সাংবাদিক সিদ্দিক কাপ্পান। ফাইল চিত্র।
আমি মেহনাজ…
সাংবাদিক সিদ্দিক কাপ্পানের মেয়ে বলছি।
মাউথপিসটা হাতে নিয়ে এ ভাবেই শুরু করেছিল বছর নয়েকের মেয়েটি। তার পর নিজের বাবা সম্পর্কে, স্বাধীনতা এবং অধিকার নিয়ে যে কথাগুলি বলেছে সে, তা ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে স্কুলের অনুষ্ঠানে মেহনাজ যে কথাগুলি বলেছে, তা নিয়ে বেশ চর্চা হচ্ছে।
মাত্র দু’মিনিটের বক্তৃতা। তাঁর ওই ছোট্ট বক্তৃতার মধ্যে যেমন ধর্মের ভিত্তিতে হিংসার কথা উঠে এসেছে, তেমনই এই পরিবেশকে সমূলে উপড়ে ফেলতে যে ভালবাসা এবং একতার দরকার, সে কথাও উঠে এসেছে।
কেরলের মলপ্পুরমের একটি স্কুলে পড়াশোনা করে সে। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে তাঁর হাতে মাউথপিস তুলে দেওয়া হয়েছিল। বক্তৃতার শুরুতেই নিজের পরিচয় দেয় সে। মেহনাজ বলে, “আজ এই শুভ মুহূর্তে আমাদের দেশ যখন ৭৬তম স্বাধীনতা উদ্যাপন করছে, তখন এক জন ভারতীয় হিসেবে গর্বের সঙ্গে বলতেই হয়, ভারত মাতা কি জয়!”
তাঁর কথায়, “প্রত্যেক ভারতীয়ের অধিকার আছে তাঁরা কী বলবেন, কী খাবেন এবং কোন ধর্ম তিনি গ্রহণ করবেন। আর এই অধিকার মহাত্মা গাঁধী, জওহরলাল নেহরু, ভগৎ সিংহ-সহ অগণিত স্বাধীনতা সংগ্রামীদের লড়াই এবং আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে ভারতীয়রা অর্জন করেছেন।” মেহনাজ আরও বলে, “১৫ অগস্টে যে মর্যাদা এবং গৌরব আমাদের দেশ অর্জন করেছে, তা কারও কাছে আত্মসমর্পণ করা উচিত নয়।”
মেহনাজের বক্তব্যে উঠে এসেছে হিংসা এবং ধর্মের দোহাই দিয়ে পরিবেশকে অশান্ত করে তোলার মতোও বিষয়। তার কথায়, “অন্যায়, দ্বন্দ্ব এ দেশে এখনও বিদ্যমান। আর এই সমস্ত অন্যায়কে ভালবাসা এবং একতার মাধ্যমে উপড়ে ফেলতে হবে। অশান্তির পরিবেশকে পুরোপুরি মুছে ফেলতে হবে।”
দেশকে অগ্রগতির চরম পর্যায়ে নিয়ে যাওয়াই লক্ষ্য হওয়া উচিত বলে মনে করে মেহনাজ। তার কথায়, “একটা ভাল ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখা উচিত আমাদের, যেখানে কোনও ভেদাভেদ থাকবে না, মতানৈক্য থাকবে না। দেশের সেই সব স্বাধীনতা সংগ্রামীদের লড়াই এবং বলিদানকে স্মরণ করে আমার বক্তব্য শেষ করছি। জয় হিন্দ, জয় ভারত।”
২০২০-র ৫ অক্টোবর সাংবাদিক কাপ্পানকে ইউএপিএ আইনে গ্রেফতার করে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। বর্তমানে তিনি মথুরা জেলে বন্দি।