#মিটু আন্দোলনের জেরে যৌন নিগ্রহ নিয়ে সচেতনতা বাড়ছে। ছবি: নিজস্ব চিত্র।
যৌন নিগ্রহের প্রতিবাদে মুখ খুলছেন একের পর এক নারী। প্রকাশ্যে তুলে ধরছেন ভয়ঙ্কর সব অভিজ্ঞতার কথা।#মিটু নিয়ে সরগরম চারপাশ। আর এই আন্দোলনের জেরে নাকি ভয় পেয়ে গিয়েছেন শহরাঞ্চলের অর্ধেক পুরুষ! তাঁরা এখন বুঝেশুনে কথা বলছেন মহিলাদের সঙ্গে। আগের চেয়ে বেশি সমীহ করছেন। যেচে ভাব জমানোর অভ্যাসেও অনেকের ভাটা পড়েছে। প্রয়োজন ছাড়া মুখোমুখিও হচ্ছেন না। সম্প্রতি একটি সমীক্ষায় এমনই তথ্য উঠে এসেছে।
বিভিন্ন সামাজিক বিষয় নিয়ে অনলাইন গবেষণা চালায় ব্রিটেনের ‘ইউগভ’ সংস্থা। ভারতেও তাদের শাখা রয়েছে। এ দেশে #মিটু আন্দোলন শুরু হলে বিভিন্ন শহরাঞ্চল থেকে ১০০০ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ (৫১ শতাংশ পুরুষ, ৪৯ শতাংশ মহিলা) নিয়ে একটি সমীক্ষা চালায় তারা। ১৬ থেকে ২২ অক্টোবর, মোট সাতদিন ধরে চলে এই সমীক্ষা।
তাতে দেখা যায়, প্রতি দু’জনের মধ্যে একজন পুরুষ #মিটু আন্দোলনের জেরে তটস্থ। মহিলাদের সঙ্গে কথা বলার সময় আগের চেয়ে ঢের বেশি সতর্ক হয়েছেন তাঁরা। যাতে মুখ ফস্কেও কিছু বলে না বসেন। প্রতি তিনজনের মধ্যে একজন আবার মহিলাদের সঙ্গে কথা বলা প্রায় বন্ধ করে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। এমনকি, খুব প্রয়োজন ছাড়া সহকর্মীদের সঙ্গেও আজকাল কথা বলেন না তাঁরা। সর্বদা আতঙ্কে ভোগেন, এই বুঝি তাঁকে ভুল বুঝবে কেউ।
আরও পড়ুন: কর্মক্ষেত্রে যৌন হেনস্থা রুখতে তৈরি মন্ত্রিগোষ্ঠী
আরও পড়ুন: বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক! ‘অগ্নিপরীক্ষা’ নিয়ে বৌমার হাত পোড়ালেন শাশুড়ি
কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের নিয়োগ করার ক্ষেত্রেও নাকি সতর্কতা বেড়েছে আগের চেয়ে। কেউ কেউ মহিলাদের এই আন্দোলনকে সমর্থন করছেন বটে। তবে আধুনিক, স্বাধীনচেতা মহিলাদের নিয়োগ করার ব্যাপারে ইতস্তত করছেন অনেকেই। এর ফলে আগামী দিনে কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের চাকরি পেতে রীতিমতো বেগ পেতে হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
এই আন্দোলনের জেরে যৌন নিগ্রহ নিয়ে আগের তুলনায় সচেতনতা অনেকটাই বেড়েছে। তার প্রমাণ মিলেছে সমীক্ষাতেও। দেখা গিয়েছে, শহরাঞ্চলের ৭৬ শতাংশ মানুষই দেশের গুরুতর সমস্যাগুলির মধ্যে যৌন নিগ্রহকে অন্যতম বলে মনে করেন।যদিওপুরুষদের তুলনায় মহিলারাই এ ব্যাপারে বেশি সচেতন। ৮৭ শতাংশ মহিলা যেখানে যৌন নিগ্রহকে গুরুতর অপরাধ বলে মনে করেন, পুরুষদের ক্ষেত্রে তা মাত্র ৬৬ শতাংশ। দেশের যুব সমাজ অর্থাৎ ১৮-৩৯ বছরের মধ্যেই যৌন নিগ্রহ যেখানে বেশি সচেতনতা রয়েছে। চল্লিশোর্ধ্বরা ঠিক ততটা ভাবিত নন।
সম্মতি ছাড়া কারও ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা এবং রগরগে মেসেজ পাঠানো—দু’টিকেই যৌন নিগ্রহের আওতায় ফেলার পক্ষে মত দিয়েছেন সমীক্ষায় অংশ নেওয়া অধিকাংশ মানুষ।