বর্ধিত মুদ্রাস্ফিতির প্রভাব কাটিয়ে মধ্যবিত্ত এবং ছোট ব্যবসায়ীদের কিছুটা স্বস্তি দেবে এ বারের বাজেট।
২০১৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে এ বারের কেন্দ্রীয় বাজেট। ২০১৯ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগে এনডিএ সরকারের এটাই শেষ সাধারণ বাজেট। তাই আশা করা যায়, এই বাজেটে সাধারণ মধ্যবিত্তের জন্য অনেক কিছু থাকবে। ব্যক্তিগত কর ছাড়ের সীমা বাড়িয়ে মধ্যবিত্ত করদাতাদের কিছুটা স্বস্তি দেওয়ার একটা চেষ্টাও থাকার সম্ভাবনা এ বারের বাজেটে। একই সঙ্গে নজর থাকবে ডাইরেক্ট ট্যাক্স কোডের দিকেও।
আশা করা যায়, বর্ধিত মুদ্রাস্ফিতির প্রভাব কাটিয়ে মধ্যবিত্ত এবং ছোট ব্যবসায়ীদের কিছুটা স্বস্তি দেবে এ বারের বাজেট। এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ের ক্ষেত্রে স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশান ফিরিয়ে আনার প্রস্তাব রয়েছে এ বারের বাজেটে। ২০০৬-০৭ অর্থবর্ষ থেকে তুলে দেওয়া হয়েছে এই ডিডাকশান। এ বারেও তা ফিরিয়ে আনার প্রস্তাব মানা হবে না বলেই মনে হয়।
ব্যক্তিগত আয়কর ছাড়ের সীমা আড়াই লক্ষ থেকে বাড়িয়ে ৩ লক্ষ টাকা করার প্রস্তাব গত বাজেটেই ছিল। এই ছাড় বাড়িয়ে পাঁচ লক্ষ টাকা করা এবং এই আয়ের সবাইকে ডাইরেক্ট ট্যাক্স কোডের আওতায় ফেলার প্রস্তাব রয়েছে এ বারের বাজেটে। এ ছাড়া বিভিন্ন আয়ের ক্ষেত্রে কর ছাড়ের পরিমাণ বাড়ানোরও একটা প্রস্তাব রয়েছে। বর্তমানে ৫ লক্ষ টাকা থেকে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ের ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ, ১০ থেকে ২০ লক্ষ পর্যন্ত ২০ শতাংশ এবং ২০ লক্ষের বেশি আয়ের ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ কর দিতে হয়। গত বারের বাজেটে আড়াই লক্ষ থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা আয়ের ক্ষেত্রে কর ৫ শতাংশ করে সামান্য স্বস্তি দিয়েছিল কেন্দ্র। এ বারে প্রতিটি ধাপের ক্ষেত্রেই কর ছাড় বাড়তে পারে বলে আশা করা যায়।
বাজেটে কিছুটা স্বস্তি চাইছে কর্পোরেট সেক্টরও। বর্তমানে কর্পোরেট করের হার ৩০ শতাংশ। এই কর ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনার প্রস্তাব রয়েছে এ বারের বাজেটে। সেস-সহ করের বর্তমান গড় হার ৩৪.৪৭ শতাংশ। আশা করা যায়, এ ক্ষেত্রে সরকার ১০০ থেকে ২০০ বেসিস পয়েন্ট কর কমাতে পারে। কিন্তু রাজস্ব ঘাটতির কথা মাথায় রেখে এর চেয়ে বেশি ছাড় সম্ভবত কোনও ভাবেই সরকার দেবে না। গত বারের বাজেটে ৫০ কোটি পর্যন্ত বার্ষিক আয়ের সংস্থার ক্ষেত্রে কর ২৫ শতাংশ করেছিল সরকার। রাজস্ব ঘাটতির কথা মাথায় রেখে বলা যায়, সরকার কর্পোরেট করে ছাড় দিলে অন্য কিছু ক্ষেত্রে কর ছাড় তুলে ভারসাম্য রাখতে পারে। ফলে যে সব সংস্থা বেশি কর দেয় তাদের কিছুটা সুবিধা হতে পারে কিন্তু যে সব সংস্থা কর ছাড় পায়, তাদের কর বেশি দিতে হতে পারে।
মন্থর অর্থনীতিতে গতি আনতে ঘরোয়া চাহিদার উত্থান ঘটাবার আশু প্রয়োজন। আর তাই আয়কর ছাড় দিয়ে ‘আম আদমি’র হাতে আরও বেশি টাকা দিয়ে অর্থনীতি চাঙ্গা করার চিরাচরিত চেষ্টা দেখা যেতে পারে এ বারের বাজেটে।
(লেখক ইস্টার্ন ফিনান্সিয়ারস লিমিটেড, কলকাতার ইকুইটি রিসার্চ ডেস্কের প্রধান এবং একটি অনলাইন ইকুইটি তহবিল পরিচালনা করেন)