কখনও নরেন্দ্র মোদী, কখনও আরএসএস। সার্জিক্যাল স্ট্রাইকে সেনার ভূমিকাকে লঘু করে কৃতিত্বের পাল্লা ভারী হচ্ছে অন্য দিকে। এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হতেই পরিস্থিতি সামাল দিতে নামলেন নরেন্দ্র মোদী। সেনার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন তিনি।
সীমান্তবর্তী রাজ্য হিমাচলের মান্ডিতে এক সভায় আজ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘আজকাল পুরো দেশে আমাদের সেনার বীরত্বের আলোচনা হচ্ছে। আগে ইজরায়েল (সেনার ভূমিকা) নিয়ে আলোচনা হতো। কিন্তু এখন দেশ দেখেছে ভারতের সেনা কারও থেকে কম নয়।’’ জঙ্গি নিধনে ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ নিয়ে এই নিয়ে দ্বিতীয় বার মুখ খুললেন মোদী। প্রধানমন্ত্রী সেনার বীরত্বের তারিফ করবেন— এর মধ্যেও অস্বাভাবিকতা নেই। কিন্তু অনেকেই মনে করছেন, গত কাল প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মনোহর পর্রীকর যে ভাবে সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের কৃতিত্ব আরএসএসকে দিয়েছেন, তার পর আজ মোদীকে নামতে হয়েছে সমালোচনা সামলাতে।
‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ –এর কৃতিত্ব সঙ্ঘকে দিতে গিয়ে পর্রীকর বলেছিলেন, ‘‘মহাত্মা গাঁধীর গ্রাম থেকে আসা একজন প্রধানমন্ত্রী, গোয়া থেকে আসা প্রতিরক্ষা মন্ত্রী, আর সার্জিক্যাল স্ট্রাইক— একেবারেই ভিন্ন ধরণের সমীকরণ। কিন্তু মিলটা রয়েছে গভীরে, আরএসএসের শিক্ষায়।’’ আজ মোদীর দুটি জনসভা ছিল। একটি হিমাচল, অন্যটি পঞ্জাবে। কিন্তু এই ক্ষত মেরামত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী বেছে নিলেন পাহাড়ি রাজ্য হিমাচলকে, যেখানে অনেক পরিবারের সদস্যরাই সেনায় যোগ দেন। সে প্রসঙ্গ টেনে এনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘হিমাচল শুধু দেবভূমি নয়, বীরভূমিও। এখানে এমন কোনও পরিবার নেই, যাদের কোনও সদস্য সীমান্তে পাহারা দিচ্ছে না। ছোট একটি রাজ্য হিমাচল, কিন্তু পরমবীর চক্রের তালিকায় শীর্ষে।’’
কংগ্রেসের মণীশ তিওয়ারি গত কালই প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন। আজ সেনাকে কৃতিত্ব দিয়ে মোদীর মন্তব্যের পরে কংগ্রেস নেতা বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী এখন যতই ক্ষত মেরামতির চেষ্টা করুন না কেন, তাতে কোনও লাভ হবে না।’’ মণীশের অভিযোগ, সেনা অভিযান নিয়ে বিজেপি পুরোদস্তুর রাজনীতি করছে। মনমোহন সিংহ সরকারের জমানাতেও সেনা অভিযান হয়েছে, কিন্তু তাকে প্রকাশ্যে আনার প্রয়োজন মনে করেনি সরকার। মোদী সরকার একে প্রকাশ্যে এনেছে নিছক রাজনৈতিক ফায়দা তোলার জন্যই। সেনার বাহাদুরিতে তাদের কোনও লেনাদেনা নেই।