বিরোধীদের রসদ বন্ধে সক্রিয় মোদী

উত্তরপ্রদেশে ভোটের মুখে নোট বাতিলের সিদ্ধান্তে থাবা বসেছিল সপা-বসপা-র ভাঁড়ারে। এ বার বাকি বিরোধীদেরও রসদ বন্ধের তোড়জোড় শুরু করল নরেন্দ্র মোদী সরকার।

Advertisement

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:৩৮
Share:

উত্তরপ্রদেশে ভোটের মুখে নোট বাতিলের সিদ্ধান্তে থাবা বসেছিল সপা-বসপা-র ভাঁড়ারে। এ বার বাকি বিরোধীদেরও রসদ বন্ধের তোড়জোড় শুরু করল নরেন্দ্র মোদী সরকার।

Advertisement

দল চালানো ও ভোটে লড়ার জন্য সব দলই বিভিন্ন মহল থেকে আর্থিক সাহায্য নেয়। মাস দুয়েক আগে এক ঘরোয়া আড্ডায় কেন্দ্রের এক শীর্ষ মন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘কংগ্রেস যেখান থেকে মোটা টাকা পায়, সেই পথ এ বার বন্ধ হবে।’’ সেই আঁচ এখন টের পাচ্ছে কংগ্রেস। এতটাই যে, মোদী-রাজ্য গুজরাতে বিধানসভা ভোটের আগে কংগ্রেসের নেতা শক্তিসিন গাহিল বলছেন, ‘‘আমাদের মূল লড়াই টাকার সঙ্গে। বিজেপির টাকা আছে, কংগ্রেসের নেই।’’ রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা গুলাম নবি আজাদ বলছেন, ‘‘বিজেপি আর্থিক ভাবেও বিরোধীদের খতম করতে চাইছে।’’

ঠিক এই অভিযোগই নোট বাতিলের পরে করেছিলেন মায়াবতী, মুলায়মরা। ভোট-প্রচারের সময় মোদী সভায় সভায় বলতেন, ‘‘সব বিষয়ে একে অপরের বিরোধ করলেও নোট বাতিলে কেন মায়াবতী-মুলায়মের এক রা?’’ ওই সময়েই ইডি বসপা-র ১০৪ কোটি টাকা নগদ বাজেয়াপ্ত করে, যার মধ্যে মায়াবতীর ভাইয়ের টাকাও ছিল। যা নিয়ে বিজেপি বলা শুরু করে, এই কারণেই বিরোধীদের এত আপত্তি! কিছু দিন আগে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেছিলেন, তৃণমূলকে চাঁদা দেওয়া বন্ধ করতে বলে অনেক ব্যবসায়ীকেই হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিজেপি।

Advertisement

মোদী সরকার কী ভাবে বিরোধীদের আর্থিক ভাবে চাপে ফেলতে চাইছে?

সরকারি সূত্রের মতে, কংগ্রেসের সবথেকে বেশি টাকা আসে তাদের হাতে থাকা একমাত্র ‘সমৃদ্ধ’ রাজ্য কর্নাটক থেকে। সেখানেই সবচেয়ে বেশি ধরপাকড় চলছে। কর্নাটকের কংগ্রেস বিধায়ক নাগরাজের বহু টাকা, ১০ কেজি সোনা আটক করা হয়েছে। গোবিন্দরাজু নামে এক নেতার ডায়েরি আটক করা হয়েছে। যাতে ‘এসজি’, ‘আরজি’ লেখা। যা দেখে ইয়েদুরাপ্পার মতো বিজেপি নেতারা বলছেন, ওগুলো সনিয়া গাঁধী, রাহুল গাঁধীর আদ্যক্ষর। ওঁরা টাকা পেতেন। রাহুল ক’দিন আগেও সহারা-বিড়লার ডায়েরি নিয়ে সরব হতেন। কিন্তু এখন তিনি চুপ বলে দাবি বিজেপি।

কংগ্রেসের এক নেতার বক্তব্য, বেছে বেছে কংগ্রেসের ঘনিষ্ঠদের ধরা হচ্ছে। রবার্ট বঢরার সহযোগী থেকে প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর ভারতনাট্যম শিক্ষিকা লীলা স্যামসন— সিবিআই নজরে। তামিলনাড়ুতে বিজেপি শশীকলা-বিরোধী পনীরসেলভমের পাশে। তাই মুখ্যমন্ত্রী পলানীস্বামীর মন্ত্রীদের পিছনে তৎপর ইডি, আয়কর। এ ভাবেই সর্বত্র বিরোধীদের তহবিলে থাবা মারছে কেন্দ্র।

রাজনৈতিক দলকে চাঁদা দেওয়ার গোপনীয়তা বজায় রাখতে মোদী সরকার বন্ড আনছে। কিন্তু সেই সূত্রেই কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক জেনে যাবে, কোন শিল্পপতি কাকে কত চাঁদা দিচ্ছেন। বিরোধী নেতারা বলছেন, ওটা জানার পরেই বিরোধী খাতে চাঁদার পথও বন্ধ করবে মোদী সরকার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement