শনিবার জঙ্গি হামলার পর সাঞ্জওয়ান সেনা ক্যাম্প নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে। ছবি: পিটিআই।
বছর পনেরো পরে ফের আক্রান্ত জম্মুর সুঞ্জওয়ান সেনা শিবিরে। আজ জইশের ‘আফজল গুরু স্কোয়াড’-এর জঙ্গিদের হামলায় নিহত হয়েছেন দুই সেনা। খতম হয়েছে তিন জঙ্গিও। মহিলা ও শিশু-সহ ন’জন আহত হয়েছেন। বাকি জঙ্গিদের খোঁজে এখনও অভিযান চালাচ্ছে বাহিনী। ২০০৩ সালে এই ঘাঁটিতে জঙ্গি হামলায় ১২ জন সেনা নিহত হয়েছিলেন।
জম্মু-দিল্লি জাতীয় সড়কের উপরে সেনাশহর সুঞ্জওয়ান। আজ ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ সুঞ্জওয়ানের শিবিরে হামলা চালায় এক দল জঙ্গি। শিবিরের পাশের নালা দিয়ে এসে পিছনের দিকের তার কেটে তারা ঘাঁটিতে ঢোকে বলে অনুমান সেনার। পিছনের ফটকের রক্ষীর সঙ্গে কিছু ক্ষণ গুলিবর্ষণের পরে জঙ্গিরা সেনাদের পরিবার ঘাঁটির যে অংশে থাকে সে দিকে পালায়। সংঘর্ষে প্রথমেই মদনলাল চৌধুরি ও আশরফ মির নামে দুই জওয়ান নিহত হন। দু’জনেই জম্মু-কাশ্মীরের বাসিন্দা।
ঘাঁটির ভিতরে আটকে পড়া সেনা, তাঁদের পরিবারের সদস্য এবং অন্য সাধারণ মানুষকে রক্ষা করাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে সেনা। ফলে অভিযান শেষ করতে অনেক সময় লাগবে বলে গোড়াতেই জানিয়ে দেন সেনা ও পুলিশের কর্তারা। সাবধানতা সত্ত্বেও ইতিমধ্যেই মহিলা ও শিশু-সহ ন’জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন মেজর অভিজিৎ সিংহ, ল্যান্স নায়েক বাহাদুর সিংহ, হাবিলদার আব্দুল হামিদ, পরমজিৎ কৌর, নেহা ও সোমতী জেনা। বছর কুড়ির নেহা নিহত জওয়ান মদনলাল চৌধুরির মেয়ে। প্রথমে সেনা ও জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের স্পেশ্যাল অপারেশনস গ্রুপ জঙ্গিদের ঘাঁটির এক অংশে কোণঠাসা করে ফেলে। পরে উধমপুর থেকে প্যারা কম্যান্ডোদের হেলিকপ্টারে এনে ঘাঁটিতে নামিয়ে দেওয়া হয়। জঙ্গিদের সঠিক অবস্থান জানতে বায়ুসেনার হেলিকপ্টার ও ড্রোনও ব্যবহার করছে বাহিনী।
আরও পড়ুন: বাইরে বন্ধ, ‘জঙ্গির ছেলে’ বুঁদ স্মৃতিতেই
আরও পড়ুন: কোথায় স্ত্রী, হন্যে হয়ে সাইকেলে ঘুরছেন স্বামী
সেনা জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত তিন জঙ্গি খতম হয়েছে। তাদের জিনিসপত্র তল্লাশির পরে সেনা নিশ্চিত, ওই দু’জনই জইশের সদস্য। এখনও কয়েক জন জঙ্গি ঘাঁটির ভিতরে লুকিয়ে আছে বলে ধারণা বাহিনীর। রাতে ঘাঁটির ভিতরে হালকা ধরনের ট্যাঙ্ক ঢুকতে দেখা যায়। গত কাল ছিল সংসদে হামলার ঘটনায় আফজল গুরুর ফাঁসির পঞ্চম বার্ষিকী। এই সময়ে জঙ্গিরা হামলা চালাতে পারে বলে সতর্ক করেছিলেন গোয়েন্দারা।
অভিযান চালাচ্ছে সেনা।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে সুঞ্জওয়ানের পরিস্থিতি জানান সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়ত। পরে বিদেশ সফররত প্রধানমন্ত্রীকেও পরিস্থিতির কথা জানানো হয়।