহতা এই প্যাকেজ তৈরির কাজ করেছেন। তাঁদেরও ধন্যবাদ।’’ শিল্প ক্ষেত্রে নতুন প্রজন্মের দিকেও নজর দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপরাজ্যপাল। তাঁর বক্তব্য, ‘‘জম্মু-কাশ্মীর ব্যাঙ্কের প্রত্যেক শাখায় মহিলা ও তরুণ উদ্যোগপতিদের জন্য আলাদা ডেস্ক থাকবে।’’