প্যাডেল ভ্যান চালিয়ে জখম বাবাকে নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছেছিল বছর চোদ্দোর কিশোরী। ছবি: সংগৃহীত।
প্রায় পঞ্চাশ কিলোমিটার প্যাডেল ভ্যান চালিয়ে জখম বাবাকে নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছেছিল বছর চোদ্দোর কিশোরী। সেখানে বলা হয়, পরের সপ্তাহে অস্ত্রোপচার হবে। আপাতত বাড়ি চলে যেতে। ফিরতি পথে কিছু লোকজনের নজরে পড়ে যায় তারা। ওড়িশার ভদ্রকের সেই ঘটনা সম্প্রতি সামনে আসার পরে হইচই পড়ে গিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভদ্রকের নাদিগান গ্রামের শম্ভুনাথ শেঠি স্থানীয় বিবাদে জখম হন গত ২২ অক্টোবর। পরের দিন তাঁর মেয়ে সুজাতা বাবাকে নিয়ে ভ্যান চালিয়ে ১৪ কিলোমিটার দূরের ধামনগর হাসপাতালে গিয়েছিল প্রথমে। সেখান থেকে ভদ্রক জেলা হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলা হয়। দূরত্ব ৩৫ কিলোমিটার। ভ্যান চালিয়ে বাবাকে নিয়ে সেখানে পৌঁছয় সুজাতা।
১৪ আর ৩৫ মিলিয়ে মোট ৪৯ কিলোমিটার ভ্যান চালিয়ে প্রথমে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং সেখান থেকে জেলার সদর হাসপাতালে যাওয়ার পরে বলা হয়, অস্ত্রোপচার করতে হবে শম্ভুনাথের। সেটা হবে পরের সপ্তাহে। আপাতত ফিরে যেতে। অগত্যা একই ভাবে ফিরতি পথে রওনা হয় সুজাতা। ভদ্রকের মহতাব চকের কাছে স্থানীয় কিছু লোকজনের নজরে পড়ায় তাঁরা কথা বলে পুরো বিষয়টি জানতে পারেন। তার পরেই ক্রমশ ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়ে।
সংবাদমাধ্যমে ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসায় হইচই পড়েছে। স্থানীয় বিধায়ক এবং প্রাক্তন বিধায়ক, দু’জনেই বাড়ি গিয়ে সুজাতাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে সুজাতা জানিয়েছে, তার না রয়েছে বাবাকে অ্যাম্বুল্যান্সে নিয়ে যাওয়ার সামর্থ্য, এমনকি অ্যাম্বুল্যান্স ডাকতে যে ফোনের দরকার তা-ও নাগালের মধ্যে নেই। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শান্তনু পাত্র জানিয়েছেন, শম্ভুনাথ বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এক সপ্তাহ পরে তাঁর অস্ত্রোপচার হবে।
কিন্তু ওই দিন হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার সময়ে অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করা হল না কেন? জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকের বক্তব্য, হাসপাতালে তেমন পরিষেবা দেওয়ার জন্য কোনও অ্যাম্বুল্যান্স নেই।