ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে তামিলনাড়ু উপকূলে শুরু হয়েছে ভারী বৃষ্টি। জলমগ্ন চেন্নাইয়ের বেশ কিছু এলাকা। ছবি: পিটিআই।
দীর্ঘ ক্ষণ ধরে চলতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘ফেনজ়ল’-এর স্থলভাগে আছড়ে পড়ার প্রক্রিয়া (ল্যান্ডফল)। তার জেরেই তামিলনাড়ু উপকূলে হতে পারে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি। এমনটাই জানিয়েছে আঞ্চলিক আবহাওয়া কেন্দ্র (আরএমসি)। ইতিমধ্যে চেন্নাই এবং উপকূলবর্তী এলাকায় ভারী বৃষ্টি শুরু হয়ে গিয়েছে। ফুঁসছে সমুদ্র। উপকূলবর্তী এলাকা থেকে বহু মানুষকে সরিয়ে ত্রাণ শিবিরে পাঠানো হয়েছে। রবিবার ভোর ৪টে পর্যন্ত বন্ধ চেন্নাই বিমানবন্দর। বাতিল করা হয়েছে ৫৫টি বিমান। বিঘ্নিত ট্রেন পরিষেবা।
আরএমসির অধিকর্তা এস বালচন্দ্রন জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় ‘ফেনজ়ল’-এর গতিবেগ বার বার বদল হচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘উপগ্রহ থেকে সর্ব শেষ তথ্য বলছে, শনিবার রাতের দিকে ঘূর্ণিঝড়ের ল্যান্ডফলের প্রক্রিয়া শুরু হবে। তার চোখ (আই) স্থলভাগে সম্পূর্ণ ভাবে প্রবেশ করতে কয়েক ঘণ্টা লেগে যেতে পারে।’’ তিনি আরও জানিয়েছেন, এই ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র (মেসোভর্টেক্স) গোলাকার নয়। সেই কারণে ঠিক কোথায় এর ‘ল্যান্ডফল’ হবে, তা স্পষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। মনে করা হচ্ছে করাইকাল এবং মহাবলিপুরমের মাঝে ‘ল্যান্ডফল’ হবে ঘূর্ণিঝড়ের। স্থলভাগে প্রবেশ করার সময়ে ঘূর্ণিঝড়ের ফলে হাওয়ার সর্বোচ্চ গতি হতে পারে ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার পর্যন্ত।
তামিলনাড়ু হাওয়া অফিসের শেষ বুলেটিন জানিয়েছে, চেন্নাইয়ের ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে রয়েছে ঘূর্ণিঝড়টি। সমুদ্রের উপর তার গতি ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটার। আবহবিদ বালচন্দ্রন জানিয়েছেন, ‘ফেনজ়ল’ যত সমুদ্রের উপর দিয়ে স্থলভাগের দিকে এগিয়ে আসছে, গতিবেগের পাশাপাশি তত তার গঠনও বদলে যাচ্ছে। গতি আরও বৃদ্ধি পেতে পারে, কমতে পারে আবার একই থাকতে পারে। তাই বঙ্গোপসাগরের উপর দিয়ে এগিয়ে চলা ঘূর্ণিঝড়ের উপর নজর রাখা হচ্ছে। চেন্নাইয়ের হাওয়া অফিস জানিয়েছে, ‘ফেনজ়ল’-এর প্রভাবে রবিবার পর্যন্ত ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে তামিলনাড়ুর উত্তর উপকূলে। তবে টানা বৃষ্টি হবে না। বালচন্দ্রন জানিয়েছেন, তামিলনাড়ু উপকূলে যে মেঘ রয়েছে, তার ঘনত্ব কম। সে কারণে টানা বৃষ্টি সম্ভব নয়।
ভারী বৃষ্টিতে ইতিমধ্যে চেন্নাইয়ের বিভিন্ন এলাকায় জল জমেছে। এটিএমে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক ব্যক্তির। বন্ধ রয়েছে চেন্নাই বিমানবন্দর। তামিলনাড়ু এবং পুদুচেরীর উপকূলে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে স্কুল, কলেজ, অফিস। তামিলনাড়ুর বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর বিভিন্ন এলাকায় দু’হাজারের বেশি ত্রাণশিবির খুলেছে। উপকূল এলাকা থেকে সাড়ে ৪০০-র বেশি মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে চেঙ্গলপট্টু এবং কালপক্কমের শিবিরে। খুলে দেওয়া হয়েছে একাধিক হেল্পলাইন নম্বর। পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন।