পিএনবি কেলেঙ্কারিতে মূল অভিযুক্ত পলাতক হিরে ব্যবসায়ী নীরব মোদীকে গ্রেফতার করার জন্য ভারতের থেকে তথ্য চেয়েছিল ব্রিটেন। আর এ জন্য বারবার চিঠি লেখার পরেও কোনও জবাব দেয়নি নরেন্দ্র মোদী সরকার। উট পাখির চামড়ার জ্যাকেট গায়ে চড়িয়ে লন্ডনের রাস্তায় যখন ঘুরে বেড়াতে যাচ্ছে নীরবকে, তখন একটি সংবাদ চ্যানেলের এই দাবি ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে।
লন্ডনের সিরিয়াস ফ্রড অফিসের সূত্রের মাধ্যমে চ্যানেলটি জেনেছে, ২০১৮-র ফেব্রুয়ারিতে প্রথম বার নীরব সম্পর্কে ব্রিটেনকে সতর্ক করেছিল ভারত। ১৩ হাজার কোটি টাকার পিএনবি কেলেঙ্কারি নিয়ে সিবিআই নীরব ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়ার পরেই দ’দেশের মধ্যে ‘পারস্পরিক আইনি সহায়তা চুক্তি’ অনুযায়ী এই পদক্ষেপ করা হয়েছিল। মার্চে সিরিয়াস ফ্রড অফিস ভারতকে জানায়, নীরব ব্রিটেনে রয়েছেন। সেই সময়ে ভারতের তদন্তকারীরা মনে করছিলেন, পলাতক হিরে ব্যবসায়ী, নীরব হয়তো হংকং কিংবা ইউরোপে লুকিয়ে রয়েছেন।
সিরিয়াস ফ্রড অফিস এ ব্যাপারে ভারতকে সাহায্য করার জন্য এক জন আইনজীবী নিয়োগ করে। জালিয়াতি ও কালো টাকার লেনদেনের মামলায় বিশেষ অভিজ্ঞ ওই আইনজীবী ব্যারি স্ট্যানকম্বে ও তাঁর সহযোগীরা মনে করেছিলেন, নীরবের মামলায় ভারতকে সাহায্য করার জন্য তাঁদের আরও তথ্যপ্রমাণ চাই। এ জন্য তাঁরা তিনটি চিঠি লিখেছিলেন ভারত সরকারকে। কিন্তু কোনও জবাব মেলেনি। চ্যানেলটির দাবি, নীরবকে যাতে গ্রেফতার করা যায়, সে জন্য তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করতে ভারতেও আসতে চেয়েছিলেন ওই আইনজীবী। কিন্তু ভারত তাতে সাড়া দেয়নি।
আরও পড়ুন: চেনা মুখই কি ভরসা তৃণমূলের, মমতার বাড়িতে আজ দলের নির্বাচনী কমিটির বৈঠক
এর মধ্যেই নীরব অবশ্য নিজের আইনি সহায়তা টিম সাজিয়ে নেন। তাঁর আশঙ্কা ছিল, ভারতের অনুরোধে পদক্ষেপ করতে চলেছে ব্রিটেন। ভারতের অনীহা দেখে ডিসেম্বরে মামলা থেকে হাত গুটিয়ে নেয় সিরিয়াস ফ্রড অফিস। ওই আইনজীবী অবশ্য চ্যানেলটিকে প্রতিক্রিয়া দেননি।
নীরবকে প্রত্যপর্ণের জন্য ইতিমধ্যেই অবশ্য ব্রিটেন সরকারের কাছে আবেদন করেছে ভারত সরকার। এ ব্যাপারে আইনি দিকটি খতিয়ে দেখতে বিষয়টি ওয়েস্টমিনস্টারের ম্যাজিস্ট্রট কোর্টের সামনে পাঠানো হয়েছে। আর আজই মুম্বইয়ের বিশেষ আদালতে নীরবের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত চার্জশিট পেশ করেছে ইডি। সম্প্রতি একটি ব্রিটিশ সংবাদপত্র জানিয়েছে, লন্ডনের অক্সফোর্ড স্ট্রিটে বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ৪৮ বছর বয়সি নীরব মোদী। সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাব না দিয়ে একটি ট্যাক্সি ধরে চলে গিয়েছেন তিনি। পত্রিকাটির দাবি, লন্ডনে ৭৫ কোটি টাকা মূল্যের ফ্ল্যাটে থাকছেন ঋণখেলাপে অভিযুক্ত এই ব্যবসায়ী। যার ভাড়া মাসে ১৫ লক্ষ টাকারও বেশি।