মিহির শাহের প্রেমিকাও তদন্তকারীদের নজরে বিএমডব্লিউ-কাণ্ডে। —ফাইল চিত্র
মুম্বইয়ে দম্পতির গাড়িতে ধাক্কা ও মহিলাকে পিষে মারায় ঘটনার পর প্রেমিকার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন নেতা-পুত্র মিহির শাহ। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার রাতেই অন্তত ৪০ বার প্রেমিকাকে ফোন করেছিলেন ধৃত মিহির। এর পর অটো করে গিয়েছিলেন প্রেমিকার বাড়িতে। পুলিশ সূত্রে খবর, তদন্তে বিষয়টি উঠে আসার পরেই তদন্তকারীদের একাংশ চাইছেন সেই তরুণীকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে। তাঁরা জানতে চাইছেন, ওই সময় প্রেমিকাকে ঠিক কী বলেছিলেন মিহির। তিনি মত্ত ছিলেন কি না, সেটাও বুঝতে চাইছেন তদন্তকারীরা। এর জন্য তরুণীকে আটক করা হতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে।
ঘটনার পর প্রায় ৭২ ঘণ্টা গা ঢাকা দিয়েছিলেন মিহির। মঙ্গলবার তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। মুম্বই থেকে ৬৫ কিলোমিটার দূরে বিরারে একটি অ্যাপার্টমেন্ট থেকে গ্রেফতার হন নেতা-পুত্র। তাঁকে ওরলি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। জেরা করা হয় সেখানেই। পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার রাতে জুহুর বারে বন্ধুদের সঙ্গে পার্টি করতে গিয়েছিলেন মিহির। সেই সময় মার্সিডিজ় চালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। ওই গাড়িটির রেজিস্ট্রেশন তাঁর বাবা তথা শিন্ডেসেনার সাসপেন্ড হওয়া নেতা রাজেশ শাহের নামে। শনিবার রাত ১১টা পর্যন্ত চার বন্ধুর সঙ্গে ওই পানশালায় পার্টি করেছিলেন মিহির। এর পর রাত সওয়া ১টা নাগাদ মিহির তাঁর চার বন্ধুকে বাড়ি পৌঁছে দেন। ভোর ৪টে নাগাদ মিহির তাঁদের গাড়িচালক রাজঋষি বিদাওয়াতকে মেরিন ড্রাইভে হাওয়া খেতে নিয়ে যেতে বলেন। এই সময়ে বিএমডব্লিউ নিয়ে যান তাঁরা। এর পর ৫টা নাগাদ তাঁরা ফিরছিলেন মেরিন ড্রাইভ থেকে। সেই সময়েই সাড়ে ৫টা নাগাদ মাছ বিক্রেতা-দম্পতি কাবেরী ও প্রদীপ নাকওয়ারের স্কুটারে ধাক্কা মারে মিহিরের গাড়ি। কাবেরী মারা যান। প্রদীপ আহত হন। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গিয়েছে, বিএমডব্লিউটি কাবেরীর দেহ দেড় কিলোমিটার টেনেহিঁচড়ে নিয়ে গিয়েছিল। এর পর গাড়িটি থামান মিহির। আসন বদল করেন। চালকের আসনে বসেন বিদাওয়াত। তার আগে গাড়ির নীচে আটকে থাকা দেহ টেনে বার করে রাস্তায় ফেলে দেন তাঁরা। ফুটেজে দেখা গিয়েছে, আসন বদলের পরেই গাড়ি ঘুরিয়ে ফের দেহটিকে চাপা দিয়ে গতি বাড়িয়ে পালান চালক।
পুলিশ সূত্রে খবর, এই গোটা সময় জুড়ে নিজের প্রেমিকাকে ৪০ বার ফোন করেছিলেন মিহির। এর পর কালানগরের কাছে গাড়িটি রেখে পালান তিনি। অটো করে যান গুরুগ্রামে সেই প্রেমিকার বাড়িতে। সেখানে দু’ঘণ্টা বিশ্রাম নেন মিহির। সেই সময় ওই তরুণীই মিহিরের বোনকে গোটা ঘটনা জানান। এর পর মিহির বোন গুরুগ্রামে গিয়ে মিহিরকে বরিভালিতে নিজেদের বাড়িতে নিয়ে যান। এর পরেই মুম্বই থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরে একটি রিসর্টে গিয়ে গা ঢাকা দেন মিহির, তাঁর মা, দুই বোন, এক বন্ধু। এর মধ্যেই বাবা রাজেশ ও গাড়িচালক গ্রেফতার হন। পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার রাতে বিরারের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন মিহির। পরের দিন সকালে মিহিরের সেই বন্ধু মিনিট পনেরোর জন্য মোবাইলটি খোলেন। তাতেই তাঁদের সকলের লোকেশন জানতে পারেন তদন্তকারীরা।