সুপ্রিম কোর্টের রায়ের জেরেই গত লোকসভা ভোটের সময়ে প্রথম বার নিজের স্ত্রীর নাম নির্বাচনী হলফনামায় দিতে হয়েছিল নরেন্দ্র মোদীকে। কিন্তু স্ত্রীর নামটুকু ছাড়া আর সব তথ্যই তাঁর ‘অজানা’ বলে এড়িয়ে গিয়েছিলেন। আজ সর্বোচ্চ আদালত রায় দিয়েছে, স্ত্রী-সন্তানদের আয়ের উৎসও জানাতে হবে নেতাদের। এ হেন নির্দেশের যুক্তি, সাংসদ-বিধায়কদের সম্পত্তি বেআইনি পথে ফুলেফেঁপে উঠেছে কি না, আয়ের উৎস জানালেই তা বোঝা যাবে।
এর পরেই মোদীর পরিবারের প্রসঙ্গ তুলেছেন বিরোধীরা। গত সপ্তাহেই পথ দুর্ঘটনায় আহত হন মোদীর স্ত্রী যশোদাবেন। অথচ প্রধানমন্ত্রী তাঁর কোনও খোঁজ নেননি বলে অভিযোগ করেছেন যশোদাবেনের ভাই অশোক মোদী। প্রধানমন্ত্রী কোনও যোগাযোগ রাখেন না বলেও বিস্তর অনুযোগ তাঁদের। গত লোকসভার আগে স্ত্রীর নাম নির্বাচনী হলফনামাতেও লিখতেন না মোদী। ২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্ট তা বাধ্যতামূলক করে দেওয়ার পরে হলফনামায় যশোদাবেনের নাম লেখেন। কিন্তু তাঁর আয় কত, সম্পত্তি কত, আয়কর রিটার্ন দেন কি না, প্যান কার্ড নম্বর কত— সব ক্ষেত্রেই ‘জানা নেই’ বলে এড়িয়ে যান। সুপ্রিম কোর্টের আজকের রায়ের পর বিরোধী নেতাদের প্রশ্ন, ‘‘এ বার কী করবেন মোদী? আয়ের উৎস জানতে তো স্ত্রীর সঙ্গে অন্তত যোগাযোগ করতে হবে!’’
‘লোক প্রহরী’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ তুলেছিল যে, ভোটে প্রার্থী হওয়ার সময়ে হলফনামায় দেওয়া নেতাদের সম্পত্তি পাঁচ বছরেই কয়েক গুণ বেড়ে যাচ্ছে। সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রকে নির্দেশ দেয়, যে সব সাংসদ-বিধায়কের আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তি রয়েছে,
তাঁদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তা জানাতে হবে। কেন্দ্র জানায়, আয়কর দফতরের আতসকাচের তলায় লোকসভার ৭ জন সাংসদ ও বিভিন্ন রাজ্যের ৯৮ জন বিধায়ক রয়েছেন। তাঁদের নাম মুখ-বন্ধ খামে আদালতে জমা করা হয়।
বিচারপতি জে চেলামেশ্বরের বেঞ্চ আজ জানিয়ে দিয়েছে, এ বার থেকে হলফনামায় স্ত্রী-সন্তানদের আয়ের উৎস না জানালে নির্বাচনে লড়ার ছাড়পত্র মিলবে না। বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, প্রার্থীদের শুধু নিজের ও স্ত্রী-সন্তানের আয়-সম্পত্তির খতিয়ান জানাতে হয়। আয়ের উৎস জানাতে হয় না।