শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।
পাকিস্তানকে এক ঘরে করে আজ বাংলাদেশ-সহ প্রতিবেশী মুসলিম দেশগুলকে বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী।
এনআরসি ও সিএএ ঘিরে প্রকাশ্য দূরত্ব তৈরি হয়েছে দিল্লি ও ঢাকার মধ্যে। নাগরিকত্ব বিলের আলোচনায় সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বার বার আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের সঙ্গে একই বন্ধনীতে বাংলাদেশ থেকে ধর্মীয় উৎপীড়নের কারণে হিন্দুদের ভারতে চলে আসার কথা বলেছেন, যা ভাল ভাবে নেয়নি হাসিনা সরকার। বাতিল হয়েছে বাংলাদেশের দুই মন্ত্রী ও নদী কমিশনের প্রতিনিধিদের সফর। ওই আইন নিয়ে মোদী সরকাররের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে মালয়েশিয়ার মতো মুসলিম দেশও। ফলে বাংলাদেশের পাশাপাশি মুসলিম দেশগুলিকে বার্তা দিতে আজ রামলীলার নির্বাচনী প্রচারের মঞ্চকেই বেছে নেন মোদী। বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এ দিনও সিএএ-এনআরসি-কে ভারতের অভ্যন্তরীণ সমস্যা বলে অভিহিত করেও বলেন, তবে প্রতিবেশী দেশগুলিতে এই অনিশ্চয়তার প্রভাব পড়বে।
সম্পর্কের অবনতি ঠেকাতে আলাদা করে বাংলাদেশের উদ্দেশে বার্তা দিতে দেখা যায় প্রধানমন্ত্রীকে। তিনি বলেন, ‘‘বহু বছর বাদে বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক এতটা ঘনিষ্ঠ হয়েছে। দেশভাগের সময় থেকে চলে আসা সমস্যা মেটাতে সক্রিয় হয়েছে দু’দেশ। সীমান্ত সমস্যা ছাড়া যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, যেমন— রেল, ব্রডব্যান্ড, জলপথে যাতায়াতের প্রশ্নে দু’দেশ এক সঙ্গে কাজ করছে।’’ পাকিস্তান প্রসঙ্গে মোদী বলেন, ‘‘২০১৪ সালে ক্ষমতায় এসেই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে ডেকেছিলাম। নতুন ভাবে বন্ধুত্বের হাত বাড়ানো হয়েছিল। আমি লাহৌরও গিয়েছিলাম। কিন্তু ধোঁকার শিকার হয়েছি।’’
মোদী সরকার মুসলিম-বিরোধী বলে বিরোধীরা যে প্রচার চালাচ্ছে তার প্রভাব যে আন্তর্জাতিক স্তরে পড়েছে তা বুঝতে পারছেন প্রধানমন্ত্রী। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘সৌদি আরব এ দেশের হজ যাত্রীদের কোটা বাড়িয়েছে। মুসলিম দেশগুলি আগের চেয়ে অনেক বেশি ভারতীয় কয়েদিকে ছাড়তে শুরু করেছে। সৌদি ছাড়াও ইরান, প্যালেস্তাইন, বাহরিন, মালদ্বীপ, জর্ডনের মতো দেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক মজুবত হয়েছে।’’
মোদীর অভিযোগ, ‘‘মুসলিম দেশগুলি মোদীকে সর্ব্বোচ্চ নাগরিক সম্মান দিচ্ছেন— এটা ভাল লাগছে না কংগ্রেসের। তাঁরা মনে করছে মুসলিম দেশগুলি মোদীকে সমর্থন করলে বিরোধীরা কী করে এ দেশের মুসলিমদের ভয় দেখাবেন। সেই কারণেই চক্রান্ত করা হচ্ছে।’’