সাংবাদিকদের মুখোমুখি মেহবুবা মুফতির মেয়ে ইলতিজা। মঙ্গলবার দিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।
জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপের পরে কেটে গিয়েছে ছ’মাস। এত দিন পরেও কেন্দ্রের ওই সিদ্ধান্ত নিয়ে কাশ্মীরবাসী কতটা ক্ষুব্ধ তা বুঝতে অমিত শাহকে কাশ্মীর সফরের পরামর্শ দিলেন মেহবুবা মুফতির কন্যা ইলতিজা। বিশেষ মর্যাদা লোপের পর থেকে কাশ্মীরে পা পড়েনি প্রধানমন্ত্রী বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর।
বাজেটে অধিবেশনে কাশ্মীর সংক্রান্ত একাধিক প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্র দাবি করেছিল, উপত্যকার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ শান্ত। গত ছয় মাসে সেখানে কোনও জনবিক্ষোভ দেখা যায়নি। কমে গিয়েছে জঙ্গি হামলার ঘটনাও। কিন্তু আজ ইলতিজা দিল্লিতে একটি সাংবাদিক বৈঠকে দাবি করেন, ‘‘অমিত শাহের কাশ্মীরে গিয়ে দেখা উচিত যে সেখানকার মানুষ আসলে কতটা ক্ষুব্ধ।’’ তাঁর ব্যাখ্যা, কাশ্মীরবাসী যতটা স্থানীয় রাজনৈতিক দল যেমন পিডিপি ও এনসি-এর নেতৃত্বের উপরে চটে রয়েছেন, তার চেয়ে অনেক বেশি রেগে আছেন দিল্লির মনোভাবে। কাশ্মীরের আসল চিত্র সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীরও সঠিক ধারণা নেই বলেই মত তাঁর। ইলতিজা বলেন, ‘‘আমি প্রধানমন্ত্রীকে সম্মান করি। কিন্তু হয়তো তাঁকে (কাশ্মীর নিয়ে) ভুল বোঝানো হচ্ছে অথবা তিনি উদ্দেশ্যপূর্ণ ভাবে দেশকে ভুল বোঝাচ্ছেন।’’
ইলতিজার মা মেহবুবা মুফতি জন নিরাপত্তা আইনে গত ছয় মাস ধরে জেলে বন্দি। আশু মুক্তির কোনও সম্ভাবনা নেই তাঁর। এরই মধ্যে ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন) ব্যবহার করে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেশবিরোধী মন্তব্য, উপত্যকায় নিরাপত্তাকর্মীদের ভৌগোলিক অবস্থান ফাঁস করে দেওয়া, হিংসাত্মক কার্যকলাপে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানোর অভিযোগে প্রায় দু’শো কাশ্মীরির বিরুদ্ধে ইউএপিএ প্রয়োগ করে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছেন সাংবাদিকেরা। পুলিশের দাবি, ধৃতদের একটি বড় অংশের কাছ থেকে দেশবিরোধী প্রচারের নথি পাওয়া গিয়েছে।
আজ পুলিশের সেই দাবিকে সম্পূর্ণ নস্যাৎ করেন ইলতিজা। তিনি বলেন, ‘‘আমি কাশ্মীরে গিয়ে ভিপিএন ব্যবহার করব। পুলিশ চাইলে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে পারে।’’ সম্প্রতি উপত্যকায় টুজি মোবাইল পরিষেবা চালু করার সিদ্ধান্ত নেয় কাশ্মীর প্রশাসন। কিন্তু প্রায় সব ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে উপত্যকায়। ইলতিজার প্রশ্ন, যেখানে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, সেখানে সোশ্যাল মিডিয়া অপব্যবহারের অভিযোগ ভিত্তিহীন।