উদ্ধারের পর নাবালিকা। ছবি: টুইটার।
হেল্প লাইন নম্বরে প্রথম ফোনটা এসেছিল বুধবার দুপুরেই। এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে আটকে রাখা হয়েছে ১৪ বছরের নাবালিকাকে। দেরি করেনি পুলিশ। ছুটে গিয়েছিল গুড়গাঁওয়ে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে। কিন্তু কোথায় কী? সারা বাড়ি তন্ন তন্ন করে খুঁজেও হদিশ মেলেনি ওই নাবালিকার। ফিরে যাচ্ছিল পুলিশ। মাঝ রাস্তায় ফের একই নম্বর থেকে সাহায্য চেয়ে ফোন যায় পুলিশের কাছে। গাড়ি ঘুরিয়ে ফের ওই বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। ফের শুরু হয় তল্লাশি। বাড়ির আলমারি, ফ্রিজ খুলে দেখতে শুরু করে তারা। সন্দেহ হয় দেরাজের কাছে দুই শিশুকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে। অবশেষে সেই দেরাজ থেকেই অচৈতন্য অবস্থায় এক নাবালিকাকে উদ্ধার করে পুলিশ।
রুগ্ন, বিধ্বস্ত ওই নাবালিকার সারা শরীরে কালশিটের দাগ ছিল। দু’টো পা ফুলে গিয়েছিল। চোখের চারপাশেও ক্ষত ছিল। উদ্ধারের পরেই তড়িঘড়ি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। জ্ঞান ফিরলে সে পুলিশকে জানায়, তার বাড়ি ঝাড়খণ্ডে। সাত মাস আগে কাজের জন্য কাকার সঙ্গে সে গুড়গাঁওয়ে আসে। তার নিজের কাকাই তাকে ওই ব্যবসায়ীর হাতে তুলে দিয়েছিল। এর পর থেকেই তার উপর নির্যাতন শুরু হয়। মারধর চলতই। ছুরি দিয়েও একাধিক বার তার উপর হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ। খাবার বলতে দিনে জুটত মাত্র দু’টি রুটি।
বাড়িতে আটকে রেখে ১৪ বছরের নাবালিকার উপরে নির্যাতন চলছে। ওই খবরটা এসেছিল এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কাছেও। সংগঠনের কয়েক জন সদস্যকে সঙ্গে নিয়েই বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ পুলিশ ওই ব্যবসায়ীর বাড়িতে হানা দেয়। তবে প্রথম বার নেহাতই ব্যর্থ হয়েই ফিরতে হয় তাদের। অভিযুক্ত ওই ব্যবসায়ী এবং তাঁর স্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সম্প্রতি গুড়গাঁওয়ে সৌদি কূটনীতিকের বাড়ি থেকে নেপালি মা-মেয়েকে উদ্ধার করেছিল পুলিশ। অভিযোগ ছিল, বাড়িতে আটকে রেখে তাঁদের উপর যৌন হেনস্থা করা হত। মারধর করা হত। এমনকি ঠিক মতো খেতেও দেওয়া হত না। সেই ঘটনায় স্মৃতি এখনও টাটকা। এক মাসের মধ্যেই প্রায় একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখা গেল গুড়গাঁওয়ে। কেন তাকে আটকে রেখে নির্যাতন চালানো হত তা এখনও পরিষ্কার নয়।