লালুর উপর চটে লাল মিসা ভারতী! মুখে কিছু না বললেও হাবেভাবে স্পষ্ট। ভবিষ্যতে আরজেডির ‘রাজ্যপাট’ দুই ছেলের হাতে যাবে, লালুপ্রসাদের ওই ঘোষণাই তাঁর বড় মেয়ের রোষের কারণ। ঘনিষ্ঠ মহলে মিসা বলেছেন, গণতন্ত্রে পরিবারতন্ত্রের জায়গা নেই।
রাজগীরে আরজেডির কর্মসমিতির বৈঠক চলাকালীন লালুর সঙ্গে এক হোটেলে ছিলেন দলের রাজ্যসভা সাংসদ মিসা। কিন্তু মঞ্চে দু’বার জলের বোতল বিনিময় ছাড়া বাবার সঙ্গে মেয়েকে কথা বলতে দেখা যায়নি। বুধবার ওই বৈঠকেই লালু ঘোষণা করেন, তাঁর পর দলের দায়িত্ব যাবে তেজস্বী, তেজপ্রতাপের হাতেই। তা নিয়েই লালুর ‘ঘরে’ মনোমালিন্য।
গত লোকসভা নির্বাচনের ফলপ্রকাশের আগে পর্যন্ত আরজেডিতে ‘অঘোষিত’ নেতৃত্ব ছিল মিসার হাতেই। পাটলিপুত্র কেন্দ্রে এক সময়ের লালু-ঘনিষ্ঠ নেতা রামকৃপাল যাদবের কাছে পরাজিত হন তিনি। তার পরই বদলে যায় সব কিছু। দলের রাশ টেনে ধরতে শুরু করেন লালু। বিধানসভার ভোটযুদ্ধে নীতীশ কুমারের সঙ্গে জোট গড়ে আরজেডির পুরনো দুর্গ রাঘোপুর ও মহুয়া থেকে জিতিয়ে নিয়ে আসেন তেজপ্রতাপ, তেজস্বীকে। মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পান দু’জনই। দলের দায়িত্বেও দুই ভাইয়ের উত্থান শুরু হয়। তবে তেজপ্রতাপের চেয়ে কয়েক কদম এগিয়ে যান তেজস্বী।
আরজেডির এক নেতা বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘মিসা, তেজপ্রতাপের চেয়ে তেজস্বীর ব্যবহার ভাল। বড়দের সম্মান করেন। রাজ্যের প্রায় সমস্ত জেলার দলীয় নেতাদের ব্যক্তিগত ভাবে চেনেন। ফোনে যোগাযোগ রাখেন। কারও সঙ্গে রূঢ় ভাবে কথা বলেন না।’’ ওই নেতার বক্তব্য, লালুপ্রসাদও ছোট ছেলে তেজস্বীকে দলের অনেকটা দায়িত্ব দিতে চান। সেই সিদ্ধান্তে সায় রয়েছে রাবড়ীদেবীরও।
আরও পড়ুন: সোপিয়ানে আক্রান্ত সেনা, সংঘর্ষে নিহত গাড়িচালক
এমন পরিস্থিতির মধ্যেই ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি-বিরোধী শিবিরকে একজোট করার কাজে এগিয়েছেন লালু। সেই অঙ্কেই বিহারে মহাজোটের বিরুদ্ধে বিবৃতি না দিতে দলের নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু নীতীশ সরকারকে আক্রমণ করা বন্ধ করেননি রঘুবংশ প্রসাদ সিংহ, রামানুজ প্রসাদ, ভাই বীরেন্দ্ররা।
ঘরে-বাইরের টানাপড়েন কী ভাবে সামলান লালু, এখন সে দিকেই নজর আরজেডি শিবিরের।