টলিউড বা বলিউডের মতো প্রচুর ছবি তৈরি হয় না এখানে। নামমাত্র ছবিতেই বিনোদন খোঁজে এই প্রবাল দ্বীপ। সে দ্বীপের অভিনেত্রীদের নামও তাই সচরাচর শোনা যায় না।
তবে সম্প্রতি চর্চায় উঠে এলেন সে দ্বীপের এক অভিনেত্রী এবং পরিচালক আয়েশা সুলতানা। তাঁকে ঘিরে চর্চা অবশ্য অভিনয় নিয়ে নয়। চর্চা কোভিডকে কেন্দ্র করেই।
না, আয়েশা কোভিডে অসুস্থ হয়ে পড়েননি। তবে তাঁর প্রাণের দ্বীপ আজ খুবই অসুস্থ। সে নিয়ে সরব হয়েই তিনি সংবাদের শিরোনামে।
আয়েশা লক্ষদ্বীপের বাসিন্দা। সম্প্রতি একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানে লক্ষদ্বীপের প্রশাসনিক প্রধান প্রফুল্ল পটেলকে ‘জৈব অস্ত্র’-র সঙ্গে তুলনা করেন তিনি। তার পরই দেশদ্রোহী তকমা দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর হয়। লক্ষদ্বীপের বিজেপি সভাপতি সি আব্দুল খাদের হাজি এফআইআর করেন।
কী বলেছিলেন তিনি? ওই অনুষ্ঠানে আয়েশার বক্তব্য ছিল, কিছু দিন আগেও ওই দ্বীপে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ছিল শূন্য। কিন্তু এখন দিনে কমবেশি ১০০ জন করে আক্রান্ত হচ্ছেন। তার পরই তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্র এখানে এমন একজনকে দায়িত্ব দিয়েছেন যিনি ‘জৈব অস্ত্র’। এর পরই তাঁকে দেশদ্রোহী হিসাবে দেগে দেওয়া হয়। তার পর থেকেই তিনি শিরোনামে।
তবে তাঁর আরও একটি পরিচয় রয়েছে। লক্ষদ্বীপের ইতিহাসে আয়েশাই প্রথম মহিলা পরিচালক। তাঁর পরিচালনায় প্রথম ছবি ‘ফ্লাশ’ খুব তাড়াতাড়ি মুক্তি পেতে চলেছে।
বহু পরিচালকের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। ছবি প্রস্তুতকারক লাল জোশের সঙ্গে মালয়ালম ছবিতেও কাজ করেছেন তিনি।
৩৭ বছরের আয়েশা এ বার নিজের স্ক্রিপ্ট-এ এই ছবি পরিচালনা করছেন। তাঁর প্রথম ছবি ‘ফ্লাশ’-এর টিজারও মুক্তি পেয়েছে।
এর আগে আসিফ আলির সঙ্গে ‘কেত্যলানু এনতে মালাখা’ ছবিতে সহকারী পরিচালক হিসাবে কাজ করেছেন তিনি।
ওই ছবির সম্পাদক নউফাল আবদুল্লা এবং সঙ্গীত পরিচালক উইলিয়াম ফ্রান্সিসও ‘ফ্লাশ’ ছবিতে তাঁর সঙ্গে কাজ করছেন।
পরিচালনার পাশাপাশি তিনি এক জন অভিনেত্রী এবং মডেলও। কিছু মালয়ালম ছবিতেও কাজ করেছেন তিনি।
আয়েশার জন্ম বাংলাদেশের যশোরে ১৯৮৪ সালে। তবে তাঁর ছোটবেলা কেটেছে এই লক্ষদ্বীপেই। তাঁর পরিবার এই দ্বীপের অন্যতম পরিচিত এবং অভিজাত।
লক্ষদ্বীপের চরনিতের জেএন এডুকেশন স্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছেন তিনি। তার পর মালয়ালমে তিরুঅনন্তপুরমের কেরল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হন।
মালয়ালি, তামিল, টুলু, মহাল এবং ইংরাজি ভাষায় সাবলীল আয়েশা। তাঁর মাতৃভাষা টুলু এবং লক্ষদ্বীপের সরকারি ভাষা হল মহাল।
প্রথম থেকেই অবশ্য অভিনেত্রী হতে চাননি তিনি। চেয়েছিলেন বিমানসেবিকা হতে। যার জন্য প্রশিক্ষণও নিয়েছিলেন। আবার একটি সংবাদ মাধ্যমেও কিছু দিন কাজও করেছেন। তবে সে সব তাঁর পরিচিতি হয়ে উঠতে পারেনি। পেশা হিসাবে বিনোদন জগতকেই বেছে নেন তিনি।