100 Days Work

হাত খালি, কাজ কই ১০০ দিনে!

এপ্রিল থেকে জুন, অর্থ-বছরের প্রথম তিন মাস ফুরোতেই উত্তরপ্রদেশ, বিহার, মধ্যপ্রদেশে মনরেগা তহবিলের ৯০ শতাংশের বেশি অর্থ খরচ হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২০ ০৪:৪৪
Share:

ছবি এপি।

লম্বা লাইন পড়ছে একশো দিনের কাজের দাবিতে। শহর থেকে গ্রামে ফেরা লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক কাজ চাইছেন মনরেগা-য়। কিন্তু সবাইকে কাজ জোগানো যাচ্ছে না। এ দিকে তহবিলও দ্রুত খালি হচ্ছে। এপ্রিল থেকে জুন—লকডাউনের তিন মাসেই মনরেগা-য় বরাদ্দের প্রায় ৪৩ শতাংশ অর্থ শেষ।

Advertisement

সরকারি তথ্য বলছে,উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ— যে রাজ্যে যত বেশি পরিযায়ী শ্রমিক ফিরেছেন, সে রাজ্যে তত দ্রুত মনরেগা-র টাকা ফুরোচ্ছে। এপ্রিল থেকে জুন, অর্থ-বছরের প্রথম তিন মাস ফুরোতেই উত্তরপ্রদেশ, বিহার, মধ্যপ্রদেশে মনরেগা তহবিলের ৯০ শতাংশের বেশি অর্থ খরচ হয়ে গিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে অবশ্য বরাদ্দের ২৭ শতাংশ অর্থ এখনও রয়েছে।

২৪ মার্চ মধ্যরাতে লকডাউন শুরুর পর থেকে সরকারি হিসেবে অন্তত ১ কোটি পরিযায়ী শ্রমিক গ্রামে ফিরেছেন। এখন তাঁদের রোজগারের একমাত্র পথ মনরেগা। নরেন্দ্র মোদী এক সময়ে এই প্রকল্পটিকে ইউপিএ-র ‘গর্ত খোঁড়ার প্রকল্প’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন। এখন মনরেগা-ই মুখ বাঁচানোর একমাত্র পথ বুঝে এই প্রকল্পে তাঁর সরকার ৪০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ বাড়িয়েছে। কিন্তু ১.০১ লক্ষ কোটি টাকার রেকর্ড বরাদ্দও দ্রুত ফুরোচ্ছে। এই খাতে বরাদ্দ আরও বাড়ানোর দাবি উঠলেও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক বলছে, পরিস্থিতি আরও দেখে তার পর সিদ্ধান্ত হবে।

Advertisement

একশো দিনের কাজের প্রকল্প

• বরাদ্দ ১.০১ লক্ষ কোটি

কাজ চেয়েও পাননি

• গোটা দেশে ১.৭ কোটি (২২%)

• পশ্চিমবঙ্গে ১৭.৮৪ লক্ষ (২১.৮৩%)

কাজে যুক্ত কত পরিবার

• এপ্রিল-জুন: ৭.৬২ কোটি (গত বছরের এপ্রিল-জুন ৫.৯৮ কোটি)

• শুধু জুনে ৩.২২ কোটি (গত জুনে ২.১৬ কোটি)

শিক্ষাবিদ, সমাজকর্মীদের সংগঠন ‘পিপল’স অ্যাকশন ফর এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি’-র হিসেবে, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, মধ্যপ্রদেশে বরাদ্দের ৭-৮ শতাংশ অর্থ পড়ে রয়েছে। তার মানে এই নয়, সবাইকে কাজ দেওয়া যাচ্ছে।

জুন মাসে গোটা দেশে ৩.২২ কোটি পরিবার মনরেগা-য় কাজ পেয়েছেন। গত বছরের জুনের প্রায় দেড় গুণ। কিন্তু ১০ জুলাই পর্যন্ত হিসেব বলছে, ১.৭ কোটি মানুষ কাজ চাইলেও পাননি। এ ক্ষেত্রেও উত্তরপ্রদেশ, বিহারের মতো রাজ্যে কাজের অভাব বেশি। উত্তরপ্রদেশে ৩৫ লক্ষের বেশি মানুষ কাজ চেয়েও পাননি। পশ্চিমবঙ্গে ১৭.৮৪ লক্ষ মানুষ কাজ পাননি।

সমাজকর্মীদের মতে, সরকারি তথ্য বলছে, ১০০ জনের মধ্যে ২২ জনই কাজ চেয়ে পাচ্ছেন না। বাস্তবে এই অঙ্ক আরও বেশি। পুকুর খোঁড়া, রাস্তা তৈরি, মাটি কাটার সঙ্গে শৌচাগার বানানোর কাজও মনরেগা-র তালিকায় এসেছে। যেখানে কাজ রয়েছে, সেখানে আবার পরিবার পিছু ১০০ দিনের কাজের সীমা ফুরিয়ে আসছে। গোটা দেশে প্রায় ১২ লক্ষ পরিবারের ৭০ দিনের বেশি কাজ হয়ে গিয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, শহরে কাজে ফিরতে না পারলে ভবিষ্যতে তাঁদের পেট চলবে কী করে?

১০০ দিনের কাজের মেয়াদ বাড়িয়ে ২০০ দিন করার দাবি উঠেছে। কিন্তু অর্থ? গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের এক কর্তা বলেন, “অর্থ মন্ত্রকের কাছে আরও বরাদ্দ চাওয়া হতে পারে। তবে লকডাউন ওঠার পরে কাজের চাহিদা কেমন থাকে, তা দেখা দরকার।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement