—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
কেন্দ্রীয় বোর্ডের পাঠ্যবইয়ে একাধিক জায়গা থেকে মুছে ফেলা হল বাবরি মসজিদ ধ্বংস, ২০০২-এর গুজরাত হিংসার প্রসঙ্গ। ‘হিন্দুত্বের রাজনীতি’ প্রসঙ্গও ওই পাঠ্যবই থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সাম্প্রতিক এই পরিবর্তনটি করা হয়েছে ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (এনসিইআরটি)-এর দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পাঠ্যবইয়ে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এনসিইআরটি-র ওয়েবসাইটে পাঠ্যসূচির এই পরিবর্তনের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। প্রসঙ্গত, গোটা দেশে কেন্দ্রীয় বোর্ড সিবিএসই অনুমোদিত প্রায় ৩০ হাজার স্কুলে এনসিইআরটি-র বই পাঠ্যপুস্তক হিসাবে পড়ানো হয়। জানা গিয়েছে, চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই রাষ্ট্রবিজ্ঞানের এই পরিবর্তিত পাঠ্যসূচি অনুসারে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের পড়ানো হবে।
দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বইয়ের অষ্টম পরিচ্ছদে ভারতীয় রাজনীতির সাম্প্রতিক উত্থানপতন সংক্রান্ত আলোচনায় বাদ দেওয়া হয়েছে ‘অযোধ্যা ধ্বংস’ প্রসঙ্গ। আগে পরিচ্ছদটির শিরোনাম অংশে লেখা থাকত, “রাজনৈতিক ধারায় রাম জন্মভূমি আন্দোলন এবং অযোধ্যা ধ্বংসের প্রেক্ষাপট কী?” এখন সেখানে লেখা হল “রাম জন্মভূমি আন্দোলনের প্রেক্ষাপট কী?” ওই পরিচ্ছদেই বাবরি মসজিদ প্রসঙ্গ এবং হিন্দুত্বের রাজনীতির প্রসঙ্গ বাদ দেওয়া হয়েছে। তবে বাদ পড়া বিষয়গুলি বইয়ের কোথাও কোথাও এখনও রয়েছে।
আবার বইটির পঞ্চম অধ্যায়ে, যেখানে গণতান্ত্রিক অধিকার নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, সেখানে কতগুলি সংবাদ প্রতিবেদনের কোলাজের শিরোনাম অংশ থেকে সরানো হয়েছে ২০০২ সালের গুজরাত হিংসার কথা। লোকসভা ভোটের আগে রাজনৈতিক কারণেই এই পরিবর্তন করা হল কি না, এই প্রশ্নকে ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে এখনও মুখ খোলেনি এনসিইআরটি।
এনসিইআরটির নির্দেশিকা মেনে গত কয়েক মাসে পরিবর্তন ঘটেছে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যক্রমে। কোনও শ্রেণিতে মোগল যুগ বাদ পড়েছে। কোথাও ডারউইনের বিবর্তনবাদ। কোথাও নারী আন্দোলনের ইতিহাস। কোথাও বা ভারতের সামাজিক বৈষম্য। শিক্ষামহল এবং শিক্ষায় আগ্রহী মহল, সর্বত্রই এ নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। অভিযোগ উঠেছে, বিজেপি মূলত তাদের সঙ্কীর্ণ রাজনৈতিক স্বার্থ এবং দৃষ্টিকোণ থেকেই ছেঁটে ফেলার বিষয়গুলি ঠিক করছে। উল্টো মতামত হল, পড়ুয়াদের উপর অকারণ চাপ কমাতেই এই সব রদবদল। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্কই নেই।