Govt sells scrap

মোদীর ব্যবসাবুদ্ধি! কেন্দ্রের ফেলনা জিনিস বিক্রি করে আয় হল বহু কোটি টাকা, পাঠানো যাবে দু’টি চন্দ্রযান

বছরের পর বছর সরকারের ঘরে ফাইল জমে। সেই ফাইলের জঞ্জাল হটানোর চাপ এসেছিল খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর থেকে। তার পরেই সারা দেশের সরকারি দফতরগুলি থেকে পুরনো জঞ্জাল সরানোর উদ্যোগ শুরু।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৪:৪৩
Share:

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। — ফাইল চিত্র।

চন্দ্রযান-৩-কে সফল ভাবে চাঁদে পাঠাতে ভারতের খরচ হয়েছিল ৬০০ কোটি টাকা। এ রকম দু’টি চন্দ্রযান পাঠানোর খরচ কেন্দ্র অনায়াসে তুলে ফেলতে পারে শুধু পুরনো ফাইল, অফিসের জিনিসপত্র, গাড়ি বিক্রি করে। এমনটাই বলছে সরকারি পরিসংখ্যান। সেখানে দেখা গিয়েছে, ২০২১ সালে অক্টোবর থেকে সরকারি দফতরের পুরনো জিনিসপত্র বিক্রি করে প্রায় ১২০০ কোটি টাকা এসেছে কেন্দ্রের ঘরে। প্রধানমন্ত্রীর তরফেই নেওয়া হয়েছিল উদ্যোগ।

Advertisement

বছরের পর বছর সরকারের ঘরে ফাইল জমে। এটাই দস্তুর। এ বার সেই ফাইল, পুরনো জিনিসের জঞ্জাল হটানোর চাপ এসেছিল খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর থেকে। তার পরেই সারা দেশের সরকারি দফতরগুলি থেকে পুরনো জঞ্জাল সরানোর উদ্যোগ নেয় প্রশাসনিক সংস্কার এবং জন অভিযোগ দফতর (ডিএআরপিজি)।

সরকারি রিপোর্ট বলছে, ২০২১ সালের অক্টোবর থেকে পুরনো জিনিসপত্র বিক্রি করে কেন্দ্র ১,১৬৩ কোটি টাকা রোজগার করেছে। তার মধ্যে চলতি বছর অক্টোবরে এক মাসব্যাপী প্রচার চালিয়ে ৫৫৭ কোটি টাকার পুরনো জিনিস বিক্রি করেছে কেন্দ্র। পুরনো ফাইল বিক্রি করে শুধু টাকা রোজগার নয়, সরকারি দফতরগুলিতে বহু জায়গা খালি করা গিয়েছে। কেন্দ্রেরই পরিসংখ্যান বলছে, ২০২১ সালের অক্টোবর থেকে সারা দেশের বিভিন্ন সরকারি দফতর থেকে ৯৬ লক্ষ ফাইল ফেলে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে ৩৫৫ লক্ষ বর্গফুট জায়গা খালি হয়েছে। সেই জায়গা এখন অন্য কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।

Advertisement

এই পুরনো জিনিস বিক্রি করে যা টাকা মিলেছে, তাতে অনায়াসে দু’বার চাঁদে সফল অভিযান সম্ভব। মহাকাশ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ বছরের শুরুতে বলেছিলেন, ‘‘রাশিয়ার চন্দ্র অভিযান, যা ব্যর্থ হয়েছিল, তাতে খরচ হয়েছিল ১৬ হাজার কোটি টাকা। আমাদের চন্দ্রযান-৩-এর খরচ পড়েছিল ৬০০ কোটি টাকা। চাঁদ বা মহাকাশে অভিযান নিয়ে হলিউডে যে সব ছবি তৈরি হয়, সেগুলিতে খরচ পড়ে ৬০০ কোটি টাকা।’’

এ বছর পুরনো ফাইল, জিনিসপত্র বিক্রি করে ৫৫৬ কোটি টাকা আয় করেছে কেন্দ্র। তার মধ্যে শুধু রেল মন্ত্রকই আয় করেছে ২২৫ কোটি টাকা। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক আয় করেছে ১৬৮ কোটি টাকা। পেট্রোলিয়াম এবং প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রক আয় করেছে ৫৬ কোটি টাকা, কয়লা মন্ত্রক আয় করেছে ৩৪ কোটি টাকা। চলতি বছর এই পুরনো ফাইল, জিনিসপত্র বিক্রি করার ফলে সারা দেশে সরকারি দফতরে ১৬৪ লক্ষ বর্গফুট জায়গা খালি করা হয়েছে। তার মধ্যে সব থেকে বেশি খালি হয়েছে কয়লা মন্ত্রকের দফতরে। সেখানে ৬৬ লক্ষ বর্গফুট জায়গা খালি করা হয়েছে। ভারী শিল্প মন্ত্রকের দফতরগুলিতে খালি হয়েছে ২১ লক্ষ বর্গফুট জায়গা। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দফতরগুলিতে খালি হয়েছে ১৯ লক্ষ টাকা।

চলতি বছর কেন্দ্রীয় সরকারি দফতরের ২৪ লক্ষ পুরনো ফাইল বিক্রি করা হয়েছে। সব থেকে বেশি পুরনো ফাইল বিক্রি করেছে বিদেশ মন্ত্রক। সংখ্যাটা হল ৩ লক্ষ ৯০ হাজার। তার পরেই রয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের একটি বিভাগ। তারা বিক্রি করেছে ৩ লক্ষ ১৫ হাজার ফাইল। ডিএআরপিজির সচিব ভি শ্রীনিবাস জানিয়েছে, সরকারি দফতরগুলিকে পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য ‘স্বচ্ছতা’র অভিযান শুরু হয়েছে। এক মাস ধরে দেশের ২ লক্ষ ৫৮ হাজার ৬৭৩টি দফতরে প্রচার চালানো হয়েছে। তার জেরেই সে সব দফতরে খালি করা হয়েছে ১৬৪ লক্ষ বর্গফুট এলাকায়। সরকার আয় করেছে কোটি কোটি টাকা। এ বার এই ‘স্বচ্ছতা অভিযান’ সরকারি দফতরগুলিতে নিয়মমাফিক চালু করা শুরু হচ্ছে। প্রতি সপ্তাহে তিন ঘণ্টা এ জন্য বরাদ্দ রাখতে হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement