Manipur Violence

প্রধানমন্ত্রী মণিপুরে আসুন, ‘ইন্ডিয়ার’ প্রতিনিধিদের আর্জি

রাজ্য ও কেন্দ্র পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ করে সফররত প্রতিনিধি দলের সদস্যরা জানান, এ পর্যন্ত মণিপুরে ১৪০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। পাঁচ হাজার বাড়িঘর জ্বলেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলচর শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০২৩ ০৮:৩৫
Share:

—প্রতীকী ছবি।

মণিপুরে তিন মাস ধরে যা চলছে, তা এখন আর মণিপুর বা উত্তর-পূর্বের সমস্যা নয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে দেশের নিরাপত্তার দিকটিও। বিষয়টি নিয়ে এ ভাবেই তাদের নিয়ে উদ্বেগ জানাল মণিপুর সফররত সম্মিলিত বিরোধী দলগুলির জোট ইন্ডিয়া-র প্রতিনিধি দল। দুই দিনের মণিপুর সফর সেরে ফেরার আগে রবিবার তাঁরা বলেন, "এর পরেও এই সমস্যা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নীরবতা সত্যিই বিস্মিত করে।"

Advertisement

২১ সাংসদের দলটি শনিবার ইম্ফলে পৌঁছয়। দু’দিন ধরে চূড়াচাঁদপুর, বিষ্ণুপুর, পশ্চিম ইম্ফলের বিভিন্ন শিবির পরিদর্শনের পর রবিবার সাক্ষাৎ করে রাজ্যপাল অনুসূয়া উইকির সঙ্গে। তাঁর হাতে একটি স্মারকলিপিও তুলে দেন তাঁরা। দিল্লি ফিরে আগামিকাল ‘ইন্ডিয়া’র সংসদীয় নেতৃত্বের কাছে মণিপুরের পরিস্থিতি তুলে ধরবেন প্রতিনিধি দলটির সদস্যেরা।

লোকসভার কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী রাজভবন থেকে বেরিয়ে বলেন, "রাজ্যপাল নিজেও এই সব ঘটনায় ব্যথিত। দু’দিন ধরে আমরা যা দেখলাম-শুনলাম, সব জেনে তিনি আমাদের বলেন, সমস্ত জনগোষ্ঠীর নেতাদের সঙ্গে কথা বলতে।" অধীরের কথায়, রাজ্যপাল নিজেই চাইছেন, সংসদের একটা সর্বদলীয় প্রতিনিধি দল মণিপুর সফর করুক, সকল অংশের মানুষের সঙ্গে তাঁরা কথা বলুক। কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উচিত ওই সর্বদলীয় প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেওয়া, শান্তির সন্ধানে সবাইকে নিয়ে সকলের সঙ্গে কথা বলা। কিন্তু মণিপুরে আসা দূরে থাক, সংসদে এই ইস্যুতে যাতে কেউ তাঁর বিবৃতি দাবি করতে না পারেন, তিনি সেই কৌশল হাতড়ে বেড়াচ্ছেন!

Advertisement

রাজ্য ও কেন্দ্র পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ করে সফররত প্রতিনিধি দলের সদস্যরা জানান, এ পর্যন্ত মণিপুরে ১৪০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। পাঁচ হাজার বাড়িঘর জ্বলেছে। মেইতেই ও কুকি উভয় সম্প্রদায়ের ৬০ হাজার মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয় শিবিরে দিন কাটাচ্ছেন। তৃণমূল সাংসদ সুস্মিতা দেব এই পরিস্থিতির জন্য কেন্দ্র ও রাজ্যের বিজেপি সরকারকে দায়ী করে বলেন, ওদের ব্যর্থতার জন্য মণিপুরের মানুষদের এত দুঃখকষ্ট সইতে হচ্ছে।

‘ইন্ডিয়া’ সদস্যদের দাবি, মানুষের মন থেকে অবিশ্বাস দূর করতে হবে। পরস্পরের প্রতি বিশ্বাসের জায়গা ফেরাতে হবে। তাদের স্মারকলিপিতে এই ব্যাপারেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়ে তাঁরা বলেন, উভয় জনগোষ্ঠীর মানুষের মনেই পরস্পরের প্রতি প্রচণ্ড বিদ্বেষ রয়েছে। দ্রুত এই অবস্থার পরিবর্তন করতে হবে।

‘ইন্ডিয়া’-র সাংসদেরা আশ্রয়শিবিরগুলির দিকে বিশেষ নজর দিতে রাজ্যপালের উদ্দেশে আর্জি জানান। বিশেষ করে শিশুখাদ্য সরবরাহ অত্যন্ত অনিয়মিত বলে অভিযোগ করেন। বলেন, ইন্টারনেট বন্ধ রেখে গুজব ছড়ানো প্রতিরোধের বদলে মানুষের মধ্যে আরও বেশি করে গুজব ছড়িয়েছে।
ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় মানুষ গুজবের সত্যতা যাচাই করতে পারেনি। ফলে বেড়েছে অবিশ্বাস। এখন সে সব কাটিয়ে শান্তি ফিরিয়ে এনে অসহায় মানুষগুলির পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করাটা জরুরি বলেই মন্তব্য ইন্ডিয়া-র সদস্যদের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement